নিম্নচাপের জেরে অঝোরে বৃষ্টি। ছাতা মাথায় ধর্মতলার রাস্তায়। শুক্রবার। ছবি: স্বাতী চক্রবর্তী।
সারা শ্রাবণ প্রতীক্ষায় থেকেও গাঙ্গেয় বঙ্গের তৃষ্ণা মেটেনি। অবশেষে ভাদ্র এসেছে গভীর নিম্নচাপ নিয়ে। দক্ষিণবঙ্গের বৃষ্টি-ঘাটতি বহুলাংশে মিটিয়ে দেওয়ার আশ্বাসেই যেন শুরু হয়েছে অঝোর ধারা। বঙ্গোপসাগরে তৈরি হওয়া গভীর নিম্নচাপের দাক্ষিণ্যে শুক্রবার বর্ষার সত্যিকারের আবহ ঘনিয়ে এসেছে, কমবেশি বর্ষণ চলছে দিনরাত। আলিপুর আবহাওয়া দফতরের পূর্বাভাস, স্থলভূমিতে ঢোকার পরে গভীর নিম্নচাপটি উত্তর ওড়িশার উপর দিয়ে মধ্য ভারতের দিকে বয়ে যাবে। আজ, শনিবারেও গাঙ্গেয় বঙ্গে বৃষ্টির সম্ভাবনা রয়েছে।
বর্ষার চলতি মরসুমে উত্তরবঙ্গ আশাতীত বৃষ্টি পেলেও গোটা শ্রাবণে গাঙ্গেয় বঙ্গে এমন কোনও জোরালো বর্ষণ হয়নি, যাতে এই অঞ্চলের ঘাটতি মিটতে পারে। বর্ষার আগমনের দু’মাস পরেও জোরদার বৃষ্টির অভাবে মার খেয়েছে দক্ষিণবঙ্গের চাষ। সব মিলিয়ে ঘাটতি ৪৭% ছুঁয়ে ফেলেছিল। তবে গত দু’টি নিম্নচাপের প্রভাবে কমবেশি বৃষ্টির ফলে ঘাটতি কিছুটা কমেছে। এখন গাঙ্গেয় বঙ্গে বৃষ্টির ঘাটতি ৩৪ শতাংশ। তার উপরে দিন দুয়েক ধরে চলছিল দুঃসহ ভ্যাপসা গরম। ভাদ্রের সূচনায় এ বারের গভীর নিম্নচাপ প্রবল বৃষ্টি নামিয়ে সেই গরম থেকে স্বস্তি দিয়েছে, সেই সঙ্গে হাসি ফুটিয়েছে কৃষকদের মুখেও।
আবহাওয়া দফতর সূত্রের খবর, বৃহস্পতিবার থেকেই উপকূলবর্তী এলাকায় প্রবল বৃষ্টি ও ঝোড়ো হাওয়া বয়ে চলেছে। তার পাশাপাশি প্রবল বৃষ্টি হয়েছে পূর্ব ও পশ্চিম মেদিনীপুর, দুর্গাপুর, ঝাড়গ্রামে। কলকাতাতেও শুক্রবার দিনভর বৃষ্টির পাশাপাশি বয়েছে দমকা হাওয়া। বিকেল-সন্ধ্যার মুখে কলকাতায় নামার সময় সেই ঝোড়ো হাওয়ার মুখে পড়ে বিভিন্ন প্রান্ত থেকে আসা উড়ান। তার মধ্যে পাঁচটি উড়ান শহরে নামতে না-পেরে অন্য শহরে চলে যায়। রাতে পরিস্থিতি কিছুটা স্বাভাবিক হওয়ার পরে সেগুলি কলকাতায় ফিরে আসে।
সর্বশেষ বৃষ্টিতে বেশ কিছু এলাকায় নদনদীর বাঁধ ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছিল। এ বারেও জোরালো বৃষ্টির জেরে কোনও কোনও এলাকা জলমগ্ন হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে। বৃষ্টির অভাবে ফসল নিয়ে চিন্তায় ছিলেন চাষিরা। বৃষ্টিতে সেই আশঙ্কা কিছুটা হলেও কেটেছে। কিন্তু অনেকে বলছেন, এই বৃষ্টিতে চাষে যেমন লাভ হতে পারে, সেই সঙ্গে উপকূলবর্তী এলাকায় কলাবাগান ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে। নিচু এলাকা জলমগ্ন হয়ে নষ্ট হতে পারে আনাজও। ঝোড়ো হাওয়ায় ক্ষতি হতে পারে কাঁচা বাড়িরও।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy