Advertisement
E-Paper

কল্যাণকে ‘হুমকি’ দিয়ে বিপাকে, আধ ঘণ্টার মধ্যে হাই কোর্টে আবার ক্ষমা চাইলেন শোভন-জায়া রত্না

শুক্রবার হাই কোর্টের নির্দেশেই আদালতে ক্ষমা চেয়েছিলেন রত্না। তবে প্রথমে তাঁর ক্ষমা চাওয়ার ধরনে খুশি হননি শোভনের আর এক আইনজীবী জয়দীপ কর। তিনি বলেন, “রত্নাকে আন্তরিক ভাবে ক্ষমা চাইতে হবে।

আনন্দবাজার অনলাইন সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ২৮ ফেব্রুয়ারি ২০২৫ ১৪:২৮
রত্না চট্টোপাধ্যায়।

রত্না চট্টোপাধ্যায়। —ফাইল ছবি।

শোভন চট্টোপাধ্যায়ের আইনজীবী কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায়কে হুমকি দেওয়ার অভিযোগ উঠেছিল রত্না চট্টোপাধ্যায়ের বিরুদ্ধে। কলকাতা হাই কোর্টে এই মামলার শুনানি ছিল শুক্রবার। আদালতে মাত্র আধ ঘণ্টার ব্যবধানে দু’বার ক্ষমা চাইতে হল রত্নাকে। ক্ষমা চেয়ে শোভন-জায়া যে হলফনামা জমা দিয়েছেন, তার খসড়া জমা দেওয়া হয়েছে হাই কোর্টে।

শুক্রবার হাই কোর্টের নির্দেশেই দুপুর ১টায় আদালতে ক্ষমা চেয়েছিলেন রত্না। তবে তাঁর ক্ষমা চাওয়ার ধরনে খুশি হননি শোভনের আর এক আইনজীবী জয়দীপ কর। আদালতে তিনি বলেন, “রত্নাকে আন্তরিক ভাবে ক্ষমা চাইতে হবে। শুধু ক্ষমা চাওয়ার জন্য ক্ষমা চাওয়া নয়।” আধ ঘণ্টা পরে ফের এই মামলার শুনানি হবে বলে জানায় আদালত। এজলাসে রত্নার আইনজীবী জানিয়েছিলেন, তিনি তাঁর মক্কেলকে ক্ষমা চাওয়ার ভাষা পরিবর্তন করতে বলবেন। সেই মতোই আধ ঘণ্টা পরে ফের ক্ষমা চান রত্না।

বিচারপতি হিরণ্ময় ভট্টাচার্য বলেন, “কোর্টের ভিতরে দু’পক্ষের আইনজীবীরা সওয়ালের সময় অনেক কথাই বলেন। কিন্তু সেটা নিয়ে আদালতের বাইরে জলঘোলা করা কাম্য নয়।” বিচারপতি জানান, তিনি আশা করেন এই সমস্যার সমাধান নিজেরাই করতে পারবে দু’পক্ষ। এতে আর আদালতের আলাদা করে মামলা শুনতে হবে না।

রত্নার বিরুদ্ধে হুমকি দেওয়ার অভিযোগ তুলে কলকাতা হাই কোর্টেরও দৃষ্টি আকর্ষণ করেছিলেন আইনজীবী-সাংসদ কল্যাণ। বিচারপতি হিরণ্ময় ভট্টাচার্য এই বিষয়ে দুপুর ১টার মধ্যে রত্নাকে তাঁর বক্তব্য জানাতে বলেন। রত্নার আইনজীবী আদালতের কাছে আর্জি জানিয়ে বলেন, “দু’পক্ষকে নির্দেশ দেওয়া হোক, প্রকাশ্যে বা সংবাদমাধ্যমে যেন কোনও মন্তব্য না করেন।” বিচারপতি বলেন, “ওই বিষয়ে দু’দিন থেমে যেতে বলেছিলাম। আপনারা কেন কোনও অবস্থান জানালেন না? এটা কি আশা করতে পারি না?”

শোভনের আইনজীবী জয়দীপ কর রত্নার বিরুদ্ধে অভিযোগ জানিয়ে এজলাসে বলেন, “একটি সংবাদমাধ্যমে উনি বলেছেন, ‘আমি তো কল্যাণদার কথাতেই শোভনকে বিবাহবিচ্ছেদ দিচ্ছি না। হাই কোর্টে এক ঘণ্টা ধরে কত পরামর্শ দিয়েছেন। বিবাহবিচ্ছেদ দিবি না, লড়াই কর, আমি তোর পাশে আছি।’ এই ধরনের মন্তব্য আদালত অবমাননা। রত্না আরও বলেছেন, ‘কল্যাণ পাল্টি খাচ্ছেন, পাল্টি খেয়ে গেলেন...’— এই মন্তব্য ব্যবহার কি ঠিক? এটা কোনও সমালোচনা নয়, ব্যক্তিগত ভাবে আক্রমণ করা হয়েছে।”

তার পরেই রত্নার আইনজীবীর উদ্দেশে বিচারপতি বলেন, “অযথা এই ধরনের সমস্যা তৈরি করেছেন।” রত্নার আইনজীবী পাল্টা কল্যাণের বিরুদ্ধে অভিযোগ করে বলেন, “আমার মক্কেলের বাবা ‘কালারফুল’, এমন মন্তব্য করেছেন। কোনও হুমকি দেওয়া হলে অভিযোগ করা হোক।” তখনই বিচারপতি রত্নার বক্তব্য জানতে চান। জানান, এই পরিস্থিতিতে মূল আবেদনের উপর প্রভাব পড়বে। আদালতের নির্দেশে রত্না ক্ষমা চাইলেও সেই ক্ষমার ধরনে খুশি হলেন না শোভনের আইনজীবী।

২০১৭ সালে আলিপুর আদালতে বিবাহবিচ্ছেদের মামলা করেছিলেন শোভন। কলকাতার প্রাক্তন মেয়রের পক্ষে যাঁরা সাক্ষী ছিলেন, তাঁদের সাক্ষ্যগ্রহণ শেষ হয়েছে। রত্নার পক্ষেও চার জন সাক্ষ্য দিয়েছেন। রত্না নিম্ন আদালতে আর্জি জানিয়েছিলেন, তাঁর পক্ষে আরও কিছু সাক্ষী রয়েছেন। তাঁদেরও সাক্ষ্য নেওয়া হোক। কিন্তু আলিপুর আদালত তা খারিজ করে শুনানি শুরুর নির্দেশ দিয়েছিল। সেই নির্দেশকে চ্যালেঞ্জ করেই হাই কোর্টে মামলা করেন বেহালা পূর্বের তৃণমূল বিধায়ক রত্না। গত শুক্রবার সেই মামলার শুনানিতেই শোভনের হয়ে সওয়াল করেন তৃণমূল সাংসদ কল্যাণ। শোভনের হয়ে কল্যাণের সওয়াল করা যে রত্নার পছন্দ হয়নি, তা গোপন করেননি শাসকদলের বিধায়ক। কল্যাণের ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন তুলে রত্না সংবাদমাধ্যমে মুখ খুলেছিলেন। সেই বক্তব্যকেই ‘হুমকি’ বলে উল্লেখ করে কল্যাণ সোমবার আদালতের দ্বারস্থ হন।

Sovan Chatterjee Ratna Chatterjee Kalyan Banerjee Calcutta High Court
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy