শোভন চট্টোপাধ্যায়
আরও একটি জলের নমুনায় কলিফর্ম ব্যাক্টিরিয়া পাওয়ার পরে স্বাস্থ্য দফতর নিশ্চিত যে, পুরসভার পানীয় জলের সঙ্গে নিকাশির জল মিশছে। কোথায় যে মিশছে, এখনও খুঁজে বার করতে পারেনি পুরসভা। তা সত্ত্বেও ওই জল বাড়ি বাড়ি সরবরাহ করা হচ্ছে কেন, সেই প্রশ্ন উঠল পুরসভার অন্দরেই।
পুরসভার ইঞ্জিনিয়ার, আধিকারিক ও চিকিৎসকদের একাংশ চান, আন্ত্রিক কবলিত এলাকায় ট্যাঙ্কে জল সরবরাহ করে পরিস্থিতি সামাল দেওয়া হোক। কয়েক দিন সরবরাহ বন্ধ রেখে পরে সেখানে পাঠানো হোক টালা ট্যাঙ্কের জল।
মেয়র শোভন চট্টোপাধ্যায় নিজেই পুরসভার জল সরবরাহ বিভাগের দায়িত্বে রয়েছেন। তিনি শুক্রবার বলেন, ‘‘আন্ত্রিক-আক্রান্ত এলাকায় জল বন্ধ করে ট্যাঙ্কের জল দেওয়া পরিকাঠামোগত ভাবে সম্ভব নয়। এত জলের ট্যাঙ্ক পাব কোথায়?’’ তাঁর দাবি, গত কয়েক দিনের তুলনায় আন্ত্রিকের প্রকোপ অনেকটাই কমেছে। তাই জল সরবরাহ বন্ধ করার কোনও দরকার নেই।
যদিও পুরসভার হিসেব বলছে, বৃহস্পতিবার রাত ১২টার পর থেকে শুক্রবার বিকেল ৫টা পর্যন্ত শুধু বাঘা যতীন হাসপাতালেই ভর্তি হয়েছেন ২৬ জন আন্ত্রিক-রোগী। তার আগের ২৪ ঘণ্টায় ভর্তি হন ১২ জন। গত সাত দিনে কমবেশি আন্ত্রিক ছড়িয়েছে দক্ষিণ শহরতলির ১৪টি ওয়ার্ডে।
সাত দিনেও আন্ত্রিক পুরোপুরি নিয়ন্ত্রণে না-আসায় চিন্তিত রাজ্য প্রশাসন। রোগ প্রতিরোধে পুরসভা কী করছে, জল পরীক্ষার ফলই বা কী, ক’টি জায়গায় জল পরীক্ষা করা হয়েছে— এ-সব জানতে পুরসভার মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিককে মহাকরণে ডেকে পাঠানো হয়। তাঁর কাছ থেকে তথ্য নেন পুর ও নগরোন্নয়ন মন্ত্রী ফিরহাদ (ববি) হাকিম। রাজ্য সরকারের তরফে কোনও সাহায্যের প্রযোজন হলে তা পুরসভাকে জানাতে বলেছেন পুরমন্ত্রী।
আন্ত্রিক-কবলিত এলাকার মানুষ বাজার থেকে যে-কোনও ব্র্যান্ডের জল কিনে খাচ্ছেন। তাতে তাঁদের বিপদ বাড়ছে বলে মনে করেন বিশেষজ্ঞেরা। কিন্তু বাসিন্দারা কী করবেন, সেই ব্যাপারে পুরসভার তরফে কোনও প্রচারও নেই।
আইডি হাসপাতালের অধ্যক্ষ উচ্ছল ভদ্রের বক্তব্য, পুরসভার জলে সংক্রমণ যে একটা হয়েছেই, তা পরিষ্কার। মানুষকে তাই সতর্ক হয়ে জল পানের পরামর্শ দিয়েছেন তিনি। ‘‘অন্তত কুড়ি মিনিট জল ফুটিয়ে
সেটা খেতে হবে। জামাকাপড় কাচা, স্নান, বাসন মাজার জলও ফুটিয়ে নেওয়া প্রয়োজন,’’ বলছেন উচ্ছলবাবু। জলে ক্লোরিন ট্যাবলেট মিশিয়ে খাওয়ার পরামর্শও দিয়েছেন আইডি-র অধ্যক্ষ।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy