Advertisement
E-Paper

ইন্টারনেট বন্ধ, তবু মোবাইলে ফের প্রশ্ন ফাঁস

মাধ্যমিকে এর আগে বাংলা, ইংরেজি, ইতিহাস, ভূগোল, অঙ্কের প্রশ্ন পরীক্ষা শুরুর এক ঘণ্টার মধ্যে হোয়াটসঅ্যাপ মারফত বাইরে চলে যায়।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ২০ ফেব্রুয়ারি ২০১৯ ০৪:০০
পরীক্ষা চলাকালীন এই প্রশ্নপত্রই সোশ্যাল মিডিয়ায় ছড়িয়ে পড়ে।—নিজস্ব চিত্র।

পরীক্ষা চলাকালীন এই প্রশ্নপত্রই সোশ্যাল মিডিয়ায় ছড়িয়ে পড়ে।—নিজস্ব চিত্র।

অভিযোগ উঠছিল, প্রশ্নপত্র বারবার ছড়াচ্ছিল মালদহ-সহ সীমান্তবর্তী কয়েকটি জেলার বিভিন্ন অংশ থেকে। তাই মঙ্গলবার পরীক্ষা চলাকালীন সন্দেহের আওতায় থাকা ন’টি জেলার বেশ কিছু অংশে ইন্টারনেট পরিষেবাই বন্ধ করে দিয়েছিল প্রশাসন। কিন্তু তাতেও শেষ রক্ষা হয়নি। এ দিন পদার্থবিদ্যার পরীক্ষা শুরু হওয়ার এক ঘণ্টার মধ্যে ফের প্রশ্ন ছড়িয়ে পড়ল সেই হোয়াটসঅ্যাপের মাধ্যমেই।

মাধ্যমিকে এর আগে বাংলা, ইংরেজি, ইতিহাস, ভূগোল, অঙ্কের প্রশ্ন পরীক্ষা শুরুর এক ঘণ্টার মধ্যে হোয়াটসঅ্যাপ মারফত বাইরে চলে যায়। হোয়াটসঅ্যাপে প্রশ্ন ছড়ানোর অভিযোগে তিন জনকে গ্রেফতার করেছে সিআইডি। ওই চক্রে জড়িত সন্দেহভাজন আরও কয়েক জনের খোঁজ চলছে। প্রশাসন জানিয়েছে, আজ, বুধবার জীববিজ্ঞান এবং কাল, বৃহস্পতিবার ঐচ্ছিক পরীক্ষাতেও ইন্টারনেট পরিষেবা বন্ধ থাকবে ওই জেলাগুলোর কিছু অংশে।

মোবাইল নিয়ে ঢুকলে পরীক্ষার্থীর পরীক্ষা বাতিলের নির্দেশ দিয়েছে মধ্যশিক্ষা পর্ষদ। পরীক্ষা কেন্দ্রে মোবাইল ব্যবহার করায় শিক্ষককে সাসপেন্ডও করা হয়েছে। কিন্তু পরীক্ষার হলে মোবাইলের প্রবেশ যে ঠেকানো যাচ্ছে না, বারবার প্রশ্ন বেরিয়ে যাওয়ার ঘটনাই তার প্রমাণ বলে শিক্ষা শিবিরের অভিমত। অঙ্ক পরীক্ষার আগে জেলাশাসক ও পুলিশ সুপারদের সঙ্গে ভিডিয়ো-সম্মেলন করেন পর্ষদ-সভাপতি কল্যাণময় গঙ্গোপাধ্যায়। হুঁশিয়ারি দিয়েছেন শিক্ষামন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায়ও। তা সত্ত্বেও এ দিন ফের হোয়াটসঅ্যাপের মাধ্যমে প্রশ্ন ছড়িয়ে পড়ার পরে অভিযোগ ওঠে, সিআইডি, প্রশাসন, শিক্ষামন্ত্রী বা পর্ষদ কারও হুঁশিয়ারি বা কোনও পদক্ষেপই কাজে আসেনি।

এ দিন প্রশ্ন ছড়িয়ে পড়ায় পরপর ছ’বার প্রশ্নপত্র বেরোনোকে ‘ডবল হ্যাটট্রিক’ আখ্যা দিয়ে নানা রকম কার্টুনও পোস্ট হতে তাকে সোশ্যাল মিডিয়ায়। সেখানে কেউ কেউ মাধ্যমিককে বলেছেন ‘মধ্যলিক’। কেউ কেউ মজা করে যুবরাজ সিংহ বা রবি শাস্ত্রীর ছ’বলে ছয় ছক্কা মারার কথাও তুলছেন! পরীক্ষা শেষ হওয়ার আগেই সোশ্যাল মিডিয়া প্রশ্ন ফাঁস নিয়ে রঙ্গরসিকতায় ভরে গিয়েছে।

প্রশ্ন উঠছে, পর্ষদ থেকে মন্ত্রী বারবার কড়া বন্দোবস্তের কথা বলা সত্ত্বেও ‘নিশ্ছিদ্র নজরদারি’ এড়িয়ে প্রশ্ন বেরিয়ে যাচ্ছে কী ভাবে? খামতি ঠিক কোথায়? শিক্ষামন্ত্রী পার্থবাবু আগেই অবশ্য বলেছেন, ‘‘প্রশ্ন বেরোচ্ছে পরীক্ষা শুরু হওয়ার পরে। সুতরাং একে প্রশ্ন ফাঁস হওয়া বলা যায় না। প্রশ্ন ফাঁস তখনই বলা যায়, যখন সেই পরীক্ষা শুরুর আগে প্রশ্ন বাইরে চলে যায়। আসলে মাধ্যমিক পরীক্ষা ব্যবস্থাকে কালিমালিপ্ত করতে কেউ কেউ এটা করছে।’’

মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এ দিন নবান্নে যাওয়ার আগে হঠাৎই ঢুকে পড়েন গোখেল মেমোরিয়াল স্কুলে। কিন্তু সেখানে মাধ্যমিক পরীক্ষার আসন পড়েনি। মুখ্যমন্ত্রী পরে যান স্যর রমেশ মিত্র গার্লস স্কুলে। সেখানেও কোনও পরীক্ষা হচ্ছে না। এর পরে ভবানীপুর গার্লসে যান মমতা। সেখানে গিয়ে জানতে পারেন, ভবানীপুর গার্লসে স্যর রমেশ মিত্র গার্লস স্কুলের ছাত্রীদের পরীক্ষা চলছে। সেখানে তিনি কিছু ক্ষণ কথা বলেন পরীক্ষার্থীদের সঙ্গে। জানতে চান, পরীক্ষা কেমন হচ্ছে। ছাত্রীরা তাঁকে জানায়, ইতিহাস ও অঙ্কের প্রশ্ন কঠিন হয়েছে। নবান্ন সূত্রের খবর সত্যিই প্রশ্নপত্র কঠিন হয়েছে কি না, তা খতিয়ে দেখা হবে। প্রয়োজনে নমনীয় হওয়ার কথাও ভাবা হচ্ছে।

Question Leak Corruption Academics Education
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy