Advertisement
০৭ মে ২০২৪
সারদা কাণ্ডের তদন্ত

আরবিআই, সেবি কর্তারা কাঠগড়ায়

দেশ জুড়ে সারদা, রোজ ভ্যালির মতো বহু বেআইনি অর্থলগ্নি সংস্থার (চলতি ভাষায় যাদের চিট ফান্ড বলা হয়) কীর্তিকলাপ ফাঁস হওয়ার পরে আরবিআই, সেবি এবং আরওসি-র ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন ওঠে।

সুনন্দ ঘোষ
কলকাতা শেষ আপডেট: ০৭ অক্টোবর ২০১৭ ০৪:৩৫
Share: Save:

সারদা-কর্তা সুদীপ্ত সেনের সঙ্গে ষড়যন্ত্রে তিনটি আর্থিক নিয়ন্ত্রক সংস্থার এক শ্রেণির কর্তাব্যক্তিও যুক্ত— প্রাথমিক তদন্তের পরে এমনটাই দাবি সিবিআইয়ের। তদন্তকারীদের বক্তব্য, রিজার্ভ ব্যাঙ্ক অব ইন্ডিয়া (আরবিআই), সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ বোর্ড অব ইন্ডিয়া (সেবি) এবং রেজিস্ট্রার অব কোম্পানিজ (আরওসি)-এর কিছু কর্তা সারদার আর্থিক কেলেঙ্কারি রদে যে ভূমিকা পালন করার কথা ছিল তা তো করেনইনি, বরং সংস্থাটিকে মদত দিয়েছেন। গত তিন-চার মাস ধরে এই তিনটি সংস্থার কয়েক জন কর্তার বিরুদ্ধে তদন্ত করে সম্প্রতি সেই রিপোর্ট পাঠানো হয়েছে দিল্লিতে। ওই সব অভিযুক্ত কর্তার বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে দিল্লির অনুমতি চেয়েছে সিবিআই।

দেশ জুড়ে সারদা, রোজ ভ্যালির মতো বহু বেআইনি অর্থলগ্নি সংস্থার (চলতি ভাষায় যাদের চিট ফান্ড বলা হয়) কীর্তিকলাপ ফাঁস হওয়ার পরে আরবিআই, সেবি এবং আরওসি-র ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন ওঠে। কারণ, কোনও সংস্থার বেআইনি আর্থিক কার্যকলাপ নিয়ন্ত্রণের মূল দায়িত্ব এই তিন সংস্থারই। চিট ফান্ড সংক্রান্ত মামলায় সুপ্রিম কোর্টও বলেছে, আর্থিক নিয়ন্ত্রক সংস্থাগুলির একাংশের সমর্থন ছাড়া এত বড় আর্থিক দুর্নীতি সম্ভব নয়। চিট ফান্ডগুলি যখন মানুষকে ঠকিয়ে, ভুল বুঝিয়ে বাজার থেকে কোটি কোটি টাকা তুলছিল, তখন ওই সংস্থাগুলি কোথায় ছিল, সে প্রশ্নও তোলে শীর্ষ আদালত। তারাই সিবিআই-কে বিষয়টি খতিয়ে দেখতে বলে।

আরও পড়ুন: নিরাপত্তার ঝুঁকি দেখছে ঢাকা-দিল্লি

নিয়ম অনুযায়ী, কোনও সংস্থা যদি বাজার থেকে টাকা তুলে পরে তা সুদ-সহ ফেরত দিতে চায়, তা হলে তাকে আরবিআই, সেবি-র অনুমতি নিতে হয়। ব্যাঙ্কের মতো, অথচ, দেশের ২৭৩টি চিটফান্ডের বিরুদ্ধে তদন্তে নেমে সিবিআই, ইডি জানতে পারে এই ভাবে টাকা তোলার জন্য অনুমতি নেয়নি তারা। যদিও চিট ফান্ডগুলি যে বাজার থেকে বেআইনি ভাবে টাকা তুলছে, সে কথা আর্থিক নিয়ন্ত্রক সংস্থাগুলির ওই কর্তাব্যক্তিরা জানতেন। শুধু তা-ই নয়,

সারদা কেলেঙ্কারি প্রকাশ্যে আসার তিন বছর আগেই, ২০১১ সালে এই ধরনের চিট ফান্ড সম্পর্কে সতর্ক করে রাজ্য গোয়েন্দা পুলিশ (সিআইডি) চিঠি পাঠায় আরবিআই এবং সেবি-কে। কিন্তু সেই সতর্কবার্তায় কর্ণপাত করা হয়নি বলেই সিবিআই জানিয়েছে।

উল্টে বাজার থেকে বেআইনি ভাবে টাকা তোলার সময়ে যাতে কোনও বাধা না আসে, সে জন্য বিভিন্ন সময়ে আরবিআই, সেবি, আরওসি-র কর্তাদের সঙ্গে সুদীপ্ত বৈঠক করেন বলে সিবিআইয়ের দাবি। সুদীপ্তর সঙ্গে আরবিআই ও সেবি-র মধ্যে মধ্যস্থতার অভিযোগে দু’তিনজন প্রভাবশালীকে গ্রেফতারও করেছিল সিবিআই।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

RBI SEBI Saradha Chit Fund
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE