গৌরীশঙ্কর দত্ত ও মুকুল রায়।—ফাইল চিত্র।
বিধায়ক খুনের ঘটনায় প্রথম থেকেই বিজেপির দিকে আঙুল তুলছে তৃণমূল। মুকুল রায়ের নামে এফআইআর-ও দায়ের হয়েছে ইতিমধ্যেই। রবিবার পাল্টা পদক্ষেপ করলেন মুকুল। সাংবাদিক সম্মেলন ডেকে জানালেন, নদিয়া জেলা তৃণমূলের সভাপতি গৌরীশঙ্কর দত্তকে আইনি নোটিস পাঠিয়েছেন তিনি। গৌরী বললেন, ‘‘আমি কোনও নোটিস পাইনি।’’
কৃষ্ণগঞ্জের তৃণমূল বিধায়ক সত্যজিৎ বিশ্বাস শনিবার সন্ধ্যায় খুন হয়েছেন। নিজের নির্বাচনী ক্ষেত্রের মধ্যেই একটি সরস্বতী পুজোর অনুষ্ঠানে যোগ দিয়েছিলেন সত্যজিৎ। মঞ্চ থেকে নামার পরে খুব কাছ থেকে গুলি করে তাঁকে খুন করে দুষ্কৃতী।
শনিবার রাত থেকেই তৃণমূলের জেলা ও রাজ্য নেতৃত্ব অভিযোগ করছেন, বিজেপি খুন করিয়েছে কৃষ্ণগঞ্জের বিধায়ককে। বিজেপি নেতা মুকুল রায়-সহ কয়েক জনের নামে এফআইআর-ও হয়েছে।
আরও পড়ুন: প্রত্যক্ষদর্শীদের বয়ানে অসঙ্গতি, বিধায়ক খুনে প্রশ্ন ধৃতদের নিয়েও
বিজেপি অবশ্য বার বার পাল্টা দাবি করছে, তৃণমূলের গোষ্ঠীদ্বন্দ্বে খুন হয়েছেন ওই বিধায়ক। অনুব্রত মণ্ডল নদিয়ার দায়িত্ব পেয়েছেন বলেই সে জেলাতেও খুনোখুনি শুরু হয়ে গেল বলে বিজেপির একাংশ অভিযোগ করছে। তবে রবিবারের সাংবাদিক সম্মেলনে মুকুল রায় সেই ‘অনুব্রত তত্ত্বে’ ঢুকতে চাননি। তিনি সর্বাগ্রে সত্যজিৎ বিশ্বাসের খুনের নিন্দা করেন। দোষীদের খুঁজে বার করে অবিলম্বে গ্রেফতার করার দাবি তোলেন। নিরপেক্ষ তদন্তের দাবিও তোলেন।
মুকুল রায় এ দিন বলেছেন, ‘‘পশ্চিমবঙ্গে একটা প্রবণতা তৈরি হয়েছে। কোথাও কোনও খুনের ঘটনা ঘটলেই বিজেপির নাম জড়িয়ে দেওয়া হচ্ছে।’’ বিজেপির প্রতি জনসমর্থন বাড়ছে বলে মুকুল রায় এ দিন দাবি করেন। সেই কারণেই তৃণমূল ভয় পেয়ে বিজেপি নেতা-কর্মীদের মিথ্যা মামলায় ফাঁসাতে চাইছেন বলেও অভিযোগ তাঁর। তবে অনুব্রত মণ্ডল প্রসঙ্গে মুকুলের বক্তব্য, ‘‘কোনও একজন সম্পর্কে বলার কিছু নেই। তৃণমূল সামগ্রিক ভাবেই এই রকম একটা দলে পরিণত হয়েছে।’’ এই খুনের নেপথ্যে কারা, তা খতিয়ে দেখার জন্য নিরপেক্ষ তদন্তও দাবি করেন মুকুল রায়। রাজ্যের কোনও এজেন্সিকে দিয়ে তদন্ত করার পক্ষপাতী তিনি নন। যে হেতু সিবিআই-এর বিরুদ্ধে এ রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রীর গুরুতর অভিযোগ রয়েছে, সে হেতু সিবিআই তদন্তেরও দরকার নেই বলে মুকুল মন্তব্য করেন। তিনি বলেন, ‘‘এখন চন্দ্রবাবু নায়ডু তো মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের বন্ধু। তাঁকে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বলুন না, তাঁর রাজ্যের (অন্ধ্র) তদন্তকারী সংস্থাকে এখানে পাঠিয়ে তদন্ত করতে।’’
নিরপেক্ষ তদন্তের দাবি তুলেই থামেননি রাজ্য বিজেপির নির্বাচন ব্যবস্থাপনা কমিটির আহ্বায়ক। নদিয়া জেলা তৃণমূলের সভাপতি গৌরীশঙ্কর দত্তর বিরুদ্ধে আইনি পদক্ষেপের হুঁশিয়ারিও দিয়েছেন তিনি। সত্যজিৎ বিশ্বাস খুনের দায় যে ভাবে তাঁর উপরে চাপানোর চেষ্টা করেছেন গৌরীশঙ্কর, তা সম্পূর্ণ মিথ্যা বলে মুকুলের দাবি। বিভিন্ন সংবাদমাধ্যমের সামনে গৌরীশঙ্কর লাগাতার তাঁর নামে ‘মিথ্যা’ বলে গিয়েছেন বলে মুকুলের অভিযোগ। রবিবারে সাংবাদিক সম্মেলনে তিনি বলেন, ‘‘আমি আজ মিস্টার দত্তকে আইনি নোটিস পাঠিয়েছি।’’
আরও পড়ুন: অতিরিক্ত আত্মবিশ্বাসই কি কাল হল সত্যজিতের? প্রশ্ন উঠছে পুলিশের নিষ্ক্রিয়তা নিয়েও
গৌরীশঙ্কর দত্ত অবশ্য অবিচলিত। এ দিন তিনি আনন্দবাজারকে বলেন, ‘‘আমি কোনও নোটিস পাইনি।’’ নোটিস পেলে কী করবেন? গৌরীশঙ্করের শ্লেষাত্মক জবাব, ‘‘আইনি নোটিস পেলে আইনি ভাবে জবাব দেব। বেআইনি নোটিস পেলে বেআইনি ভাবে জবাব দেব।’’
(বাংলার রাজনীতি, বাংলার শিক্ষা, বাংলার অর্থনীতি, বাংলার সংস্কৃতি, বাংলার স্বাস্থ্য, বাংলার আবহাওয়া -পশ্চিমবঙ্গের সব টাটকা খবর আমাদের রাজ্য বিভাগে।)
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy