Advertisement
E-Paper

ভোটে হাতিয়ার তুলে দিয়েছেন স্বপনকান্তি

বিধানসভার সামনে দলীয় বিধায়কের ধর্না বিরোধী দলের হাতে অস্ত্র তুলে দিল বলে মনে করা হচ্ছিল তৃণমূলের পক্ষ থেকে। তার ২৪ ঘণ্টা যেতে না যেতেই পথে নামল কংগ্রেস। জলপ্রকল্প ও বস্তি উন্নয়নে তৃণমূল পরিচালিত সিউড়ি পুরবোর্ড ‘দুর্নীতি’ করেছে। তৃণমূল বিধায়ক স্বপনকান্তি ঘোষের তোলা অভিযোগগে হাতিয়ার করে বৃহস্পতিবার প্রতীকী অবস্থান-বিক্ষোভ করে শহর কংগ্রেস। তাদের দাবি, মাধ্যমিক পরীক্ষা চলায় প্রতীকী আন্দোলন করা হল। পরীক্ষা শেষ হলেই দুর্নীতির পূর্ণাঙ্গ তদন্তের দাবিতে লাগাতার আন্দোলন করা হবে।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ২৭ ফেব্রুয়ারি ২০১৫ ০১:৫১
সিউড়িতে কংগ্রেসের অবস্থান-বিক্ষোভ। —নিজস্ব চিত্র।

সিউড়িতে কংগ্রেসের অবস্থান-বিক্ষোভ। —নিজস্ব চিত্র।

বিধানসভার সামনে দলীয় বিধায়কের ধর্না বিরোধী দলের হাতে অস্ত্র তুলে দিল বলে মনে করা হচ্ছিল তৃণমূলের পক্ষ থেকে। তার ২৪ ঘণ্টা যেতে না যেতেই পথে নামল কংগ্রেস। জলপ্রকল্প ও বস্তি উন্নয়নে তৃণমূল পরিচালিত সিউড়ি পুরবোর্ড ‘দুর্নীতি’ করেছে। তৃণমূল বিধায়ক স্বপনকান্তি ঘোষের তোলা অভিযোগগে হাতিয়ার করে বৃহস্পতিবার প্রতীকী অবস্থান-বিক্ষোভ করে শহর কংগ্রেস। তাদের দাবি, মাধ্যমিক পরীক্ষা চলায় প্রতীকী আন্দোলন করা হল। পরীক্ষা শেষ হলেই দুর্নীতির পূর্ণাঙ্গ তদন্তের দাবিতে লাগাতার আন্দোলন করা হবে।

এ দিনও দলের বিরুদ্ধে তোপ দাগেন স্বপনবাবু। তিনি বলেন, “আমি এখনও সাসপেনশনের চিঠি পাইনি। পেলে দলের বিরুদ্ধে মানহানির মামলা করব। সাসপেন্ড করে কী লাভ! আমাকে বরং বহিষ্কার করা হোক। আমি বিধানসভায় অবস্থান চালিয়ে যাব সাসপেনশনের বিরুদ্ধে। সাসপেন্ড করা মানে তদন্তের মুখে পড়েছি। কিন্তু আমি তো অন্যায় করিনি। আমি আমার সিটেই বসব।”

শাসকদলের বিধায়কের এমন মন্তব্য এবং বিদ্রোহ ঘোষণার পরেই কি হাতিয়ার পেল কংগ্রেস? দলের শহর সভাপতি চঞ্চল চট্টোপাধ্যায় অবশ্য সে দাবি সরাসরি মানছেন না। তিনি বলেন, “সিউড়ি শহরে জলপ্রকল্পের দুর্নীতি নিয়ে ২০১২ সাল থেকে লাগাতার অন্দোলন যদি কোনও রাজনৈতিক দল করে, সেটা কংগ্রেস। তবে সিউড়ি পুরসভার বিরুদ্ধে তৃণমূল বিধায়কের অভিযোগ আমাদের বক্তব্যকে স্বীকৃতি দিয়েছে সন্দেহ নেই।” পুরভোটের আগে এটিকেই প্রধান হাতিয়ার করা হচ্ছে, সেটাও অস্বীকার করেননি শহর সভাপতি। বুধবার বিজেপি’র জেলা সভাপতি দুধকুমার মণ্ডলও বলেছিলেন, “অবশ্যই অস্ত্র তুলে দিয়েছেন তিনি। আগামী পুরভোটে এর ফায়দা তোলার চেষ্টা করবে বিজেপি।”

