শহরের একাধিক লজ ও দোকানে ভাঙচুর এবং এক সিপিএম কর্মীকে মারধর করার অভিযোগ উঠল এক দল লোকের বিরুদ্ধে। রবিবার, দোলের দিন শহরের গোবিন্দনগর এলাকায় ওই ঘটনাকে ঘিরে সাময়িক উত্তেজনা ছড়ায়। সন্ধ্যায় পুলিশ বাহিনী নিয়ে গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনেন বাঁকুড়ার ডিএসপি (আইনশৃঙ্খলা) বাপ্পাদিত্য ঘোষ, আইসি বিশ্বজিৎ সাহা।
বাপ্পাদিত্যবাবু সোমবার বলেন, “ওই ঘটনায় সিপিএমের তরফ থেকে তাদের দলীয় কর্মীকে মারধর ও কয়েকটি লজ ও দোকানে ভাঙচুর চালানোর অভিযোগ দায়ের করা হয়েছে।” কোনও লজ কর্তৃপক্ষ অবশ্য থানায় অভিযোগ দায়ের করেনি। ঘটনার তদন্ত শুরু হয়েছে বলে জানিয়েছেন ডিএসপি। পুলিশ খবর, সিপিএমের অভিযোগপত্রে মূল অভিযুক্ত হিসাবে নাম রয়েছে বাঁকুড়া শহরেরই প্রণবানন্দপল্লির বাসিন্দা পীযূষ চক্রবর্তী ওরফে বাপি-র। এলাকায় তিনি তৃণমূল কর্মী হিসেবেই পরিচিত। অভিযোগকারী তথা সিপিএমের বাঁকুড়া পশ্চিম ২ লোকাল কমিটির সম্পাদক কুণাল রায়ের অভিযোগ, রবিবার দুপুরে মদ্যপ অবস্থায় দলবল নিয়ে গোবিন্দনগরে ঢোকেন বাপি। এলাকার এলাকার তিনটি লজ ও দোকানে চড়াও হয়ে তাঁর নেতৃত্বে ভাঙচুর চলে। এলাকার কিছু মহিলাকে নির্যাতন করা হয় বলেও সিপিএমের দাবি। কুণালবাবু বলেন, “আমাদের লোকাল কমিটির সদস্য গণেশ মালাকারকে পার্টি অফিস থেকে বের করে নিয়ে গিয়ে বেধড়ক মারধর করা হয়। বর্তমানে তিনি বাঁকুড়া মেডিক্যালে চিকিসাধীন। দুপুর তিনটে থেকে বিকেল পাঁচটা পর্যন্ত এলাকায় দলবল নিয়ে কার্যত তাণ্ডব চালায় বাপি। পরে পুলিশ আসলে ঘটনাস্থল থেকে সে পালায়।” অভিযুক্তকে গ্রেফতারের দাবিতে রবিবার সন্ধ্যায় গোবিন্দনগরে প্রায় এক ঘণ্টা পথ অবরোধ করে সিপিএম। উপস্থিত ছিলেন সিপিএমের বাঁকুড়া জেলা সম্পাদক অমিয় পাত্র। তাঁর দাবি, “প্রায়ই ওই ব্যক্তি এলাকায় হাঙ্গামা করে। রবিবার ও যে ঘটনা ঘটিয়েছে, তা গুন্ডামির সামিল। এলাকার মানুষ ওর কাজকর্মে বীতশ্রদ্ধ ভয়ে কেউ অভিযোগ করতে চাইছেন না।” তাঁর আরও অভিযোগ, শাসকদলের চাপে পুলিশ অভিযুক্তকে ধরছে না। কিছুদিন আগেই গোবিন্দনগরে সিপিএমের ওই লোকাল কমিটির অফিসে অগ্নিকাণ্ড ও ভাঙুচর হয়েছিল।
তৃণমূলের জেলা সভাপতি অরূপ খাঁ বলেন, “বাপি দলের এক জন সাধারণ সমর্থক। তবে, গোবিন্দনগরে কী ঘটেছে, জানি না। কিছু ঘটে থাকলেও দলের সঙ্গে তার কোনও যোগ নেই।” জেলা সভাধিপতি অরূপ চক্রবর্তী বলেন, “গোবিন্দনগরের ঘটনা সিপিএমেরই সাজানো চক্রান্ত। ওখানে তেমন কিছুই হয়নি।” তাঁর সংযোজন, “ কেউ দোষী হলে তার বিরুদ্ধে পুলিশ ব্যবস্থা নেবে। দলীয় কর্মী হলে আমরাও দলগত ভাবে ব্যবস্থা নেব।”
পুলিশের দাবি, বাপি পলাতক। যদিও সোমবার তাঁর মোবাইলে যোগাযোগ করা হলে যাবতীয় অভিযোগ অস্বীকার করেছেন ওই তৃণমূল কর্মী। তাঁর পাল্টা দাবি, “আমরা চুপচাপ দোল খেলছিলাম। সিপিএম এবং ডিওয়াইএফের কিছু ছেলে আমাদের দিকে ইট ছোড়ে। এই নিয়ে দু’পক্ষের বচসা হয়। এর পরে ওরাই আমাদের দলের ছেলেদের মারধর করেছে।” লজগুলিতে সিপিএমের লোকেরাই ভাঙচুর চালিয়েছে বলেও দাবি বাপির।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy