Advertisement
E-Paper

ঠিকাদার বাড়ন্ত সেতু-ডাক্তারিতে

রোগী-চিকিৎসকের আনুপাতিক হারের মতোই চিন্তা বাড়াচ্ছে সেতু-মেরামতি সংস্থার আনুপাতিক হার। এ রাজ্যে ১৮

চন্দ্রপ্রভ ভট্টাচার্য

শেষ আপডেট: ১৬ সেপ্টেম্বর ২০১৮ ০৫:২৩
—ফাইল চিত্র।

—ফাইল চিত্র।

রোগী-চিকিৎসকের আনুপাতিক হারের মতোই চিন্তা বাড়াচ্ছে সেতু-মেরামতি সংস্থার আনুপাতিক হার। এ রাজ্যে ১৮৫০ জন রোগী পিছু একজন চিকিৎসক। একইভাবে এ রাজ্যে পূর্ত দফতরের হাতে থাকা প্রায় ১৪০০ সেতু সারাইয়ের জন্য রয়েছে মাত্র ১০-১২টি সংস্থা! মাঝেরহাট সেতু বিপর্যয়ের পরে এই তথ্য পূর্ত দফতরের আধিকারিকদের আশঙ্কা বাড়াচ্ছে।

সেতু বিপর্যয়ের পরে তড়িঘড়ি গোটা রাজ্যে সেতুগুলির স্বাস্থ্য পরীক্ষা করে তা মেরামতির নির্দেশ দিয়েছে রাজ্য সরকার। পৃথক ভাবে পর্যালোচনা বৈঠক ডেকে এই নির্দেশের দ্রুত বাস্তবায়ন বাধ্যতামূলক করেছেন দফতরের কর্তারাও। তার পরেই রাজ্যে পূর্ত দফতরের তিনটি জোনে সেতুর স্বাস্থ্য পরীক্ষার কাজ শুরু করেছেন ইঞ্জিনিয়ারেরা। তার পরে হবে সংস্কার। কিন্তু তা করতে গিয়েই হোঁচট খাচ্ছেন দফতরের একাংশ।

সূত্রের দাবি, সামগ্রিক ভাবে ঠিকাদারের সংখ্যা অনেক হলেও মাত্র ১০-১২টি সংস্থা রয়েছে, যারা শুধু সেতু মেরামতির কাজই করে থাকে। ফলে তাদের ছাড়া অন্য ঠিকাদার সংস্থাকে সেতুর মেরামতির দায়িত্ব দেওয়া সম্ভব নয়। দফতরের বড় অংশের আধিকারিকদের আশঙ্কা, দফতরের অধীনে থাকা মোট সেতুর ন্যূনতম ৩০ শতাংশের মেরামত করতে হলে সংখ্যাটা হবে ৪২০। আবার সরকারের হিসেবে কলকাতাতেই বিপজ্জনক সেতুর সংখ্যা অন্তত ২০টি। অবিলম্বে সেগুলিরও মেরামতি প্রয়োজন। সে ক্ষেত্রে সময়ের মধ্যে ১০-১২টি সংস্থাকে দিয়ে অতগুলি সেতুর সংস্কার কী ভাবে সম্ভব, তা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে। এক আধিকারিকের কথায়, ‘‘১০-১২টি ছাড়া শুধু সেতু মেরামতির কাজে দক্ষ ঠিকাদার সংস্থা সে ভাবে নেই বললেই চলে। ফলে এবার জেলাগুলিতে এমন সংস্থার খোঁজ চালানো হচ্ছে।’’

কিন্তু কী ভাবে এত কম ঠিকাদার দিয়ে অতবড় কাজ সময়ের মধ্যে করা সম্ভব? আধিকারিকদের একটি অংশের মতে, উপায় না থাকলে শেষে হয়তো একেকটি সংস্থাকে একাধিক সেতু মেরামতের দায়িত্ব দিতে হতে পারে। সে ক্ষেত্রে নির্দিষ্ট সময়ে কাজ শেষ করার লক্ষ্যমাত্রা মানা সম্ভব নাও হতে পারে। আবার গুরুত্ব অনুযায়ী ভাগ করে কাজ করানো হতে পারে।

প্রশ্ন উঠছে, মাঝেরহাট-কাণ্ড না ঘটলে এই দিকে কি নজর পড়ত না? আধিকারিকদের কারও কারও ব্যাখ্যা, অতীতে দফতরের নথিবদ্ধ ঠিকাদারের সংখ্যা অনেক ছিল। দুর্নীতি এবং অনৈতিক প্রক্রিয়া রুখতে কয়েক বছর আগে সেই ব্যবস্থা ভেঙে দেওয়া হয়। ফলে এখন কোনও ঠিকাদার আর দফতরের নথিবদ্ধ নন। আর এমন পরিস্থিতি যে তৈরি হতে পারে, তা আগাম আঁচ করা যায়নি। ফলে সেতু-বিশেষজ্ঞ ঠিকাদারের ঘাটতি এত দিন সে ভাবে বোঝা যায়নি।

ইঞ্জিনিয়ারদের একাংশ জানাচ্ছেন, প্রধানত খালি চোখে এবং অভিজ্ঞতাকে কাজে লাগিয়েই সেতুগুলি পরীক্ষা করা হচ্ছে। সেতুর নির্মাণ সংক্রান্ত ত্রুটি এবং ক্ষয় মেরামত করতে হবে ওই ঠিকাদারদের। তবে তার গভীরে গিয়ে পরীক্ষা করে খুঁত ধরতে গেলে পৃথক ভাবে বিশেষজ্ঞ সংস্থার প্রয়োজন। যারা প্রযুক্তির সহযোগিতায় সেতুর স্বাস্থ্য পরীক্ষা করবে। গোটা দেশে এমন সংস্থার চাহিদা যথেষ্ট। তাই অত সেতুর উপযুক্ত পরীক্ষার জন্য বিশেষজ্ঞ সংস্থা পাওয়াও মুশকিল।

আধিকারিকদের কারও কারও বক্তব্য, আগে থেকে সেতু রক্ষণাবেক্ষণের উপযুক্ত পদ্ধতি এবং নীতি থাকলে এই পরিস্থিতিতে পড়তে হতো না।

PWD Bridge পূর্ত দফতর
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy