ভোটার তালিকায় ‘ভূতুড়ে’ নাম থাকা নিয়ে চাপানউতোরের মধ্যেই বাংলাদেশ সীমান্ত লাগোয়া গ্রামে নতুন মুখে নজর রাখছে রাষ্ট্রীয় স্বয়ংসেবক সঙ্ঘের (আরএসএস) শাখা সংগঠন ‘সীমান্ত চেতনা মঞ্চ’। মঞ্চের তিন বিভাগের (উত্তরবঙ্গ, মধ্যবঙ্গ, দক্ষিণবঙ্গ) দায়িত্বপ্রাপ্ত গণেশ পাল বলেন, “আমাদের প্রধান উদ্দেশ্য, অনুপ্রবেশের মোকাবিলা।’’ আর সীমান্তে পাল্টা নজরদারির অভিযোগ এনেছে তৃণমূল।
বাংলাদেশে পালাবদলের পর থেকেই আরএসএস সীমান্তবর্তী গ্রামে সক্রিয়তা বাড়িয়েছিল। সম্প্রতি উত্তরবঙ্গ জুড়ে মঞ্চের সব শাখার কাছে, গ্রামে আসা নতুন অতিথিদের উপরে নজরদারির নির্দেশ এসেছে। সূত্রের দাবি, আরএসএসের শীর্ষ নেতৃত্বের কাছ থেকে এসেছে ওই নির্দেশ।
আপাতত তিনটি বিষয়ে নজরদারিতে নেমেছে মঞ্চ। গত মাস ছয়েকের মধ্যে কোনও পরিবার কি হঠাৎ সীমান্তের গ্রামে ঘর বাঁধল, কোথা থেকে, কার সূত্রে এল—খোঁজ নিচ্ছেন মঞ্চের কার্যকর্তারা। খোঁজ নেওয়া হচ্ছে সীমান্তের গ্রামে নতুন কেউ দীর্ঘ দিন ধরে অতিথি রয়েছেন কি না। এমন কেউ থাকলে তিনি কার বাড়িতে আশ্রয় নিয়েছেন, সে পরিবার সম্পর্কে বিশদে খোঁজ নেওয়া হচ্ছে।
এ ছাড়া, সীমান্তের গ্রামের ঠিকানা দেখিয়ে বা অতিথি হয়ে এসে অ-হিন্দু কেউ নাগরিকত্ব পাওয়ার জন্য ভোটার তালিকায় নাম তুললেন কি না বা আবেদন করলেন কি না, নজর রাখা হচ্ছে সে দিকেও। সঙ্ঘের নির্দেশ, এ সব তথ্য যাচাই করে দেখতে হবে। কোথাও সেই ব্যক্তি বা ব্যক্তিদের সম্পর্কে ন্যূনতম সন্দেহ হলে সীমান্ত রক্ষী বাহিনীকে (বিএসএফ) জানাতে হবে। গণেশ বলেন, ‘‘সীমান্তের গ্রামে এলাকায় নতুন বা সন্দেহজনক কাউকে দেখলে, আমাদের সদস্য, কার্যকর্তাদের বলা হয়েছে, পুলিশ এবং বিএসএফকে জানাতে।’’
সম্প্রতি বিএসএফের তরফেও ‘সীমান্ত চেতনা মঞ্চ’-কে একাধিক বৈঠকে ডাকা হচ্ছে। কিছু দিন আগে জলপাইগুড়ির মানিকগঞ্জে জনসংযোগ কর্মসূচি নিয়ে বিএসএফের ডাকা বৈঠকে ডাক পেয়েছিল তারা। যদিও বিএসএফের এক কর্তার দাবি, “দীর্ঘদিন ধরেই আমাদের নির্দিষ্ট কার্যপ্রণালীতে (এসওপি) বলা রয়েছে, সীমান্ত নিয়ে এবং
সীমান্তের গ্রামে যে সংগঠন কাজ করবে, তাদের সমন্বয় বৈঠকে ডাকতে। আমরা ক্লাব থেকে শুরু করে সকলকেই ডাকি।”
যদিও বাংলাদেশ সীমান্তবর্তী রাজগঞ্জের বিধায়ক তথা জলপাইগুড়ি জেলা তৃণমূলের চেয়ারম্যান খগেশ্বর রায় বলেন, “গেরুয়া বাহিনী শুধু
হিন্দু-মুসলিম করতে চায়। এ ছাড়া কাজ
নেই ওদের।’’ জলপাইগুড়ির বিজেপি সাংসদ জয়ন্ত রায় পাল্টা বলেন, ‘‘এ রাজ্যে অবৈধ অনুপ্রবেশকারীদের কারা রাজনৈতিক ভাবে মদত দেয়, সবাই জানেন।’’
এই খবরটি পড়ার জন্য সাবস্ক্রাইব করুন
5,148
1,999
429
169
(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)