E-Paper

রাজ্যের সম্মতি না থাকাতেই বিচার শুরুতে কি বিলম্ব

সিবিআই নিম্ন আদালতে ৮ জানুয়ারি নিয়োগ দুর্নীতিতে গ্রুপ-সি, গ্রুপ-ডি, একাদশ-দ্বাদশ ও নবম-দশমের মামলার চার্জশিট জমা দিয়েছে। কলকাতা হাই কোর্টের ডিভিশন বেঞ্চে চার মামলার চূড়ান্ত রিপোর্টও জমা পড়েছে।

শুভাশিস ঘটক

শেষ আপডেট: ১৬ জানুয়ারি ২০২৪ ০৬:৫১
court

—প্রতীকী ছবি।

নিয়োগ দুর্নীতির মামলায় এসএসসি-র প্রাক্তন উপদেষ্টা শান্তিপ্রসাদ সিংহ, প্রাক্তন সচিব সুবীরেশ ভট্টাচার্য, প্রাক্তন সচিব অশোক সাহা, মধ্যশিক্ষা পর্ষদের অপসারিত সভাপতি কল্যাণময় গঙ্গোপাধ্যায় এবং প্রাক্তন শিক্ষামন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের ব্যক্তিগত সচিব সুকান্ত আচার্যকে অভিযুক্ত হিসেবে চিহ্নিত করে চার্জশিট জমা দিয়েছে সিবিআই। কিন্তু নিম্ন আদালতের বিচারক জানিয়েছেন, চারটি মামলায় একাধিক সরকারি কর্মী ও কর্তার নাম অভিযুক্তের তালিকায় থাকলেও তাঁদের গ্রেফতারের ক্ষেত্রে অনুমোদন নেওয়া হয়নি রাজ্য সরকারের। বিচার প্রক্রিয়া শুরুর জন্য যা জরুরি। তাই ওই চার মামলার চার্জশিট গ্রহণ করা যাচ্ছে না। অভিযোগ উঠছে, বিচার শুরুতে বিলম্ব করাতেই রাজ্যের এই গড়িমসি।

এ বিষয়ে সিবিআইয়ের দাবি, রাজ্যের শিক্ষা দফতরকে গত এক বছরে তারা বেশ কয়েক বার ই-মেল ও চিঠি পাঠিয়ে সংশ্লিষ্ট অনুমতি চাইলেও, তা পাওয়া যায়নি। তা থেকেই এই আইনি জটিলতা। বিষয়টি লিখিত ভাবে নিম্ন আদালত এবং হাই কোর্টকে জানানো হয়েছে বলেও তাদের সূত্রে দাবি। রাজ্য প্রশাসনিক সূত্রের অবশ্য বক্তব্য, সাধারণত পুলিশ কোনও সরকারি কর্মীর বিরুদ্ধে পদক্ষেপ করতে চাইলে, সরকারের অনুমতি নিতে হয়। কিন্তু সিবিআইয়ের এই তদন্ত হচ্ছে আদালতের নির্দেশ এবং নজরদারিতে। ফলে তারা কোনও পদক্ষেপ করতে গেলে আদালতের অনুমতিতেই তা করতে পারে। এ ক্ষেত্রে সরকারের অনুমতির প্রয়োজন থাকার কথা নয়।

এই আইনি জটিলতা প্রসঙ্গে আইনজীবী বিকাশ ভট্টাচার্য বলেন, ‘‘আদালতের নির্দেশে তদন্ত হলেও সরকারি কর্মীদের বিরুদ্ধে বিচার প্রক্রিয়া শুরু করতে রাজ্যের অনুমোদন প্রয়োজন। মামলায় দেরি করানোর জন্য এ সব বলা হচ্ছে।’’ পার্থের আইনজীবী বিপ্লব গোস্বামীর বক্তব্য, ‘‘পার্থের গ্রেফতারিতে রাজ্যপালের অনুমোদন রয়েছে। তার জন্য আর (সরকারি) অনুমতি লাগবে না। কিন্তু বাকিদের ক্ষেত্রে সরকারি অনুমোদন না পাওয়ায় বিচার প্রক্রিয়া শুরু নিয়ে ধোঁয়াশা সৃষ্টি হয়েছে। এতে ভুক্তভোগী হবেন পার্থ।’’

সিবিআই নিম্ন আদালতে ৮ জানুয়ারি নিয়োগ দুর্নীতিতে গ্রুপ-সি, গ্রুপ-ডি, একাদশ-দ্বাদশ ও নবম-দশমের মামলার চার্জশিট জমা দিয়েছে। কলকাতা হাই কোর্টের ডিভিশন বেঞ্চে চার মামলার চূড়ান্ত রিপোর্টও জমা পড়েছে। ১২ জানুয়ারি নিম্ন আদালতে প্রাথমিকের মামলারও চূড়ান্ত চার্জশিট জমা দিয়েছে সিবিআই। প্রাথমিকের মামলায় এখনও পর্যন্ত কোনও সরকারি কর্তা বা কর্মী অভিযুক্ত নন। সিবিআইয়ের সূত্রে দাবি, প্রাথমিক ছাড়া বাকি
চার মামলার চার্জশিট নিম্ন আদালত গ্রহণ করেনি।

আইনজীবীদের একাংশের মতে, নিম্ন আদালত চার্জশিট গ্রহণ না করায় মামলার চার্জ গঠন হবে না। যা বিচার প্রক্রিয়ার প্রথম ধাপ। আদালত সূত্রে খবর, শান্তিপ্রসাদ, সুবীরেশ, কল্যাণময় ও অশোক জেল হেফাজতে রয়েছেন। সম্প্রতি গ্রুপ সি-র মামলায় সুকান্তকে অভিযুক্ত করে চার্জশিট জমা পড়লেও, তাঁকে গ্রেফতার করা হয়নি। আইনজীবীদের একাংশের দাবি, গ্রেফতার না হওয়া সত্ত্বেও চার্জশিটে কাউকে অভিযুক্ত করা হলে, কোর্ট সমন জারি করে। তদন্তকারী সংস্থা দরকারে তাঁকে হেফাজতে নেওয়ার আবেদন করতে পারে। কিন্তু নিম্ন আদালত চার্জশিটই গ্রহণ না করায় এই মুহূর্তে সমন করা যাচ্ছে না সুকান্তকে।

(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)

Recruitment Case CBI Calcutta High Court

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy