পঞ্চায়েতে আর্থিক দুর্নীতি ঠেকাতে পদাধিকারীদের ক্ষমতা নিয়ন্ত্রণের কথা বিবেচনা করছে রাজ্য সরকার। সেই সঙ্গে সরকারি আধিকারিকদের ক্ষমতা বৃদ্ধির কথা ভাবা হয়েছে। তিন স্তরের সব প্রকল্প তৈরি ও রূপায়ণে এই ‘পাহারা’র ব্যবস্থা করতে চাইছে নবান্ন। সেই সঙ্গে সাংগঠনিক স্তরেও কড়া নজরদারির নির্দিষ্ট কথা আলোচনা হয়েছে শাসকদলের শীর্ষস্তরে।
পঞ্চায়েত ব্যবস্থার তিন স্তরেই সরকারি বরাদ্দের সর্বাধিক ব্যবহার নিশ্চিত করতে চাইছে রাজ্য সরকার। যে প্রকল্পের জন্য বরাদ্দের ক্ষেত্রেই অনিয়ম ও তছরূপ বন্ধ করতে দল ও সরকারের শীর্ষস্থানীয়দের কাছে এই মনোভাবই স্পষ্ট করেছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। এ ব্যাপারে দল ও সরকারের ভূমিকাও নির্দিষ্ট করতে চান তিনি। দলনেত্রীর এই মনোভাব জানার পরেই ঠিক কী ভাবে এই কাজ হবে তা নিয়ে আলোচনা হয়েছে। দলীয় সূত্রে জানা গিয়েছে। নতুন বোর্ড কাজ শুরুর আগেই দলের নির্বাচিত তিন স্তরের পদাধিকারীদের কাছে এ ব্যাপারে নির্দেশিকা পাঠানো হবে। দলের এক শীর্ষনেতার কথায়, ‘‘ছিদ্র বন্ধ করতে না পারলে সরকারি অর্থ জলে যাবে। যেভাবেই হোক, সরকার বা দল—এটাকে আমাদের স্লোগানের মতো নিতে হবে।’’
২০০৮ সালে গ্রামোন্নয়নের এই কাঠামোর অনেকটাই তৃণমূলের হাতে এসেছিল। ক্ষমতায় আসার পরে দু’টি নির্বাচনে প্রায় একচ্ছত্র ক্ষমতা তাদের। এই অবস্থায় কাজ যেমন হয়েছে তেমনই আর্থিক ‘অনিয়ম’ও নজরে এসেছে দলের। বিরোধীদের হাতে থাকা পঞ্চায়েতেও এই দোষ দেখা গেলেও দলের অনিয়ম নিয়ে চিন্তিত তৃণমূল নেতৃত্ব। দলের এক শীর্ষনেতার কথায়, ‘‘এখন সব জেলা পরিষদ ও সিংহভাগ পঞ্চায়েত সমিতি এবং বেশিরভাগ পঞ্চায়েত আমাদের হাতে। তাই এই দোষ দূর করার ক্ষেত্রে আমাদের রাজনৈতিক ও প্রশাসনিক দায়িত্ব বেশি।’’ তাই পঞ্চায়েত ও সমিতি স্তরে বিডিও ও সমস্তরের আধিকারিকদের ক্ষমতা বাড়ানোর কথা ভাবা হয়েছে। প্রকল্প তৈরি ও রূপায়ণ—দুই ক্ষেত্রেই তাঁদের সক্রিয়তা ও তদারকি
আবশ্যিক করতে চাইছে শাসক শিবির।
এ বারের পঞ্চায়েত নির্বাচনের পর এই অনিয়ম ঠেকাতে বেশি নজরদারির প্রয়োজন বলেই মনে করছে তৃণমূল। কারণ এবার তিন স্তরেই বড় সংখ্যায় বোর্ড চলবে বিরোধীহীন অবস্থায়। সেক্ষেত্রে বোর্ডগুলির পদাধিকারীদের বিচ্যুতির সম্ভাবনাও থাকবে।
তাই নতুন বোর্ড কাজ শুরুর আগেই শাসনের বাতাবরণ তৈরির পাশাপাশি প্রয়োজনে ‘হস্তক্ষেপে’র প্রস্তুতিও রাখছেন শাসক
শিবিরের কর্তারা।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy