Advertisement
১০ মে ২০২৪
doctor

Rural Doctors: হাসপাতালের বদলে গ্রামীণ চিকিৎসায় ভরসা

অনেক গ্রামীণ চিকিৎসকের বক্তব্য, তাঁরা জ্বরের রোগীদের করোনা পরীক্ষার জন্য হাসপাতালে যেতে বললেও, রোগীরা তা শুনছেন না।

প্রতীকী ছবি।

প্রতীকী ছবি।

মফিদুল ইসলাম
হরিহরপাড়া শেষ আপডেট: ০৮ জানুয়ারি ২০২২ ০৬:১১
Share: Save:

একে শীতকাল। তার উপরে মাঝে কয়েক দিন বৃষ্টি হয়েছে। এমন সময় জ্বর, সর্দি, কাশি তো হয়ই ভেবে মুর্শিদাবাদের হরিহরপাড়া সংলগ্ন বেশ কিছু প্রত্যন্ত গ্রামের মানুষ অসুস্থ হলেও করোনা পরীক্ষার দিকে হাঁটেননি। হাসপাতালেও যাননি। বরং হাতের কাছে যে গ্রামীণ চিকিৎসককে পেয়েছেন, তাঁকেই দেখিয়েছেন। গ্রামীণ চিকিৎসকদের দেওয়া ওষুধ খেয়ে জ্বর এক বার কমে গেলে আবার স্বাভাবিক জীবনে ফিরে এসেছেন। এতে রীতিমতো উদ্বিগ্ন হয়ে পড়েছেন জেলার স্বাস্থ্য দফতরের কর্তারা। তাঁদের কেউ কেউ বলছেন, শহর থেকে দূরের গ্রামের কিছু মানুষের গ্রামীণ চিকিৎসকদের কাছে যাওয়ার অভ্যাস রয়েছে। তাই গ্রামীণ চিকিৎসকদের সচেতন করাও এখন খুব দরকার। জেলার মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক সন্দীপ সান্যাল বলেন, ‘‘হাতুড়েদের সচেতন করা হয়েছে প্রাথমিক ওষুধ দিয়ে সরকারি হাসপাতালে রোগীদের পাঠানোর জন্য।’’

অনেক গ্রামীণ চিকিৎসকের বক্তব্য, তাঁরা জ্বরের রোগীদের করোনা পরীক্ষার জন্য হাসপাতালে যেতে বললেও, রোগীরা তা শুনছেন না। হরিহরপাড়ার এক গ্রামীণ চিকিৎসক হাসানুজ্জামান বলছেন, ‘‘স্বাস্থ্য দফতরের পরামর্শ মতো আমরা প্রাথমিক ওষুধ দিয়ে জ্বরের রোগীদের হাসপাতালে যাওয়ার পরামর্শ দিচ্ছি। তবুও অনেকেই মৃদু জ্বর সহ অন্যান্য উপসর্গ নিয়ে হাসপাতালে যেতে চান না করোনা পরীক্ষার ভয়ে।’’ একই কথা বলছেন গঙ্গাধারী এলাকার এক গ্রামীণ চিকিৎসক হিটলার শেখও। তবে হোসেনপুর গ্রামের বাসিন্দা সাগর মণ্ডল বলেন, ‘‘সাত-আট দিন জ্বরে ভুগছি। হাসপাতালে গেলেই করোনার পরীক্ষা করাবে, করোনা ধরা পড়লে অনেক হ্যাপা। তা ছাড়া, হাসপাতাল প্রায় সাত-আট কিমি দূরে। তাই হাসপাতাল যাইনি। গ্রামের ডাক্তারের ওষুধ খেয়ে অনেকটাই সুস্থ আছি।’’

এতেই বিপদের আঁচ পাচ্ছেন স্বাস্থ্যকর্তারা। সন্দীপবাবু বলেন, ‘‘জ্বর সহ অন্যান্য উপসর্গ দেখা দিলে অন্তত স্থানীয় সু-স্বাস্থ্য কেন্দ্র, উপ স্বাস্থ্য কেন্দ্র বা অন্যান্য সরকারি হাসপাতালে যাওয়া উচিত। সু-স্বাস্থ্য কেন্দ্রে কমিউনিটি হেলথ অফিসার রয়েছেন। বিনা মূল্যে প্রয়োজনীয় ওষুধও মিলবে। তা ছাড়া, ঝুঁকি এড়াতে দিন-রাত টেলি মেডিসিনেরও বন্দোবস্ত করা হয়েছে। প্রতি দিন এক হাজারের বেশি মানুষ টেলি মেডিসিনে পরামর্শ নিচ্ছেন।’’

হরিহরপাড়ার মহিষমারা, রামপাড়া এলাকা থেকে হরিহরপাড়া ব্লক প্রাথমিক স্বাস্থ্য কেন্দ্র বা বহড়ান প্রাথমিক স্বাস্থ্যকেন্দ্রের দূরত্ব প্রায় ১৪-১৫ কিমি। নওদার গঙ্গাধারী বা বালি থেকেও আমতলা গ্রামীণ হাসপাতালের দূরত্ব প্রায় ১২-১৩ কিমি। যাতায়াতে সারা দিন লেগে যায়। অনেকের এক দিনের মজুরিও নষ্ট হয়। সে কারণেও ওই সমস্ত এলাকা সহ প্রত্যন্ত এলাকার বাসিন্দাদের একাংশ গ্রামীণ চিকিৎসক বা হাতুড়েদের দ্বারস্থ হচ্ছেন। হরিহরপাড়ার ব্লক প্রাথমিক স্বাস্থ্য আধিকারিক আজিজুল লস্কর বলেন, ‘‘পরীক্ষা না করলে কী করে বোঝা যাবে কেন জ্বর হয়েছে? তাই সরকারি হাসপাতালে আসাটাই জরুরি। গ্রামীণ চিকিৎসকদেরও সচেতন করা হয়েছে।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

doctor Murshidabad
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE