তমলুক টাউন ক্রেডিট কোঅপারেটিভের নির্বাচনকে কেন্দ্র করে ব্যাপক উত্তেজনা ছড়াল রবিবার। ভোটগ্রহণ শুরু হওয়ার পর থেকেই তৃণমূলের বিরুদ্ধে আদর্শ আচরণবিধি লঙ্ঘনের অভিযোগ তুললেন বিজেপির প্রার্থী। অন্য দিকে, অভিযোগ শুনে মেজাজ হারিয়ে বিজেপি প্রার্থীর দিকে তেড়ে গেলেন তৃণমূলের প্রার্থী। দুই পক্ষ জড়ালেন হাতাহাতিতে। ঘটনাস্থলে পুলিশ বাহিনী গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে নিয়ে আসে। বিজেপির দাবি, ‘ছোট্ট’ সমবায় নির্বাচন ঘিরে যে ভাবে সন্ত্রাস ছড়ানোর চেষ্টা হচ্ছে, তা ন্যক্কারজনক। অন্য দিকে, তৃণমূলের অভিযোগ, ভোটে অযথা উত্তেজনা ছড়ানোর চেষ্টা চালাচ্ছে বিজেপি।
রবিবার তমলুক টাউন ক্রেডিট কোঅপারেটিভ ব্যাঙ্কের ভোটগ্রহণ হয় তমলুকের শালগেছিয়া হাই স্কুলে। ৫৮টি আসনের মধ্যে ৪৫টি আসনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা হয়। ৩১টি আসনে তৃণমূল বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় জয়ী হয়েছে। ভোটগ্রহণের আগে থেকে মোতায়েন ছিল বিশাল পুলিশ বাহিনী। তারই মাঝে বিজেপি প্রার্থী সুরজিৎ বেরা তমলুকের ‘দাপুটে’ তৃণমূল নেতা চঞ্চল খাঁড়া-সহ তাঁর সঙ্গীদের বিরুদ্ধে বুথের ভিতরে গাজোয়ারির অভিযোগ তোলেন। সেই সঙ্গে তাঁদের বুথের বাইরে বার করে দেওয়ার জন্য পুলিশকে আবেদন করেন। এই ঘটনায় ক্ষিপ্ত হয়ে চঞ্চল বিজেপি প্রার্থীর সঙ্গে বাগ্বিতণ্ডায় জড়িয়ে পড়েন। পরে দুই পক্ষের ধ্বস্তাধস্তি শুরু হয়। পুলিশ বাহিনী সবাইকেই সেখান থেকে সরিয়ে দেয়।
বিজেপি প্রার্থী সুরজিতের অভিযোগ, ‘‘ভোটগ্রহণ শুরু হওয়ার পরে নির্বাচনের আদর্শ আচরণবিধি জলাঞ্জলি দিয়ে চঞ্চল খাঁড়া বার বার বুথে যাচ্ছিলেন। তাঁর কাছে কোনও পরিচয়পত্রও ছিল না। দলবল নিয়ে বুথের ভিতর যাওয়া নিয়ে আমি প্রতিবাদ করতেই চঞ্চল আমার উপর চড়াও হন। আমাদের কর্মীদেরও ধাক্কাধাক্কি করা হয়। তবে পুলিশ এসে দ্রুত সবাইকে সরিয়ে দেন।
আরও পড়ুন:
সুরজিতের পাল্টা অভিযোগ, ‘‘ছোট্ট একটি সমবায় নির্বাচন জেতার জন্য তৃণমূল সর্বশক্তি নিয়ে দাদাগিরি চালাচ্ছিল। তারই প্রতিবাদ করায় আমাকে লাঞ্ছনা করা হল।’’ স্থানীয় তৃণমূল নেতৃত্ব বিজেপির অভিযোগ উড়িয়ে দাবি করেছে, নির্বাচনে তাঁদের জয় অবশ্যম্ভাবী। হার নিশ্চিত জেনে অযথা অশান্তি পাকানোর চেষ্টা করছেন বিরোধীরা। উল্লেখ্য, তমলুক টাউন ক্রেডিট কোঅপারেটিভ ব্যাঙ্কের নির্বাচনকে কেন্দ্র করে প্রথম থেকেই বিতর্ক তৈরি হয়েছিল। প্রথমে এই ভোটে প্রার্থী দেওয়াকে কেন্দ্র করে তৃণমূলের গোষ্ঠীকোন্দল চরম আকার নেয়। চঞ্চল খাঁড়ার বিরুদ্ধে গায়ের জোরে প্রার্থিপদ ছিনিয়ে নেওয়ার অভিযোগ তুলে সরব হয়েছিলেন তাম্রলিপ্ত পুরসভার তৃণমূলের এক কাউন্সিলার। তবে শেষ পর্যন্ত চঞ্চলের গোষ্ঠীর প্রার্থিতালিকাই মান্যতা পায়।