অবরোধ তুলতে এসে ধস্তাধস্তিতে জড়িয়ে পড়ে পুলিশ।—নিজস্ব চিত্র
রাজ্যে পরপর পুলিশের উপরে হামলার ঘটনায় এ বার যুক্ত হল সাঁইথিয়ার নামও।
গাঁজা বিক্রির অভিযোগে বৃহস্পতিবার দুপুরে সাঁইথিয়ায় এক প্রতিবন্ধী সব্জি বিক্রেতাকে আটক করায় পুলিশের সঙ্গে বাসিন্দাদের ধস্তাধস্তি শুরু হয়। ওখানেই শেষ নয়, ভাঙচুর চালানো হয় পুলিশের গাড়িতেও। পথ অবরোধও করেন বাসিন্দারা। বীরভূমের পুলিশ সুপার অলোক রাজোরিয়া বলেন, “খবর পেয়ে পুলিশ এক গাঁজা বিক্রেতাকে ধরতে গিয়েছিল। সে পালিয়ে যায়। এক যুবককে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য থানায় আনা হয়েছিল। তার জেরেই পথ অবরোধ হয়। সামান্য ধস্তাধস্তি হয়ে থাকতে পারে। তবে পুলিশকে কেউ মারধর করেনি। অবরোধ উঠেও গিয়েছে।” পুলিশের গাড়ি ভাঙচুরের কথা অবশ্য স্বীকার করে নিয়েছেন তিনি। ওই ক্ষেত্রে নির্দিষ্ট ধারায় মামলা রুজু করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন এসপি।
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, পরিহারপুর গ্রামের বাসিন্দা শেখ ইউসুফ সব্জি বিক্রি করেন। গ্রামের বাইরে সাঁইথিয়া-বোলপুর পিচ রাস্তার ধারে তাঁর সব্জির দোকান রয়েছে। ডান পায়ে ফাইলেরিয়ার কারণে তিনি ভাল করে হাঁটাচলা করতে পারেন না। পুলিশ জানায়, এ দিন দুপুরে কেউ একজন ফোন করে খবর দেয় যে, ইউসুফ তাঁর দোকানে গাঁজা বিক্রি করেন। সঙ্গে সঙ্গে পুলিশ গিয়ে তাঁকে আটক করে থানায় নিয়ে আসে। ইউসুফকে পুলিশ ধরেছে এই খবর জানাজানি হওয়ার কিছুক্ষণের মধ্যেই গ্রামের লোকজন দোকান লাগোয়া বাস স্টপেজের কাছে অবরোধ শুরু করেন। খবর পেয়ে পৌনে তিনটে নাগাদ দু’টি গাড়িতে করে পুলিশ যায়। পুলিশের গাড়ি দেখেই লোকজন আরও ক্ষুব্ধ হয়ে ওঠেন। পুলিশের গাড়ি লক্ষ্য করে ইটপাটকেল ছুড়তে থাকে ক্ষুব্ধ বাসিন্দারা। তাদের ছোড়া ঢিলে পুলিশের গাড়ির কাচ ভেঙে যায়। গাড়ি থেকে নামতেই পুলিশের উপর চড়াও হয় অবরোধকারীরা। শুরু হয় ধস্তাধস্তি। যে পুলিশ কর্মী ইউসুফকে ধরেছিলেন, তাঁকে ঠেলতে ঠেলতে রাস্তার পাশের প্রতীক্ষালয়ে লোকজন নিয়ে যায় বলে অভিযোগ। সেখানে জটলার মাঝে ওই পুলিশকর্মীকে মারতে হাত তুলতেও দেখা যায়। তবে তাঁকে চড়-থাপ্পড় মারা হয়েছে কি না ধাক্কাধাক্কির মাঝে তা বোঝা যায়নি। বিক্ষোভকারীদের দাবি, অবিলম্বে ইউসুফকে তাঁর দোকানে দিয়ে যেতে হবে এবং অন্যায় ভাবে ধরে নিয়ে যাওয়ার জন্য পুলিশকে ক্ষমা চাইতে হবে। গ্রামবাসীদের দাবিগুলি দেখে ব্যবস্থা নেওয়ার আশ্বাস দিলে বিকেল সাড়ে তিনটে নাগাদ অবরোধ উঠে যায়। গ্রামবাসীদের দাবি, পুলিশ তাঁদের কথা মতো ইউসুফকে তাঁর দোকানে দিয়ে যায়। পুলিশের দাবি, ইউসুফের কাছ থেকে গাঁজা পাওয়া যায়নি। তাই তাঁকে ছেড়ে দেওয়া হয়েছে। কোনও মারধরের ঘটনাই ঘটেনি। তাই কাউকে গ্রেফতার বা কেস করার কোনও প্রশ্নই নেই।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy