হোমের বদলে ধর্ষণে অভিযুক্ত এক নাবালকের পাঁচটা দিন কাটাল জেলেই।
পুলিশের গাফিলতিতেই এই কাণ্ড বলে বিতর্ক শুরু হয়েছে বীরভূমে। পরে যদিও পুলিশ ১৪ বছরের ওই কিশোরকে জুভেনাইল জাস্টিস বোর্ডের সামনে হাজির করায়। বোর্ড ওই কিশোরকে হোমে পাঠিয়েছে। তবে পুলিশের গাফিলতি বা অসতর্কতার অভিযোগ মানতে নারাজ জেলা পুলিশ সুপার মুকেশ কুমার।
রামপুরহাট থানা এলাকার ওই কিশোরের বিরুদ্ধে ১৯ মার্চ এলাকার এক মূক ও বধির নাবালিকাকে ধর্ষণের অভিযোগ ওঠে। কিশোরীর পরিবারের অভিযোগের ভিত্তিতে পুলিশ ওই কিশোরকে গ্রেফতার করে। ধৃতের বিরুদ্ধে নতুন পক্সো (প্রোটেকশন অফ চিল্ড্রেন ফ্রম সেক্সচুয়াল অফেন্সেস) ধারা প্রয়োগ করে পুলিশ। ওই ধারা দেওয়ায় পুলিশ ২০ মার্চ তাকে সিউড়ির বিশেষ আদালত বা দ্বিতীয় অতিরিক্ত জেলা বিচারকের এজলাসে তোলে। সেখান থেকে তাকে ১৪ দিন জেলহাজতে পাঠানো হয়।
ওই কিশোরের বাবার দাবি, “গ্রেফতারের সময়েই পুলিশকে জানিয়েছিলাম, আমার ছেলের বয়স ১৪। তাহলে পুলিশ ওকে জুভেনাইল জাস্টিস বোর্ডের সামনে হাজির না করে আদালতে কেন তুলল? ওর তো এখন জেলে যাওয়ার বয়স হয়নি। ওকে তো হোমে রাখার দরকার ছিল। পুলিশের আরও সতর্ক হওয়া উচিত ছিল।” বিচার ব্যবস্থার সঙ্গে যুক্ত জেলার অনেকেরও প্রশ্ন, পুলিশ ওকে নাবালক জেনেও কেন আদালতে তুলল তা পরিষ্কার নয়। ছেলেটার মুখ দেখেও তো বোঝা উচিত ছিল পুলিশের। জেলা পুলিশের একটি সূত্রে জানা গিয়েছে, ভুল বুঝতে পেরেই সংশোধনের চেষ্টা শুরু হয়। নথিপত্র জমা দেওয়া হয় জুভেনাইল জাস্টিস বোর্ডে। ২৫ মার্চ বোর্ড তাকে জেল থেকে হোমে পাঠায়। তবে পুলিশ সুপারের দাবি, “পুলিশের দিক থেকে গাফিলতি নেই। অপ্রাপ্তবয়স্ক উল্লেখ করেই আদালতে ধৃতকে তোলা হয়েছিল।” কিন্তু অপ্রাপ্তবয়স্ক হলে জুভেনাইল আদালতের বদলে কেন আদালতে তোলা হল তার সদুত্তর মেলেনি।
প্রশাসন সূত্রে জানা গিয়েছে, নাবালক-নাবালিকারা অপরাধে জড়িয়ে পড়লে জেলে না পাঠিয়ে তাদের হোমে নিয়ে গিয়ে সংশোধনের চেষ্টা চলে। সে জন্য কাউন্সেলিংও করানো হয়। কিন্তু তাদের জেলে পাঠালে অন্য কয়েদিদের প্রভাবে নাবালকের মনে বিরূপ প্রভাব পড়তে পারে। তাই এ ক্ষেত্রে পুলিশের সতর্ক হওয়া দরকার ছিল বলেই মত জেলা বিচার ব্যবস্থায় যুক্ত ব্যক্তিদের।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy