Advertisement
E-Paper

আগাম জামিনের আর্জি রাজীবের, প্রশ্নের মুখে স্ত্রী

গোয়েন্দা-প্রধানের হয়ে এ দিন আগাম জামিনের আবেদন জানান তাঁর আইনজীবী গোপাল হালদার। সিবিআইয়ের আইনজীবী কালীচরণ মিশ্র জানান, রাজীবের আইনজীবীর পাঠানো আগাম জামিনের আর্জির নোটিস তাঁরা পেয়েছেন।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ২১ সেপ্টেম্বর ২০১৯ ০২:৩৩
রাজীব কুমার। ফাইল চিত্র।

রাজীব কুমার। ফাইল চিত্র।

বারাসতের জেলা জজের আদালত আবেদন শোনেইনি। আলিপুরের অতিরিক্ত মুখ্য বিচার বিভাগীয় ম্যাজিস্ট্রেট বৃহস্পতিবার জানিয়ে দিয়েছেন, পরোয়ানা ছাড়াই রাজ্যের গোয়েন্দা-প্রধান রাজীব কুমারকে গ্রেফতার করতে পারবে সিবিআই। এই অবস্থায় গ্রেফতারি এড়াতে শুক্রবার আলিপুর জেলা বিচারকের এজলাসে আগাম জামিন চাইলেন রাজীব। এ দিনই পার্ক স্ট্রিটে গোয়েন্দা-প্রধানের বাড়িতে গিয়ে তাঁর স্ত্রী সঞ্চিতা কুমারের সঙ্গে প্রায় এক ঘণ্টা কথা বলেন সিবিআই অফিসারেরা।

গোয়েন্দা-প্রধানের হয়ে এ দিন আগাম জামিনের আবেদন জানান তাঁর আইনজীবী গোপাল হালদার। সিবিআইয়ের আইনজীবী কালীচরণ মিশ্র জানান, রাজীবের আইনজীবীর পাঠানো আগাম জামিনের আর্জির নোটিস তাঁরা পেয়েছেন। আজ, শনিবার দুপুরে ওই আবেদনের শুনানি হবে বলে জানান আলিপুর দায়রা আদালতের বিশেষ সরকারি আইনজীবী পার্থ মুখোপাধ্যায়।

রাজীব-পত্নী সঞ্চিতাদেবী আয়কর কমিশনার পদের অফিসার। রাজস্থানে নিযুক্ত হলেও তিনি এখন কলকাতায় আছেন। তাঁর সঙ্গে কথা বলার জন্য এ দিন এক মহিলা অফিসারকে নিয়ে গিয়েছিলেন সিবিআই-কর্তারা। রাজীবের সম্পর্কে আরও তথ্য পেতে তাঁর ঘনিষ্ঠ কয়েক জন সরকারি কর্মী-অফিসারকে নোটিস দিয়ে ডেকে পাঠিয়েছে সিবিআই। বৃহস্পতিবার মাঝরাত থেকে রাজীবের খোঁজে বেনজির তল্লাশি চালাচ্ছে তারা।

সিবিআইয়ের একাংশ জানাচ্ছে, বাহিনীতে রাজীব খুব জনপ্রিয়। কলকাতা ও রাজ্য পুলিশের বেশ কিছু যুবক অফিসার তাঁর অনুগত। তাঁদেরই অনেকে ছুটি নিয়ে রাজীবকে ঘিরে আছেন। গোয়েন্দা-প্রধান কলকাতার উপান্তে কোনও রিসর্টে বা শহরেরই কোনও হোটেলে লুকিয়ে থাকলে সেখানে সাদা পোশাকের ওই সব অনুগত অফিসারেরও থাকার কথা।

কিছু সিবিআই-কর্তার যুক্তি, সে-ক্ষেত্রে আশপাশের মানুষের তা চোখে পড়ে যাওয়ার কথা। সেই খবরও ছড়িয়ে পড়তে বেশি সময় লাগবে না। সেই তুলনায় রাজীবের পক্ষে পুলিশের নিজস্ব পরিকাঠামোর ভিতরে ‘গা-ঢাকা’ দিয়ে থাকাটা অনেক বেশি সুবিধাজনক বলে মন্তব্য করেছেন তদন্তকারীরা। তাঁদের অনেকেরই দৃঢ় ধারণা, নিজের বাসভবন ৩৪ নম্বর পার্ক স্ট্রিটের চৌহদ্দি বা কোনও পুলিশ লাইনে রয়েছেন রাজীব। তাই বৃহস্পতিবারের পরে এ দিনও ওই ঠিকানায় যান তদন্তকারীরা। রাজীবের স্ত্রীকে প্রশ্ন করেন। কিন্তু গোয়েন্দা-প্রধানকে পাওয়া যায়নি।

রাজীব কুমারের খোঁজে অ্যাডিশনাল এসপি এন কে পাঠকের (বাঁ দিকে)
নেতৃত্বে দক্ষিণ ২৪ পরগনার বিষ্ণুপুরের একটি রিসর্টে সিবিআই হানা। শুক্রবার। নিজস্ব চিত্র

বৃহস্পতিবার রাতে দক্ষিণ ২৪ পরগনার বিষ্ণুপুরের একটি এবং রায়চকের একটি রিসর্টে হানা দেয় সিবিআই। পাওয়া যায়নি রাজীবকে। শুক্রবার সকালে ফের বিষ্ণুপুরের ওই রিসর্টে গিয়ে কর্তাদের সঙ্গে কথা বলেন তদন্তকারীরা। রিসর্টের অতিথিদের নামের তালিকা এবং সিসি ক্যামেরার ফুটেজও পরীক্ষা করা হয়।

রায়চক ও বিষ্ণুপুরের ওই দু’টি রিসর্টে রাজ্যের বহু পুলিশকর্তার নিয়মিত যাতায়াত ছিল বলে জেনেছে সিবিআই। তাদের দাবি, বিষ্ণুপুরের রিসর্টে রাজীবও যেতেন। গত সাত দিনে সেখানে নিরাপত্তা বাড়িয়ে দেওয়া হয়েছিল। গোয়েন্দা-প্রধানের জন্যই এই বাড়তি নিরাপত্তা বলে মনে করছে সিবিআই। তবে রিসর্টের দাবি, রাজীব সেখানে যাননি।

লেক টাউনের একটি রিসর্ট এবং ক্যামাক স্ট্রিটের একটি বাড়িতেও এ দিন হানা দেয় সিবিআই। রাজীবের মোবাইল এখনও বন্ধ। এক সিবিআই-কর্তা জানান, রাজীব গোপন ডেরা থেকে নিয়মিত ঘনিষ্ঠ পুলিশকর্তা ও আইনজীবীর সঙ্গে যোগাযোগ রাখছেন। মামলার বিষয়ে আলোচনাও করছেন। ওই সব পুলিশকর্তা ও আইনজীবীকে শনাক্ত করা হয়েছে।

Rajeev Kumar Kolkata Police CBI
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy