গরুমারায় মৃত গন্ডার। বুধবার। নিজস্ব চিত্র
দুই পুরুষ গন্ডারের লড়াইয়ে প্রাণ গেল এক জনের। উত্তরবঙ্গে গরুমারা জাতীয় উদ্যানের ভিতরে বুধুরাম বিট থেকে বুধবার মৃত ওই গন্ডারটির দেহ উদ্ধার করেন বনকর্মীরা। বন দফতর জানিয়েছে, মৃত গন্ডারের প্রতিদ্বন্দ্বী গন্ডারটিও জখম হয়েছে। আপাতত সেটিকে নজরে রাখা হয়েছে। তিন-চার দিন আগে ওই দুই গন্ডারের লড়াই হয়েছে বলেই প্রাথমিক ধারণা বনকর্মীদের।
গরুমারায় গন্ডার চেনার সুবিধার্থে তাদের আলাদা নামে চিহ্নিত করা হয়। বন দফতর সূত্রের খবর, মৃত গন্ডারটির নাম ‘ঘাড়মোটা’। তার প্রতিদ্বন্দ্বীর নাম ‘টারজান’। লড়াইয়ে ক্ষতবিক্ষত টারজানকে আপাতত চিকিৎসক ও বনকর্মীরা নজরে রেখেছেন। গরুমারার বন্যপ্রাণ বিভাগের ডিএফও নিশা গোস্বামী বলেন, “দুই পুরুষ গন্ডারের লড়াইয়েই মৃত্যু হয়েছে বলে আমাদের প্রাথমিক অনুমান। তবে কেন এমন হল তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে।”
যদিও জঙ্গলে গন্ডারের স্ত্রী-পুরুষের অনুপাতের ভারসাম্য কমে যাওয়ার ফলেই এই ঘটনা বলে ধারণা বন্যপ্রাণ বিশেষজ্ঞ শ্যামাপ্রসাদ পাণ্ডের। তাঁর বক্তব্য, সঙ্গিনী দখলের লড়াইয়েই প্রাণ সম্ভবত হারাতে হয়েছে ওই গন্ডারটিকে। তিনি আরও জানান, জঙ্গলে গন্ডারের অনুকূল পরিবেশের পিছনে অন্যতম শর্ত হল, পুরুষ প্রতি ন্যূনতম তিন স্ত্রী গন্ডার থাকা আবশ্যক। কিন্তু গরুমারায় স্ত্রী গন্ডার উদ্বেগজনক ভাবে কমে গিয়েছে। ফলে মাঝেমধ্যেই সঙ্গিনী দখলের লড়াইয়ের ঘটনা বাড়াবাড়ি পর্যায়ে পৌঁছে যাচ্ছে। শ্যামাপ্রসাদ আরও বলেন, “স্ত্রী গন্ডারের সংখ্যা না বাড়লে এই সমস্যা মিটবে না।
প্রয়োজনে অসমের বন দফতরের সঙ্গেও কথা বলা যেতে পারে।”
এই মৃত্যুর পিছনে চোরাশিকারিরা সক্রিয় কিনা তা খতিয়ে দেখতে এ দিন মেটাল ডিটেক্টর দিয়েও জঙ্গলে তল্লাশি চালানো হয়। তবে সন্দেহজনক কিছুই মেলেনি। গত বছর বড়দিনেই এখানে চোরাশিকারের বলি হতে হয় এক গন্ডারকে। তাই নিরাপত্তায় কোনও ফাঁক রাখা হচ্ছে না বলে বনকর্তারা জানান। মৃত গন্ডারটির সারা শরীরেই একাধিক চোট ও আঘাতের চিহ্ন রয়েছে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy