Advertisement
০৫ মে ২০২৪
Recruitment Scam

কুন্তলের থেকে ধার নিয়েছিলেন, দাবি সোমার

বুধবার, মুখ খুললেন তৃতীয় নারী, সোমা চক্রবর্তী। তাঁর মূল দাবি, নিয়োগ কাণ্ডে অভিযুক্ত কুন্তল ঘোষের কাছ থেকে তিনি ব্যবসার কাজে ৫০ লক্ষ টাকা ধার নিয়েছিলেন মাত্র।

Picture of Kuntal Ghosh and Soma Chakraborty.

কুন্তল ঘোষ এবং সোমা চক্রবর্তী। ফাইল চিত্র।

নিজস্ব সংবাদদাতা
কলকাতা শেষ আপডেট: ০৯ মার্চ ২০২৩ ০৬:১৩
Share: Save:

এক জন জেলে। তিনি অর্পিতা মুখোপাধ্যায়। তাঁর ফ্ল্যাট থেকে পাওয়া গিয়েছিল নগদ টাকা ও সোনা।

এক ‘রহস্যময়ী’ নারীর কথা ছড়িয়ে পড়লে কয়েক দিন অজ্ঞাতবাসের পরে তিনি মুখ খুলেছেন। দাবি করেছেন, নিয়োগ দুর্নীতি নিয়ে তিনি একেবারেই অন্ধকারে। তিনি হৈমন্তী গঙ্গোপাধ্যায়।

বুধবার, মুখ খুললেন তৃতীয় নারী, সোমা চক্রবর্তী। তাঁর মূল দাবি, নিয়োগ কাণ্ডে অভিযুক্ত কুন্তল ঘোষের কাছ থেকে তিনি ব্যবসার কাজে ৫০ লক্ষ টাকা ধার নিয়েছিলেন মাত্র। এর বাইরে নিয়োগ সংক্রান্ত বিষয়ে তাঁর কিছুই জানা নেই। আদতে বিউটি পার্লার ব্যবসায়ী সোমাকে ইতিমধ্যেই এক বার জিজ্ঞাসাবাদ করেছে এনফোর্সমেন্ট ডিরেক্টরেট (ইডি)। আগামী শুক্রবার আবার তাঁর ডাক পড়েছে।

নিয়োগ দুর্নীতি কাণ্ডে হুগলির তৃণমূল যুব-নেতা কুন্তল এখন জেলে। সম্প্রতি আদালত থেকে জেলের পথে পর পর দু’দিন হৈমন্তী ও সোমার কথা কুন্তলই বলেছেন সংবাদমাধ্যমের কাছে। এ দিন সংবাদমাধ্যমের কাছেই সোমার দাবি, তাঁর অনেক দিনের ব্যবসা। মাঝেমধ্যেই টাকা নিয়ে সমস্যা হয়। ব্যাঙ্ক থেকে ঋণ নিয়েছেন। তাঁর কথায়, “কুন্তলের সঙ্গে আমার বন্ধুত্ব রয়েছে। একটু আর্থিক সমস্যায় পড়েছিলাম। কুন্তল আমাকে প্রায় ৫০ লক্ষ টাকা ধার দিয়েছিল। ওই টাকা আমার ব্যবসাতেই বিনিয়োগ হয়েছে।’’ করোনার কারণে, তিনি ওই টাকা শোধ করে উঠতে পারেননি বলেও দাবি করেছেন। জানিয়েছেন, বেশ কিছু দিন তাঁর সঙ্গে কুন্তলের যোগাযোগ নেই।

সোমার আরও দাবি, কুন্তলের সঙ্গে তাঁর পরিচয় ২০১৭ সালে। তার কয়েক মাস পরেই তিন-চার দফায় কুন্তল তাঁকে ৫০ লক্ষ টাকা দিয়েছিলেন। ওই টাকাটা তাঁর ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টেই জমা হয়েছে। ওই অ্যাকাউন্ট থেকেই কর্মচারীদের বেতন এবং প্রসাধনী সামগ্রীর দাম মেটানো হয়েছিল।

ইডি-রও দাবি, সোমা এর আগে তাদের জানিয়েছেন, কুন্তলের কাছ থেকে ব্যবসার কারণেই টাকা ধার নিয়েছিলেন। ইডি-র একটি সূত্র অবশ্য দাবি করেছে, ২০১৭ নয়, কুন্তলের সঙ্গে সোমার পরিচয় ২০১৫ সালে। প্রথম দু’বছর দু’জনের মধ্যে কোনও আর্থিক লেনদেন ছিল না। তদন্তকারীদের কথায়, কুন্তল ২০১৭ থেকে নিয়োগ দুর্নীতিতে টাকা তোলা শুরু করেছিলেন বলে তদন্ত উঠে এসেছে। সোমার সঙ্গে তাঁর আর্থিক লেনদেন শুরু হয়েছে ২০১৭ সালের পর থেকেই।

এখানেই তদন্তকারীদের প্রশ্ন, তা হলে কি দুর্নীতির টাকাই সোমাকে দিয়েছিলেন কুন্তল? ‘প্রিভেনশন অব মানি লন্ডারিং’ আইনে দুর্নীতির টাকা যাঁর কাছে যে কারণেই যাক না কেন, তিনি তদন্তের আওতায় চলে আসবেন। ইডি কর্তাদের দাবি, কুন্তলের কাছ থেকে এত বড় অঙ্কের টাকা ধার নেওয়ার সময়ে সোমা যদি কোনও চুক্তিপত্র করে থাকেন, তা হলে সেটা সোমার পক্ষে যাবে। তবে, এখনও পর্যন্ত সে রকম কোনও নথি সোমা দেখাতে পারেননি বলেই ইডি সূত্রের খবর।

তদন্তকারীদের দাবি, শুধু সোমা নয়, কুন্তলের অ্যাকাউন্ট থেকে বহু মহিলার ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টে লক্ষ লক্ষ টাকা পাচার হয়েছে বলে তাঁদের হাতে তথ্য এসেছে। ২০১৭ সালে কুন্তলের অ্যাকাউন্টে প্রায় সাড়ে ছ’কোটি টাকা জমা হওয়ার কয়েক ঘণ্টার মধ্যেই তা ছোট ছোট অঙ্কে ৫০টি বেশি অ্যাকাউন্টে স্থানান্তরিত হয়। ইডি সূত্রের খবর, এই অ্যাকাউন্টের মালিকদের তালিকা করে জিজ্ঞাসাবাদ শুরু হয়েছে। কোন খাতে তাঁরা কুন্তলের কাছ থেকে টাকা নিয়েছিলেন, তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে। কয়েক জন দালালেরও হদিস পাওয়া গিয়েছে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Recruitment Scam Kuntal Ghosh Soma Chakraborty
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE