E-Paper

কেন্দ্রীয় বরাদ্দ পেতে গুরুত্ব জল প্রকল্পে

অর্থ দফতর সূত্রের খবর, ২০১৯ সাল থেকে শুরু হওয়া জল জীবন মিশন শেষ হওয়ার কথা ছিল ২০২৪ সালে। কিন্তু পশ্চিমবঙ্গ-সহ একাধিক রাজ্যে এখনও প্রকল্পের কাজ বাকি।

চন্দ্রপ্রভ ভট্টাচার্য

শেষ আপডেট: ২৩ ফেব্রুয়ারি ২০২৫ ০৭:০১

— প্রতীকী চিত্র।

রাজ্যের নিজস্ব বরাদ্দ থাকলেও, গত নভেম্বরে কেন্দ্রের ভাগের টাকা পায়নি পশ্চিমবঙ্গ। তাই তখন থেকেই জল জীবন মিশন (রাজ্যে যার নাম জলস্বপ্ন) ঘিরে উদ্বেগ বাড়তে থাকে নবান্নের অন্দরে। এই অবস্থায় বিপুল আর্থিক চাপ সত্ত্বেও জনস্বাস্থ্য কারিগরি দফতরের বাজেটের বরাদ্দ এ বার দ্বিগুণের বেশি বাড়িয়েছে রাজ্য। আধিকারিকদের একাংশ জানান, নতুন অর্থবর্ষে (২০২৫-২৬) এই প্রকল্পে রাজ্যের ভাগের প্রায় পুরো অর্থই বরাদ্দ করার আগাম বার্তা দেওয়া হয়েছে যাতে কেন্দ্রের বরাদ্দও অবাধ থাকে। একই সঙ্গে সময়ের মধ্যে প্রতিটি গ্রামীণ পরিবারে নলবাহিত পরিস্রুত পানীয় জল পৌঁছে দেওয়ার কাজ শেষ করতে রাজ্য যে বদ্ধপরিকর, সেই বার্তাও কেন্দ্রকে দেওয়া হয়েছে।

অর্থ দফতর সূত্রের খবর, ২০১৯ সাল থেকে শুরু হওয়া জল জীবন মিশন শেষ হওয়ার কথা ছিল ২০২৪ সালে। কিন্তু পশ্চিমবঙ্গ-সহ একাধিক রাজ্যে এখনও প্রকল্পের কাজ বাকি। এই অবস্থায় সংশ্লিষ্ট রাজ্যগুলির সঙ্গে কেন্দ্র কথা বলে স্থির করেছে, ২০২৮ সাল পর্যন্ত প্রকল্প চালু থাকবে। ১ ফেব্রুয়ারি পেশ হওয়া কেন্দ্রের বাজেটে এই প্রকল্পের খাতে প্রায় ৬৭ হাজার কোটি টাকা বরাদ্দের ঘোষণা করেছেন কেন্দ্রীয় অর্থমন্ত্রী। রাজ্যের আশা, নতুন আর্থিক বছরে কেন্দ্র সব রাজ্যের সঙ্গে পশ্চিমবঙ্গকেও বরাদ্দ মঞ্জুর করবে। তাই রাজ্য বাজেটে জনস্বাস্থ্য কারিগরি দফতরের জন্য প্রায় ১১ হাজার ৬৩৭ কোটি টাকা বরাদ্দ করা হয়েছে। আগে এই দফতরের জন্য বরাদ্দ ছিল প্রায় সাড়ে চার হাজার কোটি টাকা।

প্রশাসনের এক কর্তার কথায়, “এই প্রকল্পের অর্ধেক খরচ দেয় কেন্দ্র, বাকি অর্ধেকের দায়িত্ব রাজ্যের। প্রথা অনুযায়ী, কেন্দ্র তাদের একটি দফার টাকা দিলে সমপরিমাণ অর্থ বরাদ্দ করতে হয় রাজ্যকে। রাজ্য বাজেটে ওই দফতরের জন্য বিপুল অর্থ বরাদ্দের তাৎপর্য, নিজেদের ভাগের প্রায় পুরো অর্থের সংস্থান করে রাখা। ফলে প্রকল্পের প্রতি রাজ্যের সদিচ্ছা নিয়ে কেন্দ্রেরও দ্বিধা থাকার কথা নয়।’’

আবাস যোজনা, একশো দিনের কাজ বা গ্রামীণ সড়ক যোজনার মতো গ্রামকেন্দ্রিক প্রকল্পে কেন্দ্রীয় বরাদ্দ দীর্ঘদিন ধরে বন্ধ। তবে জল জীবন মিশনের পরিণতি সেই প্রকল্পগুলির মতো হয়নি। গত অগস্টে কেন্দ্র এবং রাজ্যের সমপরিমাণ বরাদ্দে প্রায় ২৫০০ কোটি টাকা ব্যবহার করা গিয়েছিল প্রকল্পে। গত নভেম্বরে রাজ্য অগ্রিমপ্রায় ১২৫০ কোটি টাকা বরাদ্দ করলেও সমপরিমাণ অর্থ কেন্দ্র দেয়নি। তাই প্রকল্পের ভবিষ্যৎ নিয়ে প্রশ্ন উঠেছিল প্রশাসনের অন্দরে।

রাজ্যের শীর্ষকর্তাদের একাংশ জানান, ২০২৪ পর্যন্ত প্রকল্পটি চলার কথা থাকায় সেই বছর পর্যন্তই তার বাজেট বরাদ্দ ছিল। তাই পশ্চিমবঙ্গের মতো অনেক রাজ্যই কেন্দ্রীয় বরাদ্দ পায়নি। প্রকল্পের সময়বৃদ্ধি এবং নতুন বরাদ্দ কেন্দ্রীয় বাজেটে জায়গা পাওয়ায় নতুন অর্থবর্ষ থেকে তা ফের পাওয়ার আশা আছে। কারণ, কেন্দ্রের তথ্য বলছে, ১১টি রাজ্যে এই প্রকল্প একশো শতাংশ কার্যকর হয়ে গিয়েছে। ১৭টি রাজ্যে প্রকল্পের অগ্রগতির হার ৭৬.৪৩% থেকে৯৭.২৭%-র মধ্যে। তবে অন্ধ্রপ্রদেশ ৭৩.৭৯%, মধ্যপ্রদেশে ৬৭.৪১%, রাজস্থানে ৫৫.৪৯%, ঝাড়খণ্ডে ৫৪.৬৭%, পশ্চিমবঙ্গে ৫৪.৬৪% এবং কেরলে ৫৪.২৭% কাজ এগিয়েছে।

(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)

West Bengal government Central Government Mamata Banerjee

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy