ধান বাঁচাতে জমিতে চলছে জল দেওয়া। খয়রাশোলে দয়াল সেনগুপ্তের তোলা ছবি।
কৃষি দফতরের হিসেব ধরলে এ বার বর্য়ার প্রথম দিকে পর্যাপ্ত বৃষ্টি হয়েছিল এই জেলায়। ধান চাষের এলাকা বেড়ে গিয়েছিল। গত বারের তুলনায় প্রায় ১৮ হাজার হেক্টরের বেশি জমি এবং সময়োচিত বৃষ্টিপাতের কারণেই লক্ষ্য মাত্রার প্রায় ৯৪ শতাংশ জমিতে আমন ধান চাষ হয়েছে বলে জানিয়েছিল কৃষি দফতর। খুশি হয়েছিলেন জেলার চাষিরা। কিন্তু শেষ বেলায় বৃষ্টির অভাবেই ফলন মার খাওয়ার আশঙ্কায় ভুগছেন কৃষকেরা। একই আশঙ্কা সংশ্লিষ্ট দফতরেরও। কারণ, সেপ্টেম্বরের শেষ সপ্তাহ থেকে চলতি মাসসের ১৫ দিন এ জেলায় বৃষ্টি হয়নি বললেই চলে। ধানের বীজ পরিণত হওয়ার সেরা সময় এখনই। তাই এই সময় যদি বৃষ্টি না হয় তা হলে ফলন মার খাবেই।
কৃষি দফতর জানাচ্ছে, সেচ খাল যেখানে নেই বা যেখানে সেচের ব্যবস্থা নেই অবস্থা খারাপ সেখানেই। বিশেষ করে সিউড়ি মহকুমা এলাকার মহম্মদবাজার, সিউড়ি ১, দুবরাজপুর, রাজনগর, খয়রাশোলের বেশ কিছু এলাকায় এ বার ধানের ফলন মার খাবে। দিন দু’য়েকর মধ্যে দু-চার পশলা বৃষ্টি হলে পরিস্থিতি কিছুটা উন্নত হতে পারে। ইতিমধ্যেই ৩০-৩৫ হাজার হেক্টর জমিতে জলের আভাব রয়েছে। উক্ত ব্লকে ৩০-৪০ শতাংশ ফলন কম হবে বলে জানিয়েছেন জেলা উপকৃষি আধিকর্তা (প্রশাসন) প্রদীপ মণ্ডল। তিনি বলছেন, “জেলায় মূলত স্বর্ণ ধানের চাষই বেশি। ফলনের সময়কাল ১২০ দিন। ধান গাছের বয়সের ৭০ দিন থেকে ১০৫ দিন সময়কাল ধান খেতের মাটি ভিজে থাকা আবশ্যিক। কারণ সেই সময়টাই ধানের বীজ পরিণত হয়।”
জেলার এই অংশের কৃষকদের অভিজ্ঞতাও সেই কথা বলছে। দুবারাজপুরের চণ্ডীপুর গ্রামের চাষি দয়াময় ভাঁড়ারী, সিউড়ি ১ ব্লকের মহুদড়ি গ্রামের মাধব মণ্ডল, মহম্মদবাজারের ভেড়াপাথড়া হরিগতি মণ্ডল, খয়রাশোলের ভাদুলিয়ার চাষি রামকৃষ্ণ পাল বলছেন, “পরিস্থিতি এমন যে অর্ধেক ধান বাড়িতে তুলতে পারব বলে মনে হচ্ছে না। যে যে ভাবে পারছেন ফসল বাঁচাতে পুকুর বা ডোবা থেকে পাম্পের মাধ্যমে জমিতে সেচ দেওয়ার ব্যবস্থা করছেন। কিন্তু সেটাও সকলের পক্ষে সম্ভব নয়। সব জমির কাছে পুকুর বা ডোবা না থাকায় সমস্যা রয়েছে। হুদহুদের প্রভাবে বৃষ্টি হবে ধরে নিয়েছিলাম। কিন্তু মাঠে ধান শুকিয়ে আসছে। কালো হয়ে যাচ্ছে।”
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy