প্রতীকী ছবি।
এগারো বছরের মেয়েটি যখন নজরে পড়ে এক গ্রামবাসীর, তখন খালের জল তার মাথার চুল ছুঁয়েছে। ভেসে যেতে পারে ভেবে তখনই মেয়েটিকে টেনে খানিকটা সরিয়ে দেন তিনি। যন্ত্রণায় কাতরাচ্ছিল অচৈতন্য বালিকা। নগ্ন শরীরটা রক্ত আর কাদায় মাখামাখি। জলের ধারে কাঁটাঝোপের মধ্যে তাকে ফেলে পালিয়েছিল নির্যাতনকারী। সোমবার এলাকায় তদন্তে এসে প্রত্যক্ষর্শীদের সঙ্গে কথা বলে এমনটাই জানতে পারছেন পুলিশকর্তারা।
বৃহস্পতিবার রাত থেকে শুক্রবার ভোর পর্যন্ত প্রায় ১৭ ঘণ্টা এ ভাবেই খোলা আকাশের নীচে পড়েছিল মেয়েটি। স্থানীয় বাসিন্দারা তার গায়ে লেগে থাকা রক্ত, কাদা ধুয়ে দেন। খবর যায় পুলিশের কাছে।
সোমবার আইজি (প্রেসিডেন্সি রেঞ্জ) তন্ময় রায়চৌধুরী, এডিজি (দক্ষিণবঙ্গ) সিদ্ধিনাথ গুপ্ত, বসিরহাট জেলা পুলিশ সুপার জবি থমাস কে-সহ পুলিশের পদস্থ আধিকারিকেরা ঘটনাস্থলে আসেন। নির্যাতন-কাণ্ডে মূল অভিযুক্ত বছর কুড়ির যুবক এবং তার প্রেমিকা আপাতত পুলিশি হেফাজতে। তরুণী বিবাহিতা। ওই যুবকের সঙ্গে প্রেমের সম্পর্ক অনেক দিনের। পুলিশ জানতে পেরেছে, ওই তরুণী যুবককে বিয়ে করতে চেয়েছিল। ছেলেটি রাজি হয়নি। তরুণী চেয়েছিল, নিজের নাবালিকা আত্মীয়াকে প্রেমিকের কাছে পাঠাবে। ছেলেটি নির্যাতন চালালে সে কথা পাঁচকান করার ভয় দেখিয়ে ছেলেটিকে বিয়েতে রাজি করাবে সে। তদন্তে উঠে আসা এ তথ্যও বিস্মিত করছে পুলিশকে। তাঁরা জানতে পেরেছেন, বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় নির্যাতনের সময়ে মেয়েটি চিৎকার করে। ছেলেটি ভয় পেয়ে গলা টিপে ধরে। মেয়েটি নেতিয়ে পড়ে। নির্যাতনকারী ধরে নেয়, সে মারা গিয়েছে। এর পরে রক্তাক্ত অবস্থায় মেয়েটিকে খালের পাশে কাঁটাঝোপের মধ্যে ফেলে পালায়। খালে জোয়ারের জল বাড়লে সেই তোড়ে দেহ ভেসে যাবে বলে ভেবেছিল সে।
নির্যাতিতা এখনও আরজিকরে চিকিৎসাধীন। সোমবার চিকিৎসকেরা জানান, এখনও বিপদ কাটেনি। তবে অবস্থা স্থিতিশীল। একটি মেডিক্যাল বোর্ড মেয়েটির দেখভাল করছে। স্বাস্থ্য ভবন সূত্রের খবর, নাবালিকার শারীরিক অবস্থার যাবতীয় তথ্য নিয়মিত সেখানে পাঠানোর নির্দেশ দেওয়া হয়েছে হাসপাতালকে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy