Advertisement
E-Paper

সাড়ে ৩০০ বছরের ‘জমিদারি রীতি’ বদলে গেল! গীধেশ্বরের মন্দিরে শিবের পুজো দিলেন ‘দাসেরা’

বুধবার কড়া পুলিশি পাহারায় পুজো দিলেন দাসপাড়ার বাসিন্দারা। দীর্ঘ বৈঠক-আলোচনার পর মঙ্গলবারই স্থির হয়েছিল, গীধগ্রামের গীধেশ্বর মন্দিরে দাসপাড়ার বাসিন্দারা পুজো দিতে পারবেন।

Residents of Daspara in Gidhagram, Purba Bardhaman, offered prayers at the Shiva temple

অবশেষে শিবের পুজো দিলেন দাসেরা। —নিজস্ব চিত্র।

আনন্দবাজার ডট কম সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ১২ মার্চ ২০২৫ ২০:১৫
Share
Save

শিব মন্দিরে পুজো দেওয়ায় অবশেষে বিধিনিষেধের অবসান পূর্ব বর্ধমানের গীধগ্রামে। বুধবার কড়া পুলিশি পাহারায় পুজো দিলেন দাসপাড়ার বাসিন্দারা।

দীর্ঘ বৈঠক-আলোচনার পর মঙ্গলবারই স্থির হয়েছিল, গীধগ্রামের গীধেশ্বর মন্দিরে দাসপাড়ার বাসিন্দারা পুজো দিতে পারবেন। সেই মতোই বুধবার লক্ষ্মী দাস,মমতা দাস, পূজা দাস-সহ মোট পাঁচ জন পুজোর ডালি মাথায় করে গীধেশ্বর মন্দিরে পুজো দিতে যান। প্রথামাফিক মন্ত্রোচ্চারণ করেই পুজো দেন তাঁরা।

দাসপাড়ার বাসিন্দা মমতা দাস, সান্তনা দাসেরা বলেন, ‘‘আমাদের দীর্ঘ দিনের বাসনা ছিল বাবার মন্দিরে পুজো দেব। গ্রামের মানুষজন এবং প্রশাসনের সহযোগিতায় আমাদের আশা পূর্ণ হয়েছে। আমরা চাই গ্রামে সকলে মিলেমিশে থাকি।’’ আর এক গ্রামবাসী বাবলু চৌধুরী বলেন, ‘‘আলাপ-আলোচনার মাধ্যমে সব কিছু মিটে গিয়েছে। যাঁরা ভক্ত, তাঁরা সকলেই পুজো দিতে পারবেন। পাশাপাশি পুজোর রীতিনীতি এবং ঐতিহ্য মেনে চলা আমাদের সকলের কর্তব্য।’’

স্থানীয় সূত্রে খবর, প্রায় সাড়ে ৩০০ বছর আগে তৎকালীন জমিদার স্বপ্নাদেশ পেয়ে শিবলিঙ্গ প্রতিষ্ঠা করে পুজো শুরু করেন। পরে মন্দির প্রতিষ্ঠা হয়। জমিদারি আমলেই গীধেশ্বর শিবের পুজোর পদ্ধতি ঠিক করা হয়েছিল। সেবায়েত পরিবারদের নির্দিষ্ট দায়দায়িত্ব দিয়ে দেবসেবার জন্য জমিও দিয়ে গিয়েছিল জমিদার পরিবার। তখন থেকেই একমাত্র ব্রাহ্মণ ছাড়া গীধেশ্বরের গর্ভগৃহে প্রবেশাধিকার অন্য সম্প্রদায়ের ছিল না। অব্রাহ্মণেরা পুরোহিতের মাধ্যমে শিবলিঙ্গে জল ঢালতেন।

অভিযোগ ছিল, গ্রামের অন্যান্য সম্প্রদায়ের লোকেরা মন্দিরে উঠে পুজো দিতে পারলেও ওই গ্রামের দাসপাড়ার বাসিন্দাদের সেই অধিকার থেকে বঞ্চিত করে রাখা হয়। এ বছর শিবরাত্রির তিন দিন আগে দাসপাড়ার বাসিন্দারা প্রশাসনের কাছে আবেদন জানান, যাতে তাঁরাও গীধেশ্বরের পুজো দিতে পারেন। পুলিশ ও স্থানীয় প্রশাসন আলাপ আলোচনা করে এই জট কাটানোর চেষ্টা করেছিল বটে। কিন্তু অভিযোগ, তার পরেও দাসপাড়ার বাসিন্দাদের বাধার মুখে পড়তে হয়। এর পরেও প্রশাসন দু’পক্ষকে নিয়ে একাধিকবার বৈঠকে বসে। মঙ্গলবার কাটোয়া মহকুমাশাসকের কার্যালয়ে বৈঠকে বসার পর মন্দির কমিটি জানিয়ে দেয়, পরম্পরা ও রীতি মেনে দাসপাড়ার বাসিন্দারাও পুজো দিতে পারবেন।

মহকুমা শাসক অহিংসা জৈন বলেন, ‘‘আমরা প্রশাসন ও পুলিশের তরফে গ্রামের সকল মানুষজনকে অনেক বোঝাই। এমন বিভেদ বৈষম্য থাকাটা যে ঠিক নয়, সেই ব্যাপারে এক মত হন গ্রামের মানুষেরাও। সকলের প্রচেষ্টাতেই পুজো দেওয়া নিয়ে জটিলতার অবসান হয়।’’

বুধবার কাটোয়ার মহকুমাশাসক অহিংসা জৈন, কাটোয়ার এসডিপিও কাশীনাথ মিস্ত্রি এবং কাটোয়া-১-এর বিডিও ইন্দ্রজিৎ মারিক মন্দির চত্ত্বরে উপস্থিত ছিলেন।

Shiva temple Katwa Dalits

সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:

Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy

{-- Slick slider script --}}