এ দিন, সকালে সিউড়ি’র প্রশাসন ভবনের কাছেই অবস্থান মঞ্চ থেকে পুরসভার বিরুদ্ধে স্লোগান তোলেন কংগ্রেস নেতা-কর্মীরা। নিজেদের বক্তব্য লিখে বহু পোস্টারও সাঁটিয়ে দেন তাঁরা। শহর কংগ্রেসের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, জল প্রকল্পের দূর্নীতি নিয়ে তাদের দল অনেক আগে থেকেই সরব। পুরসভায় স্মারকলিপি দেওয়া, বিক্ষোভ দেখানো, পথসভা করা এমনকী ওই বিষয়ে দুর্নীতি হচ্ছে সেটা শহরবাসীকে তাদের দলই জানিয়েছিল। এ বিষয়ে লিফলেটও বিলি করা হয়েছিল ২০১৩ সালের ১৪ ডিসেম্বর অসমাপ্ত জলপ্রকল্পের আনুষ্ঠানিক উদ্বোধনের আগে। তবে পুরসভা সূত্রের খবর, ওই বছর নভেম্বরে সাত তৃণমূল-সহ সিউড়ি’র ৮ কাউন্সিলরই জল প্রকল্প নিয়ে ধর্নায় বসেছিলেন। ক্ষোভ প্রশমন করে তখনকার মতো বিষয়টি চাপা দিতে পারলেও জলপ্রকল্প নিয়ে দূর্নীতি হচ্ছে সেটা সর্বসমক্ষে এসে যায়। কংগ্রেসও এই নিয়ে আন্দেলন করে। তারপর তড়িঘড়ি জল প্রকল্পের উদ্বোধন ঘোষণা করলেও পুরমন্ত্রী সেই উদ্বোধনে আসেননি। তারপর থেকে জলের দাবিতে শহরবাসীর পক্ষ থেকে নানা বিক্ষোভ হয়েছে। কখনও কখনও শহরবাসীর সেই আন্দোলনে রাজনৈতিক সমর্থনও ছিল। চঞ্চলবাবু অবশ্য তাঁদের কৃতিত্বে দাগ লাগতে দিতে রাজি নন। তিনি বলছেন, “২০১৩ সালের ডিসেম্বরে শহর জুড়ে যে লিফলেট বিলি করেছিল, কংগ্রেস তাতে যে বিষয়গুলি উল্লেখ করে স্বপন ঘোষের বর্তমান দাবির সঙ্গে তা মেলে।”

অবশ্য যে পুর-নির্বাচনকে সামনে রেখে পথে নামা, তাতে কতটা সফল হবে কংগ্রেস তা সময় বলবে। অতীত ইতিহাস বলছে, গত পুর-নির্বাচনে ১৮টি ওয়ার্ডের মধ্যে ৬টি আসনে কংগ্রেসের টিকিটে দাঁড়ানো প্রার্থীরা জিতেছিলেন। কিন্তু সকলেই ভোট পরবর্তীকালে তৃণমূলে যোগ দেন। সে কারণেই যে বোর্ডের বিরুদ্ধে দূর্নীতির অভিযোগ, সেই দায় তাঁদেরকেও নিতে হবে বলে মনে করেন পুরপ্রধান উজ্জ্বল মুখোপাধ্যায়। এ প্রসঙ্গে চঞ্চলবাবু দাবি করছেন, “এমন সুযোগ সন্ধানীদের এ বার প্রার্থীপদ দেওয়া হবে না।” রাজনীতির কারবারীরা অবশ্য বলছেন, এখনও অনেক মোচড় বাকি। তাই এখনই এই বিষয়ে মন্তব্য করা ঠিক হবে না।

swapankanti ghosh suri municipality
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy