Advertisement
E-Paper

ভাতা মিলছে না, অবস্থানে বৃদ্ধারা

আট মাস ধরে বিধবা ও বার্ধক্য ভাতা না পেয়ে ডাকঘর কর্তৃপক্ষর কাছে দিনভর অবস্থান করলেন বৃদ্ধারা। ঘটনাটি আদ্রার। সোমবার সকাল থেকে দুপুর পর্যন্ত ডাক বিভাগের আদ্রা মহকুমার পোস্টাল ইন্সপেক্টরের অফিসে অবস্থানে বসেন বেকো গ্রাম পঞ্চায়েতের বেকো গ্রামের বাসিন্দা জনা পনেরো বয়স্ক মহিলা। ডাক বিভাগের তরফে সমস্যা সমাধানে দ্রুত ব্যবস্থা নেওয়ার আশ্বাস মেলার পরে তাঁরা অবস্থান তোলেন।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ২৯ জুলাই ২০১৪ ০১:৩০

আট মাস ধরে বিধবা ও বার্ধক্য ভাতা না পেয়ে ডাকঘর কর্তৃপক্ষর কাছে দিনভর অবস্থান করলেন বৃদ্ধারা। ঘটনাটি আদ্রার। সোমবার সকাল থেকে দুপুর পর্যন্ত ডাক বিভাগের আদ্রা মহকুমার পোস্টাল ইন্সপেক্টরের অফিসে অবস্থানে বসেন বেকো গ্রাম পঞ্চায়েতের বেকো গ্রামের বাসিন্দা জনা পনেরো বয়স্ক মহিলা। ডাক বিভাগের তরফে সমস্যা সমাধানে দ্রুত ব্যবস্থা নেওয়ার আশ্বাস মেলার পরে তাঁরা অবস্থান তোলেন।

জেলা ডাক বিভাগ ও পঞ্চায়েত সূত্রে জানা গেছে গত বছরের ডিসেম্বর মাস থেকে ভাতা পাচ্ছেন না বেকো পঞ্চায়েতের বেকো, মহিসারডি গ্রামের জনা তিরিশেক মহিলা। ডাকবিভাগ সূত্রের খবর, ওই মহিলারা ভাতা পেতেন বেকো উপ-ডাকঘর থেকে। গত বছর ডিসেম্বর মাসে ওই ডাকঘরের তৎকালীন পোস্টমাস্টারের বিরুদ্ধে আর্থিক দুর্নীতির অভিযোগ হয়। অভিযোগের প্রেক্ষিতে বিভাগীয় তদন্তে ধরা পড়েছিল, তৎকালীন পোস্টমাস্টার বিধবা ও বার্ধক্য ভাতার প্রাপকদের ন্যায্য ভাতা না দিয়ে কম টাকা দিতেন। আদ্রা মহকুমার পোস্টাল ইন্সপেক্টার অমর মণ্ডল জানান, তদন্তে দেখা গেছে ভাতা দেওয়ার সময়ে প্রাপকদের নথিতে ন্যায্য ভাতা দেওয়ার উল্লেখ থাকলেও আসলে তাঁদের এক হাজার টাকা করে কম দিতেন তৎকালীন পোস্টমাস্টার। এমনকী, মৃত ব্যক্তির নামেও ভাতা দেওয়ার ঘটনা তদন্তে ধরা পড়েছিল। সব মিলিয়ে লক্ষাধিক টাকার দুর্নীতি হয়েছিল বেকো উপ-ডাকঘরে। বিভাগীয় তদন্তের পরে অনুপ শর্মা নামে ওই উপ-ডাকঘরের পোস্টমাস্টারের বিরুদ্ধে থানায় অভিযোগ দায়ের হয় এবং তাঁকে সাসপেন্ড করা হয় অমরবাবু বলেন, “প্রক্রিয়াগত কিছু সমস্যার জন্য তার পর থেকেই বিধবা ও বার্ধক্য ভাতা দিতে সমস্যা হচ্ছে।”

সরকারি এত ঝামেলার খবর অবশ্য রাখেন না ভুক্তভোগী মহিলারা। এ দিন অবস্থানে বসে থাকা মহিলাদের মধ্যে গায়িত্রী বাউরী, রানি বাউরী, পুষ্প বাউরিরা বলেন, “সেই গত বছর সেপ্টেম্বর মাসে ভাতা পেয়েছিলাম। তার পরে অন্যানরা ভাতা পেলেও আমরা কয়েক জন ভাতা পাচ্ছি না। সংসার চালাতে এই ভাতার টাকাই একমাত্র ভরসা আমাদের। আগে পঞ্চায়েতে অভিযোগ জানিয়েছি। কিন্তু, সুরাহা না হওয়ায় এ দিন ডাক বিভাগের কর্তার কাছে অভিযোগ জানাতে এসেছি।”

বেকো পঞ্চায়েত সূত্রেও জানা যাচ্ছে, বেকো উপ-ডাকঘরের ওই দুর্নীতি ধরা পড়া পরেই ভাতা বন্ধ হয়ে গেছে জনা তিরিশ মহিলার। এ দিন দুপুরে আদ্রার পোস্টাল ইনস্পেক্টরের কার্যালয়ে এসেছিলেন বেকো পঞ্চায়েতের সিপিএম প্রধান কাজল ভট্টাচার্য। তিনিও বলেন, “গত আট মাস ধরে বিধবা ও বার্ধক্য ভাতা পাচ্ছেন না। চলতি জানুয়ারি মাস থেকেই ডাক বিভাগকে আমরা ওই মহিলাদের সমস্যা মিটিয়ে দেওয়ার জন্য বলে আসছি। বিষয়টি কাশীপুরের বিডিওকে জানানো হয়েছে। বারবারই সমস্যা সামাধানে আশ্বাস দিয়েছেন ডাক বিভাগের আধিকারিকরা। কিন্তু কার্যকরী ব্যবস্থা না নেওয়ায় এখনও ভাতা থেকে বঞ্চিত রয়েছেন ওই মহিলা প্রাপকেরা।”

কাশীপুরের বিডিও তপন ঘোষাল বলেন, “নির্দিষ্ট সময়েই ওই প্রাপকদের অ্যাকাউন্টে ভাতার টাকা জমা হয়। আসল সমস্যাটা প্রশাসনিক স্তরে নয়। ডাক বিভাগের প্রক্রিয়াগত সমস্যার জন্যই অ্যাকাউন্টে ভাতা জমা হলেও সেই টাকা পাচ্ছেন না ওই প্রাপকরা।”

এ প্রসঙ্গে অমর মণ্ডল জানান, বেকোর তৎকালীন পোস্টমাস্টারের বিরুদ্ধে বিভাগীয় তদন্তের সময়ে প্রাপকদের পাসবই জমা নেওয়া হয়েছিল। পরে তা পাঠানো হয়েছে পুরুলিয়ায়, জেলা ডাকঘরে। ওই পাসবইগুলির নকল (ডুপ্লিকেট) তৈরি করার পরেই ভাতা দেওয়া সম্ভব। অমরবাবুর আশ্বাস, “এ দিনই ঊর্ধ্বতন কর্তৃেক্ষের সাথে এই বিষয়ে আলোচনা হয়েছে। ওই মহিলারা বকেয়া ভাতা-সহ পুরো টাকা যাতে দ্রুত পান, তা আমরা দেখছি।”

Adra old age allowance allowance
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy