রাস্তার দু’পাশে কোথাও নীল-সাদা কাপড়ের দেওয়াল, কোথাও বাঁশ বেঁধে সার দিয়ে সরকারি প্রকল্পের ফ্লেক্স। আজ, বুধবার মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় সভা করতে আসার কথা। তার আগে এ ভাবেই জলপাইগুড়ি শহরের একাংশ মুড়ে ফেলার কাজ চলছে। তবে দৃষ্টির আড়াল গড়া নিয়ে সমাজমাধ্যমে রাজ্যের শাসক দলকে খোঁচা দিলেন রাজ্য বিধানসভার বিরোধী দলনেতা বিজেপির শুভেন্দু অধিকারী। মুখ খুললেন কলেজ পড়ুয়া তৃণমূল ছাত্র পরিষদ সমর্থকদের একাংশও। শুভেন্দুকে পাল্টা জবাব দেন রাজ্যের উত্তরবঙ্গ উন্নয়নমন্ত্রী উদয়ন গুহ।
অসম মোড়-শিরিষ তলা হয়ে জলপাইগুড়ি শহরে ঢুকতে পারে মুখ্যমন্ত্রীর কনভয়। শিরিষতলা থেকে মুখ্যমন্ত্রীর সভাস্থল এবিপিসি মাঠের দূরত্ব কিলোমিটার খানেক। সে পথের দু’পাশে সরকারি প্রকল্পের ফ্লেক্স টাঙানো হয়েছে। সভাস্থল থেকে কিছুটা দূরে বিশ্ববাংলা ক্রীড়াঙ্গন। লাগোয়া নিচু জমিতে আবর্জনা ফেলে পুরসভা। দীর্ঘদিনের অভিযোগ, ওই এলাকা দিয়ে পথচলতিদের নাকে রুমাল চেপে যাতায়াত করতে হয়। মঙ্গলবার সকালে দেখা যায়, এলাকার রাস্তার পাশে নীল-সাদা কাপড়ের দেওয়াল তৈরি হয়েছে, যাতে রাস্তা থেকে আবর্জনা ফেলার জায়গা দেখা না যায়। আবর্জনা পরিষ্কারও শুরু হয়েছে। যদিও সে পথ দিয়ে মুখ্যমন্ত্রীর যাওয়ার কথা নয়।
ক্রীড়াঙ্গন লাগোয়া আবর্জনা ফেলার মাঠের ভিডিয়ো সমাজমাধ্যমে দিয়ে শুভেন্দু লিখেছেন, ‘হঠাৎ করে দেখা গেল সেই আবর্জনা, ময়লা কিছুটা পরিষ্কার করে নীল-সাদা কাপড়ে ঢেকে দেওয়া হয়েছে। কারণ, মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় জলপাইগুড়িতে আসছেন। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের আমলে উত্তরবঙ্গ বরাবর বঞ্চিত। নীল-সাদা কাপড়ে কি আর অনুন্নয়ন ঢাকা যায়?” যদিও জলপাইগুড়ি পুরসভার প্রধান তৃণমূলের পাপিয়া পাল জানান, কঠিন বর্জ্য অপসারণ প্রকল্পের নিয়মে ওই মাঠে পৃথকীকরণের জন্য আবর্জনা ফেলা হয়। উত্তরবঙ্গ উন্নয়নমন্ত্রী বলেন, ‘‘উত্তরবঙ্গ আগে কী ছিল, এখন কী হয়েছে উনি (শুভেন্দু) জানেন না। পুরসভা মনে করেছে, দৃশ্যদূষণ ঠেকাতে দেওয়াল করবে, করেছে। আমেরিকার প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প যখন এসেছিলেন, তখন আমদাবাদে প্রধানমন্ত্রী মোদীকে বড়-বড় দেওয়াল তুলতে হয়েছিল কেন?’’
ফ্লেক্সে ঢেকেছে জলপাইগুড়ির রাস্তা। মঙ্গলবার। ছবি: সন্দীপ পাল।
এ দিন সকালে মুখ্যমন্ত্রীর সভাস্থল লাগোয়া আনন্দ চন্দ্র (এসি) কলেজের সামনে রাস্তার দু’পাশে বাঁশ বেঁধে সরকারি প্রকল্পের ফ্লেক্স লাগানো হচ্ছিল। সে সময়ে টিএমসিপি সমর্থক পড়ুয়াদের একাংশ বাধা দেন। তাঁদের অভিযোগ, দেওয়ালের মতো করে আড়াল হওয়ায় মুখ্যমন্ত্রী কলেজ দেখতে পাবেন না। কলেজের সামনে কাঁচা নর্দমা রয়েছে। অপরিষ্কার পরিবেশ। সে সব আড়াল করতে পুরসভা ফ্লেক্স লাগিয়েছে। যদিও পরে তারাই ফ্লেক্স খুলে দেয়। পুরপ্রধান বলেন, ‘‘এসি কলেজের পড়ুয়ারা বলছিলেন, কলেজ ঢাকা পড়ছে। তাই ফ্লেক্স সরানো হয়েছে।”
এই খবরটি পড়ার জন্য সাবস্ক্রাইব করুন
5,148
1,999
429
169
(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)