Advertisement
E-Paper

রাজ্যে এসে রাজ্যকেই বিঁধলেন কৃষিমন্ত্রী রাধামোহন

রাজ্যসভার তৃণমূল সাংসদ বিবেক গুপ্তর আমন্ত্রণ, উপরোধ ঠেলতে না পেরে তিনি কলকাতায় এসেছেন। বক্তৃতায় সে কথা জানালেনও। কিন্তু বণিকসভার সেই অনুষ্ঠানে রাজ্যের তৃণমূল সরকারকেই বিঁধলেন কেন্দ্রীয় কৃষিমন্ত্রী রাধামোহন সিংহ।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ৩১ ডিসেম্বর ২০১৭ ০৩:৫৮

রাজ্যসভার তৃণমূল সাংসদ বিবেক গুপ্তর আমন্ত্রণ, উপরোধ ঠেলতে না পেরে তিনি কলকাতায় এসেছেন। বক্তৃতায় সে কথা জানালেনও। কিন্তু বণিকসভার সেই অনুষ্ঠানে রাজ্যের তৃণমূল সরকারকেই বিঁধলেন কেন্দ্রীয় কৃষিমন্ত্রী রাধামোহন সিংহ। তাঁর দাবি, ক্ষুদ্র সেচ প্রকল্পে কেন্দ্রের দেওয়া টাকার একাংশ রাজ্য
খরচ করতে না পারায় তা ফিরে গিয়েছে। এতে ক্ষতি হচ্ছে কৃষকদেরই। রাজ্যকে কেন্দ্রীয় কৃষিমন্ত্রীর খোঁচা, ‘‘কৃষকদের হয়ে আমরা যত কথা বলছি, বাস্তবের জমিতে ততটা কাজ হচ্ছে কি?’’

শনিবার ভারত চেম্বার অব কমার্স-এর ১১৭তম বার্ষিক সাধারণ সভার প্রধান অতিথি কৃষিমন্ত্রীর দাবি, ২০১৬-’১৭-য় ক্ষুদ্র সেচে পশ্চিমবঙ্গের জন্য বরাদ্দ হয়েছিল ৩২ কোটি টাকা। প্রথম দফায় ১৬ কোটি টাকা পাঠানো হয়েছিল। তার মধ্যে ৬ কোটি টাকা খরচ করতে না পারায় তা ফেরত চলে যায়। নিয়ম মেনেই দ্বিতীয় কিস্তির টাকা তাই দেওয়া হয়নি।

কেন্দ্রীয় মন্ত্রীর অভিযোগের প্রেক্ষিতে রাজ্যের কৃষিমন্ত্রী আশিস বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, ‘‘কৃষি সংক্রান্ত তথ্য কেন্দ্রীয় কৃষিমন্ত্রীর ঠিক মতো জানা নেই। সব কথা ওঁর মনগড়া!’’ তৃণমূল সাংসদ বিবেক গুপ্ত কোনও মন্তব্য করতে চাননি।

কেন্দ্রীয় সরকার চাষের জমির ‘স্বাস্থ্য কার্ড’ দিচ্ছে কৃষকদের। এই কার্ডে মাটির চরিত্র কেমন, কী কী উপাদানের ঘাটতি ও তা মেটাতে কী ধরনের সার, ক’বার সেচ লাগবে— সেই সব পরামর্শ রয়েছে। কেন্দ্রীয় কৃষিমন্ত্রীর দাবি, দেশের মোট ১২ কোটি কৃষকের মধ্যে শুক্রবার পর্যন্ত ১০ কোটি কৃষক ওই কার্ড পেয়েছেন। তিনি বলেন, ‘‘পশ্চিমবঙ্গে ৫০ লক্ষ কৃষকের মধ্যে ওই কার্ড পেয়েছেন ৪০ লক্ষ কৃষক।’’ সেই সঙ্গে তাঁর চিমটি, ‘‘এটা রাজ্য সরকারের
হিসেব। বাস্তব অবস্থাটা কী, সেটা আপনারা দেখবেন।’’

তবে এই প্রসঙ্গে কৃষি ও আনুষঙ্গিক বিষয়ে পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রীর মুখ্য উপদেষ্টা প্রদীপ মজুমদারের পাল্টা দাবি, ‘‘কেন্দ্রীয় কৃষিমন্ত্রীর কোনও তথ্যই ঠিক নয়। রাজ্যে কৃষকের সংখ্যা ৭২ লক্ষ। তার মধ্যে ৪২ লক্ষ ওই কার্ড পেয়েছেন। এই সব নথি ডিজিটালি সংরক্ষিত।’’

কেন্দ্রীয় কৃষিমন্ত্রীর জানান, ১৭টি কিষাণ মাণ্ডি নির্মাণের প্রস্তাব কেন্দ্রকে পাঠিয়েছে রাজ্য। অথচ এই সংক্রান্ত আইন বা এগ্রিকালচারাল প্রোডিউস মার্কেট কমিটি আইনে বদল আনেনি তারা। এই প্রসঙ্গে প্রদীপবাবু বলেন, ‘‘কেন্দ্রীয় কৃষিমন্ত্রী কোনও খবর রাখেন না। আমরা শুরুতেই আইনে বদল এনেছি। কৃষি বাজারের বিক্রেতাদের জেলায় জেলায় লাইসেন্স দেওয়া হচ্ছে। যাঁরা বৈদ্যুতিন ভাবে কাজ করছেন, তাঁদের জন্য একটিই লাইসেন্স-এর ব্যবস্থা।’’

গুজরাত, তামিলনাড়ু, বিহার-সহ কয়েকটি রাজ্য যে ভাবে দুধ উৎপাদনে নজর দিয়েছে, পশ্চিমবঙ্গ তা করেনি বলেও অভিযোগ করেন রাধামোহন। এ নরেন্দ্র মোদীর নেতৃত্বে দেশে কৃষি উন্নয়নে কেন্দ্র কী কী পদক্ষেপ করেছে, তার কী সুফল পাওয়া গিয়েছে, এ দিনের অনুষ্ঠানে সে সবের ঢালাও ফিরিস্তি দেন কেন্দ্রীয় মন্ত্রী। রীতি মতো নির্বাচনী প্রচারের ঢঙে তিনি বলেন, ‘‘জনগণ নরেন্দ্র মোদীকে যে শক্তি দিয়েছেন, তা আরও মজবুত করতে হবে।’’ তৃণমূল সাংসদ বিবেক গুপ্ত তখন ওই মঞ্চেই ছিলেন।

Radha Mohan Singh Minister TMC BJP State Government
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy