পদ্মশ্রী সম্মান মেলায় কমলি সোরেনকে সংবর্ধনা দিচ্ছেন রাষ্ট্রীয় স্বয়ং সেবক সঙ্ঘের এক নেতা। —নিজস্ব চিত্র
কমলি সোরেনের ‘পদ্ম’ সম্মান পাওয়ার পিছনে রাষ্ট্রীয় স্বয়ং সেবক সঙ্ঘের (আরএসএস) যোগ রয়েছে বলে দাবি করে সরব হয়েছিল বিরোধীরা। এ বার প্রকাশ্যেই কমলির পাশে দাঁড়াল আরএসএস। শনিবার ইংরেজবাজার শহরের জেলা কার্যালয়ে মাদার টেরিজার প্রসঙ্গ টেনে ‘ধর্মগুরু’ কমলি সোরেনের কাজকর্ম তুলে ধরলেন আরএসএসের উত্তরবঙ্গের যুগ্ম সম্পাদক তরুণকুমার পণ্ডিত। তিনি বলেন, ‘‘মাদার টেরিজার কাজকর্ম নিয়েও অনেক বিতর্ক রয়েছে। তার পরেও মাদার টেরিজার ভারতরত্ন নিয়ে সমালোচনা হয়নি। অথচ প্রান্তিক গ্রামের মানুষ কমলি সোরেনের পদ্মশ্রী সম্মান নিয়ে প্রশ্ন তোলা হচ্ছে।’’ তাঁর মন্তব্যের পাল্টা সমালোচনা করে সরব বিরোধীরা।
প্রজাতন্ত্র দিবসে কেন্দ্রীয় সরকারের প্রকাশিত পদ্ম সম্মানের তালিকায় দেখা যায় কমলি সোরেনের নাম। পরদিনই কমলির বাড়িতে ভিড় জমে যায় বিজেপি নেতাদের। মালদহের গাজলে আদিবাসী প্রধান গ্রাম কোটালহাটির বাসিন্দা কমলি। তিনি সে দিন স্পষ্টই জানান, আদিবাসীদের ধর্মান্তরণ আটকানোই তাঁর মূল লক্ষ্য। তিনি যে সঙ্ঘের শাখা বনবাসী আশ্রমের সঙ্গে যুক্ত, সে কথাও সে দিনই স্পষ্ট হয়ে যায়। তখনই বিরোধীরা প্রশ্ন তোলে, আদিবাসী ভোট ব্যাঙ্ক ধরে রাখতেই কি ধর্মগুরু কমলিকে পদ্মশ্রী সম্মান? এ-ও প্রশ্ন ওঠে, কী কাজের ভিত্তিতে পদ্মশ্রী পেলেন কমলি? তৃণমূলের মালদহের মুখপাত্র শুভময় বসু বলেন, ‘‘আদিবাসীরা এখন বিজেপির সঙ্গে নেই। তা বুঝতে পেরেই আদিবাসী মুখকে পদ্মশ্রী দেওয়া হচ্ছে। মাদার টেরিজার সঙ্গে তুলনা করা হচ্ছে।’’
এ দিন তরুণ বলেন, ‘‘কমলি ৩৩ বছর ধরে আদিবাসী উন্নয়নে কাজ করছেন। ধর্মান্তরিত আদিবাসীদের হিন্দু ধর্মে ফেরানোর কাজও করেন কমলি। আয়ুর্বেদিক মতে চিকিৎসাও করেন। তাঁর পদ্মশ্রী পাওয়ার পেছনে কোনও ভুল নেই।’’ তিনি এ-ও বলেন, ‘‘সিনেমা জগৎ থেকে কেউ পদ্মশ্রী পেলে মাতামাতি হয়। প্রত্যন্ত গ্রামের মহিলার পদ্মশ্রী সম্মানে কারও হেলদোল নেই।’’
সঙ্ঘের সমালোচনা করেছে আদিবাসী সংগঠনগুলিও। ঝাড়খণ্ড দিশম পার্টির রাজ্য সভাপতি মোহন হাঁসদা বলেন, ‘‘আদিবাসীদের ধর্ম হিন্দু নয়, সারনা। সেই ধর্ম নিয়ে আমরাও আন্দোলন করছি। সেই আন্দোলন ধামাচাপা দিতেই আদিবাসী মহিলাকে পদ্মশ্রী দেওয়া হচ্ছে।’’ সারনা হিন্দু ধর্মেরই অঙ্গ বলে দাবি করেন সঙ্ঘের ধর্মজাগরণ সমন্বয় বিভাগের সংযোজক মুর্শিদাবাদের রাজেন সোরেন। তিনি বলেন, ‘‘এই নিয়ে কিছু নেতা আদিবাসীদের ভুল বোঝাচ্ছে।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy