Advertisement
E-Paper

বাড়িতে ঢুকে শ্লীলতাহানির নালিশ, ধৃত

বাড়িতে ঢুকে এক ছাত্রীকে শ্লীলতাহানির অভিযোগ উঠল এক সরকারি কর্মীর বিরুদ্ধে। এমনকী বিষয়টি মিটমাট করতে স্থানীয় ভাবে গ্রাম ষোলোআনাকে দিয়ে আলোচনার চেষ্টা চালানোরও অভিযোগ উঠেছে। পুরুলিয়ার আড়শার ঘটনা। স্থানীয় সূত্রে খবর, ধৃতের বাবা ফরওয়ার্ড ব্লকের স্থানীয় নেতা। ওই ছাত্রীর পরিবার যাতে পুলিশের দ্বারস্থ না হয় তা নিশ্চিত করতে ওই নেতা গ্রামের ষোলোআনাকে প্রভাবিত করে আলোচনা বসিয়েছিলেন বলে অভিযোগ।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ০৯ ফেব্রুয়ারি ২০১৫ ০০:৫৪
ধৃত দীনবন্ধু চট্টোপাধ্যায়। —নিজস্ব চিত্র

ধৃত দীনবন্ধু চট্টোপাধ্যায়। —নিজস্ব চিত্র

বাড়িতে ঢুকে এক ছাত্রীকে শ্লীলতাহানির অভিযোগ উঠল এক সরকারি কর্মীর বিরুদ্ধে। এমনকী বিষয়টি মিটমাট করতে স্থানীয় ভাবে গ্রাম ষোলোআনাকে দিয়ে আলোচনার চেষ্টা চালানোরও অভিযোগ উঠেছে। পুরুলিয়ার আড়শার ঘটনা।

স্থানীয় সূত্রে খবর, ধৃতের বাবা ফরওয়ার্ড ব্লকের স্থানীয় নেতা। ওই ছাত্রীর পরিবার যাতে পুলিশের দ্বারস্থ না হয় তা নিশ্চিত করতে ওই নেতা গ্রামের ষোলোআনাকে প্রভাবিত করে আলোচনা বসিয়েছিলেন বলে অভিযোগ। তবে শেষমেশ ছাত্রীর পরিবার রবিবার সকালে থানায় অভিযোগ জানানোয় পুলিশ অভিযুক্ত যুবক দীনবন্ধু চট্টোপাধ্যায়কে গ্রেফতার করে। সে জেলা খাদ্য দফতরের চতুর্থ শ্রেণির কর্মী। এ দিন তাকে পুরুলিয়া আদালতে তোলা হলে বিচারক জেলহাজতে পাঠান।

ওই ছাত্রীটির বাবার অভিযোগ, শনিবার সকালে তাঁরা স্বামী-স্ত্রী কেউ বাড়িতে ছিলেন না। বাড়িতে একা ছিল তাঁদের অষ্টম শ্রেণির পড়ুয়া ওই মেয়ে। সেই সুযোগে ওই যুবক বাড়িতে ঢুকে ছাত্রীটির শ্লীলতাহানি করে। মেয়েটির চিত্‌কারে পড়শিরা ছুটে এলে যুবকটি পালিয়ে যায়। পরে দুপুরে বাড়িতে বাবা-মা ফিরলে ছাত্রীটি তাঁদের কাছে ঘটনাটি জানায়। এর পরেই ছাত্রীর পরিবার থানায় অভিযোগ জানানোর চেষ্টা করেন।

স্থানীয় সূত্রেই জানা গিয়েছে, দুপুরের দিকে অভিযুক্তের বাবা প্রথমে নিজেদের মধ্যে আপসে মিটিয়ে নেওয়ার প্রস্তাব দিয়েছিল নির্যাতিতা মেয়েটির পরিবারকে। পরে তিনি বিষয়টি মধ্যস্থতা করার জন্য গ্রামের ষোলোআনাকে চাপ দেন বলে অভিযোগ। ছাত্রীর বাবার দাবি, অভিযুক্ত যুবকের বাবার চাপে সন্ধ্যায় ষোলোআনার কয়েকজন আমাদের বাড়িতে এসে আলোচনায় বসেছিলেন। ছেলেকে নিয়ে উপস্থিত ছিলেন ওই ব্যক্তিও। সকলেই পুলিশের কাছে না গিয়ে আপসে মীমাংসা করার জন্য অনুরোধ জানিয়েছিলেন। দীনবন্ধুও সকলের সামনে এই ধরনের ঘটনা ভবিষ্যতে সে করবে না বলে প্রতিশ্রুতি দিয়ে ক্ষমা চায়। এর পরে তাঁরা কিছুটা নরম হন। কিন্তু বেশি রাতের দিকে ফের দীনবন্ধু তাঁদের বাড়ির সামনে এসে গালিগালাজ দিতে থাকে। তাঁর কথায়, “ষোলোআনার সভায় ক্ষমা চাইলেও দীনবন্ধু রাতে চূড়ান্ত অসভ্যতা করে। এ দিন সকালেই মেয়েকে থানায় নিয়ে গিয়ে ওর বিরুদ্ধে অভিযোগ জানিয়েছি।” পুলিশ অভিযোগ পাওয়ার ঘণ্টা দু’য়েকের মধ্যেই গ্রামে গিয়ে অভিযুক্তকে গ্রেফতার করেছে। তার বিরুদ্ধে শ্লীলতাহানির অভিযোগের সঙ্গেই প্রোটেকশন অফ চিল্ড্রেন ফ্রম সেক্সুয়াল অফেন্স, ২০১২ আইনে মামলা করা হয়েছে।

তবে সালিশি বা আলোচনা সভা বসানোর অভিযোগ মানতে চাননি শিরকাবাদ গ্রামের ষোলোআনার সম্পাদক অনিল মণ্ডল। তিনি দাবি করেছেন, লোকমুখে খবর পেয়ে তাঁরা মেয়েটির বাবার কাছে বিষয়টি নিয়ে জানতে চেয়েছিলেন। অভিযুক্তের বার চাপে তাঁরা গিয়ে আলোচনায় বিষয়টি আপসে মিটিয়ে নেওয়ার কথা কখনই বলেননি। তাঁর কথায়, “গ্রামে জমিজমা-সহ অন্য ধরনের ছোটখাটো বিবাদ মিটিয়ে দেওয়ার জন্য বাসিন্দারা ষোলোআনার কাছে এলে আমরা মধ্যস্থতা করি ঠিকই। কিন্তু শ্লীলতাহানির মতো গুরুত্বপূর্ণ ও বড়মাপের অপরাধের বিষয়ে মতামত দেওয়া পুরোপুরি আমাদের এক্তিয়ারের বাইরে। তাই ওই বিষয়ে আমরা স্বাভাবিক ভাবেই কিছু মতামত দিতে পারি না।” পুলিশেরও দাবি, নির্যাতিতার পরিবার সালিশি বা আলোচনা সভা বসিয়ে চাপ দেওয়া হয়েছে বলে কোনও অভিযোগ তাদের কাছে জানায়নি। অভিযুক্তের বাবার বক্তব্য পাওয়া যায়নি।

তবে ধৃত যুবক এ দিন দাবি করেছে, “ওই স্কুল ছাত্রীর সাথে আমার পাড়াতুতো ভাইবোনের সম্পর্ক। কোনও খারাপ উদ্দেশ্য নিয়ে তার বাড়িতে যাইনি। ভিত্তিহীন অভিযোগে আমাকে ফাঁসানো হয়েছে।” ডিএসপি (ডি অ্যান্ড টি) কুন্তল বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, “অভিযোগ পাওয়া মাত্রই পুলিশ গিয়ে অভিযুক্তকে গ্রেফতার করেছে। নির্দিষ্ট ধারায় মামলা রুজু করে তদন্ত শুরু হয়েছে।”

molestation arrestone arsha
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy