Advertisement
E-Paper

শাহের সভা শুরুর আগেই সুনসান শহর

মঙ্গলবার সকাল থেকে দুপুর গড়াতেই কাঁথি শহর জুড়ে দেখা গিয়েছে এমনই ছবি। ঠিক যেন বন্‌ধের মেজাজ। এ দিন দুপুরেই কাঁথিতে সভা ছিল বিজেপি সভাপতি অমিত শাহের। এ কি নেহাতই ঘটনাচক্র!

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ৩০ জানুয়ারি ২০১৯ ০৪:২৩
সভামঞ্চে  অমিত শাহ।

সভামঞ্চে অমিত শাহ।

দৃশ্য ১: কাঁথি- এগরা রাজ্য সড়কে রাউতারা বাসস্ট্যান্ডে দাঁড়িয়ে এক সিভিক ভলান্টিয়ার। আধঘণ্টা দাঁড়িয়ে থেকে বাসের দেখা না পেয়ে অটোয় চেপে ডিউটিতে গেলেন তিনি।

দৃশ্য ২: স্কুল যাওয়ার পথে সেন্ট্রাল বাসস্ট্যান্ডে ভাত খেতে গিয়েছিলেন এক শিক্ষক। কমপক্ষে সাতটি পাইস হোটেল আছে সেখানে। কিন্তু ঝাঁপ বন্ধ ছিল সব ক’টির। একটি মিষ্টির দোকান অর্ধেক খোলা থাকলেও তারা জানিয়ে দেয়, খাবার হবে না।

দৃশ্য ৩: সকাল দশটার সময় শহরের খড়্গপুর বাইপাস মোড়ে টোটোয় চেপে যাবেন বলে দাঁড়িয়েছিলেন এগরার দুবদার বাসিন্দা অসিত দোলাই। তাঁর অন্তঃসত্ত্বা মেয়ে নার্সিংহোমে ভর্তি। টোটোয় চেপে শহরের স্কুলবাজার যেতে চাইলেও, কেউ নিয়ে যায়নি। প্রায় তিন কিলোমিটার পথ হেঁটে নার্সিংহোমে পৌঁছন অসিত।

মঙ্গলবার সকাল থেকে দুপুর গড়াতেই কাঁথি শহর জুড়ে দেখা গিয়েছে এমনই ছবি। ঠিক যেন বন্‌ধের মেজাজ। এ দিন দুপুরেই কাঁথিতে সভা ছিল বিজেপি সভাপতি অমিত শাহের। এ কি নেহাতই ঘটনাচক্র! অমিতের মঞ্চ থেকে বিজেপির রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষ অভিযোগ করলেন, ‘‘আমাদের সভা ভন্ডুল করার জন্য সব রকম চেষ্টা করেছে তৃণমূল। সব হোটেল বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। যাতে আমাদের কর্মীরা খেতে না পায়। এর জবাব ২০১৯ সালে দিতেই হবে।’’ সরাসরি এ দিনের প্রসঙ্গে কিছু বলেননি অমিত। তবে এ রাজ্যের শাসক দল নানা ক্ষেত্রে বিরোধী দলের কার্যকলাপে বাধা দিচ্ছে বলে অভিযোগ করেন তিনি। বলেন, ‘‘ওরা যত বাধা দেবে বাংলার ঘরে ঘরে বিজেপি কর্মীরা আরও উদ্দীপ্ত হবে। ওরা যত বাধা দেবে, বাংলায় তত বাড়বে পদ্ম।’’

আরও পড়ুন: লোকসভার ফলের দিনই রাজ্যে সরকার পড়বে: অমিত শাহ

কাঁথি তো দোকানপাট বন্ধ থাকে শনিবার। তা হলে এ দিন কেন প্রায় বন্‌ধের চেহারা হল? কাঁথি শহরের সেন্ট্রাল বাসস্ট্যান্ডের ব্যবসায়ী সমিতির সম্পাদিক মৌমিতা প্রধান বলেন, ‘‘পুরসভার পক্ষ থেকে কয়েকজন মৌখিক ভাবে অনুরোধ করেছিল এ দিন দুপুর ১২টা থেকে ৩টে পর্যন্ত যেন অধিকাংশ দোকানপাট বন্ধ থাকে। আমি বলেছিলাম, নিজের দোকান বন্ধ করতে পারি। কিন্তু এ ভাবে অন্যকে দোকান বন্ধ রাখতে বলা যায়! ব্যবসায়িক স্বার্থও তো রয়েছে।’’ কারা দোকান বন্ধ রাখতে বলেছিল সেটা ভাঙতে চাননি মৌমিতা। তবে অভিযোগ অস্বীকার করেছেন কাঁথি পুরসভার চেয়ারম্যান সৌমেন্দু অধিকারী। তিনি বলেন, ‘‘দোকান কেন বন্ধ ছিল তা ব্যবসায়ীরাই বলতে পারবেন। এখানে পুরসভার কোনও সম্পর্ক নেই।’’ পাশাপাশি সৌমেন্দু যোগ করেছেন, ‘‘আতঙ্কের যে কারণ রয়েছে তা বোঝা গিয়েছে বিজেপির ভাঙচুর থেকে।’’

যানবাহন বন্ধ রইল কেন? পূর্ব মেদিনীপুর জেলা বাস ওনার্স অ্যাসোসিয়েশনের যুগ্ম সম্পাদক সুকুমার বেরা বলেন, ‘‘কোনও রাজনৈতিক চাপ নয়। অশান্তি এড়ানোর জন্য কেউ কেউ বাস চালায়নি বলে শুনেছি।’’ আর টোটো ইউনিয়নের নেতা অতনু গিরির কথায়, ‘‘ভবানী মোড়ে এ দিন টোটো ও অটো ইউনিয়নের সভা ছিল। তাই টোটো চলাচলে কিছুটা অসুবিধা হয়েছে। তবে শহরের মধ্যে টোটো চলেছে।’’

প্রশ্ন তুলছে বিরোধীরা। তাদের বক্তব্য, কর্মনাশা ধর্মঘট, বন্‌ধের বিরোধিতা তো তৃণমূলের ঘোষিত নীতি। তা হলে এ দিন কাঁথিতে যা হল তারও তো বিরোধিতা করা উচিত।

Amit Shah Public Rally Contai BJP TMC
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy