E-Paper

টেট পাশ চাকরিপ্রার্থীদের বিধানসভা অভিযানে ধুন্ধুমার

২০২২ সালের টেট পাশ চাকরিপ্রার্থীদের এই বিক্ষোভ-আন্দোলন ঘিরে এ দিন দুপুরে ধুন্ধুমার বেধে যায়। বিধানসভার গেটের সামনে পুলিশ তাঁদের চ্যাংদোলা করে প্রিজ়ন ভ্যানে তোলে।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ১২ সেপ্টেম্বর ২০২৫ ০৮:৫২
২০২২-এর প্রাইমারি টেট উত্তীর্ণ পরীক্ষার্থীদের বিধানসভা অভিযান। বুধবার।

২০২২-এর প্রাইমারি টেট উত্তীর্ণ পরীক্ষার্থীদের বিধানসভা অভিযান। বুধবার। ছবি: দেবস্মিতা ভট্টাচার্য।

ধর্মতলায় মেট্রো স্টেশন থেকে সবে বেরিয়েছেন ২০২২ সালের কয়েকশো টেট পাশ চাকরিপ্রার্থী। বাইরে বেরিয়েই রানি রাসমণি রোড ধরে দৌড়তে শুরু করলেন তাঁরা। বৃহস্পতিবার ধর্মতলা থেকে ওই ভাবে দৌড়ে তাঁরা পৌঁছে গেলেন বিধানসভার তিন নম্বর গেটের সামনে। সেখানে বসে বিক্ষোভ দেখাতে শুরু করলেন। তত ক্ষণে পুলিশও চলে এসেছে সেখানে। আন্দোলনকারীদের টেনেহিঁচড়ে প্রিজ়ন ভ্যানে তুলতে শুরু করে তারা। এরই মধ্যে চাকরিপ্রার্থীরা স্লোগান তুললেন, ‘নেপাল থেকে শিক্ষা নিন, মুখ্যমন্ত্রী নিয়োগ দিন।’ তাঁদের দাবি, ৫০ হাজার শূন্য পদে অবিলম্বে নিয়োগ করতে হবে।

২০২২ সালের টেট পাশ চাকরিপ্রার্থীদের এই বিক্ষোভ-আন্দোলন ঘিরে এ দিন দুপুরে ধুন্ধুমার বেধে যায়। বিধানসভার গেটের সামনে পুলিশ তাঁদের চ্যাংদোলা করে প্রিজ়ন ভ্যানে তোলে। শুরু হয়ে যায় ধস্তাধস্তি। কয়েক জন চাকরিপ্রার্থী ভ্যানের সামনে রাস্তায় শুয়ে পড়েন। পুলিশ মাইকে ঘোষণা করতে থাকে, বিধানসভার সামনের এলাকা খালি করে দেওয়ার জন্য। কয়েক জন মহিলা চাকরিপ্রার্থী নিজেদের হাত দেখিয়ে জানান, পুলিশের টানাটানির জেরে তাঁদের হাত কেটে গিয়েছে। তাঁদের বক্তব্য, ২০২২ সালের ডিসেম্বরে পরীক্ষা দিয়েছিলেন। ফল বেরিয়েছে ২০২৩ সালের ফেব্রুয়ারিতে। এখনও ইন্টারভিউ পর্যন্ত হয়নি।

রাজ্যের প্রায় সমস্ত জেলা থেকেই প্রাথমিকের চাকরিপ্রার্থীরা এই আন্দোলনে এসেছিলেন। তাঁদেরই কয়েক জন বললেন, ‘‘মুখ্যমন্ত্রীথেকে শিক্ষামন্ত্রী, সকলেই আমাদের গত তিন বছর ধরে ললিপপ দেখিয়ে চলেছেন। আমাদের বয়স শেষ হতে চলল। আর কবে নিয়োগ হবে? ধৈর্যের বাঁধ ভাঙছে। এই পরিস্থিতিতে নেপালের মতো অবস্থা তৈরি হতে পারে।’’ কয়েক জন চাকরিপ্রার্থী করজোড়ে পুলিশকে বলতে থাকেন, ‘‘আন্দোলন করা দোষের? আমাদের অনেকেরই মা, বাবা অসুস্থ। ওষুধ পর্যন্ত কিনতে পারছি না। দেওয়ালে পিঠ ঠেকে গিয়েছে। প্রাথমিকে প্রচুর শূন্য পদ। তবু কেন নিয়োগ হবে না?’’ পুলিশের সঙ্গে ধস্তাধস্তির জেরে কয়েক জন আন্দোলনকারী অসুস্থ হয়ে পড়েন। এমনই এক জন সাধন দাস। তাঁর জন্য পুলিশ অ্যাম্বুল্যান্সেরব্যবস্থা করে।

এ দিকে, এই আন্দোলনের যৌক্তিকতা নেই বলে মন্তব্য করেন শিক্ষামন্ত্রী ব্রাত্য বসু। এ দিন তাঁর বক্তব্য, ‘‘শূন্য পদের সংখ্যা নির্দিষ্ট করে বলা হয়নি। বিভিন্ন জেলা প্রাথমিক শিক্ষা সংসদ তা পাঠাবে। তার আগেই ৫০ হাজার শূন্য পদ, ৫১ হাজার শূন্য পদ বলে খাইয়ে দেওয়া হচ্ছে। এটার কোনও মানে নেই। আমি আবার চাকরিপ্রার্থীদের বলব, জেলা স্তরে শূন্য পদ তৈরির কাজ প্রায় শেষ। খুব শীঘ্রই বিজ্ঞপ্তি বেরোবে।’’

বিধানসভার পরে সন্ধ্যায় শিক্ষামন্ত্রীর কালিন্দীর বাড়ির সামনে গিয়ে বিক্ষোভ দেখান চাকরিপ্রার্থীরা। ব্রাত্যের বক্তব্যের সূত্র ধরেই তাঁদের প্রশ্ন, জেলাগুলিতে শূন্য পদ কত, তা জানাতে দু’বছরেরও বেশি সময় লাগছে কেন? বিদেশ গাজি নামে এক চাকরিপ্রার্থীর দাবি, ‘‘৫০হাজার শূন্য পদ বলে খাওয়ানোর চেষ্টা কেউ করছেন না। শূন্য পদের এই সংখ্যা পর্ষদ সভাপতি গৌতম পাল জানিয়েছিলেন অনেকআগেই। বলেছিলেন, প্রতিবছর টেট হবে। প্রতি বছর নিয়োগ হবে। এ ছাড়া, ২৬ হাজার চাকরি বাতিলের রায়ের প্রতিলিপি পেয়ে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় নবান্নে যে সাংবাদিক বৈঠক করেন, সেখানেও বলেছিলেন, নতুন এক লক্ষ শূন্যপদ রয়েছে।’’

(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)

TET Bidhan Sabha Bhaban

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy