Advertisement
E-Paper

আয়কর তল্লাশির নামে বাড়িতে হানা দিয়ে ডাকাতি, পুরুলিয়ায় তদন্তে নেমে ৭ জনকে গ্রেফতার করল পুলিশ

পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, ধৃতদের মধ্যে ছ’জনেরই বাড়ি ঝাড়খণ্ডে। সপ্তম জনের বাড়ি পুরুলিয়ার কোটশিলা থানা এলাকায়। তাঁদের মধ্যে এক জন নিজেকে সিআরপিএফ-এর জওয়ান বলে পরিচয় দিয়েছেন বলে পুলিশের দাবি। ধৃতদের মধ্যে দু’জন মহিলাও রয়েছেন।

আনন্দবাজার ডট কম সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ২০ এপ্রিল ২০২৫ ২২:৪৭
ডাকাতির ঘটনায় ধৃত সাত জন।

ডাকাতির ঘটনায় ধৃত সাত জন। — নিজস্ব চিত্র।

কলকাতার চিনার পার্কের পর পুরুলিয়া! আয়কর তল্লাশির নামে এক বিড়ি কারখানার মালিকের বাড়িতে হানা দিয়ে প্রায় সাড়ে সাত লক্ষ টাকা নগদ এবং বহুমূল্য সোনার অলঙ্কার নিয়ে চম্পট দিয়েছিলেন দুষ্কৃতীরা। সেই ঘটনার তদন্তে নেমে রবিবার সাত জনের একটি দলকে গ্রেফতার করল পুরুলিয়া জেলা পুলিশ।

পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, ধৃতদের মধ্যে ছ’জনেরই বাড়ি ঝাড়খণ্ডে। সপ্তম জনের বাড়ি পুরুলিয়ার কোটশিলা থানা এলাকায়। তাঁদের মধ্যে এক জন নিজেকে সিআরপিএফ-এর জওয়ান বলে পরিচয় দিয়েছেন বলে পুলিশের দাবি। ধৃতদের মধ্যে দু’জন মহিলাও রয়েছেন।

পুলিশ সূত্রে খবর, গত ৮ এপ্রিল বিকেলে পুরুলিয়ার ঝাড়খণ্ড সীমানাবর্তী কোটশিলা থানার বামনিয়া গ্রামে হানা দেয় সাত-আট জন দুষ্কৃতীর একটি দল। বামনিয়া গ্রামে পৌঁছে প্রথমেই তারা ঢুকে পড়ে বিড়ি কারখানার মালিক কিরীটি কুমারের বাড়িতে। প্রথমেই নিজেদের আয়কর দফতরের কর্মী হিসাবে পরিচয় দিয়ে একটি নোটিস দেখিয়ে কিরীটির মোবাইল কেড়ে নেন দুষ্কৃতীরা। এর পর আগ্নেয়াস্ত্র দেখিয়ে বাড়িতে ‘তল্লাশি’ শুরু হয়। আলমারি থেকে শুরু করে সিন্দুক— সব কিছু তছনছ করে ঘণ্টাখানেক ধরে চলে তল্লাশি। প্রতিবাদ করলে কিংবা বিষয়টি অন্যদের জানালে বিপদ বাড়বে বলে হুমকিও দেওয়া হয়। এর পর বাড়ি থেকে প্রায় সাড়ে সাত লক্ষ টাকা নগদ এবং সোনা ও রুপোর বেশ কিছু অলঙ্কার সংগ্রহ করে তার একটি তালিকা তৈরি করে দলটি। শেষে সে সব নিয়ে চম্পট দেয় দুষ্কৃতীরা। বলা হয়, নগদ টাকা ও অলঙ্কারের উৎস সংক্রান্ত নথি আয়কর দফতরে জমা দিলে তালিকা মিলিয়ে সব কিছু ফেরত দেওয়া হবে!

বিড়ি ব্যবসায়ী কিরীটির কথায়, ‘‘প্রথমে দলটিকে আয়কর দফতরের বলেই আমাদের মনে হয়েছিল। বাড়ির মহিলারা ওদের কাছে কান্নাকাটি করে গহনা ফিরিয়ে দেওয়ার আবেদন জানালে তারা জানায়, টাকা ও অলঙ্কার কোথা থেকে এল, সেই নথি পরবর্তীতে আয়কর দফতরে জমা দিলে সব কিছু ফিরিয়ে দেওয়া হবে। এই বলেই দুষ্কৃতীরা নগদ টাকা ও সমস্ত গহনা ব্যাগবন্দি করে আমার স্কর্পিয়ো গাড়িটি নিয়ে চম্পট দেয়। এমনকি, যাওয়ার সময় আমার এক কর্মীকে গ্রেফতার করার নাম করে গাড়িতে তুলেও নিয়ে যায়।’’ কিরীটির দাবি, দুষ্কৃতীরা যাওয়ার সময় প্রমাণ লোপাটের জন্য বাড়ির সমস্ত সিসিটিভি ক্যামেরার হার্ড ডিস্কও খুলে নিয়ে গিয়েছিলেন।

অন্য দিকে, দলটি চলে যাওয়ার কিছু ক্ষণ পরেই সন্দেহ হয় বাড়ির সকলের। তাঁরা বিষয়টি স্থানীয় কোটশিলা থানায় জানান। তড়িঘড়ি পুরুলিয়া জেলা পুলিশের উচ্চপদস্থ আধিকারিকদের নেতৃত্বে একটি বিশেষ তদন্তকারী দল গঠন করে শুরু হয় তদন্ত। পুরুলিয়ার পুলিশ সুপার অভিজিৎ বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, ‘‘তদন্তে নেমে প্রযুক্তিগত বেশ কিছু সূত্র আমাদের হাতে আসে। এ ছাড়াও, পুলিশের নিজস্ব কিছু সূত্রের মাধ্যমে তথ্য সংগ্রহ করা হয়। এর পর ঝাড়খণ্ডের জোনা বাজার থেকে বিড়ি ব্যবসায়ীর স্কর্পিয়ো গাড়িটি উদ্ধার হয়। শনিবার পুরুলিয়া জেলা পুলিশের একটি বড় দল দুষ্কৃতীদের খোঁজে ঝাড়খণ্ডের বিভিন্ন এলাকাতেও হানা দেয়। আর তাতেই সাফল্য মেলে।’’ পুলিশ সূত্রে খবর, ওই ঘটনায় এখনও পর্যন্ত দুই মহিলা-সহ মোট সাত জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। পাশাপাশি, খোয়া যাওয়া নগদ টাকা ও অলঙ্কার উদ্ধারেরও চেষ্টা চলছে।

উল্লেখ্য, গত মাসেই কলকাতার চিনার পার্কে আয়কর দফতরের আধিকারিক সেজে এক বাড়িতে হানা দিয়ে টাকা ও গহনা লুটপাটের ঘটনা ঘটেছিল। সেই ঘটনার রেশ কাটতে না কাটতেই ফের একই ধাঁচের কাণ্ড ঘটল পুরুলিয়ায়।

Robbery purulia Income Tax Raid
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy