Advertisement
০৫ মে ২০২৪

ফুটেজে লুঠপাটের দৃশ্য, তবু অধরা দুষ্কৃতীরা

সিসিটিভি ফুটেজে দুষ্কৃতীদের চেহারা দেখা গিয়েছে। তবু ঘটনার পরে গোটা একটা দিন পেরিয়ে গেলেও আসানসোল বাজারে লটারির দোকানে লুঠপাটে জড়িতদের কাউকে ধরতে পারেনি পুলিশ।

সিসিটিভি ফুটেজে ধরা পড়ল লুঠপাট।

সিসিটিভি ফুটেজে ধরা পড়ল লুঠপাট।

নিজস্ব সংবাদদাতা
আসানসোল শেষ আপডেট: ১৯ জানুয়ারি ২০১৬ ০১:৫৫
Share: Save:

সিসিটিভি ফুটেজে দুষ্কৃতীদের চেহারা দেখা গিয়েছে। তবু ঘটনার পরে গোটা একটা দিন পেরিয়ে গেলেও আসানসোল বাজারে লটারির দোকানে লুঠপাটে জড়িতদের কাউকে ধরতে পারেনি পুলিশ। ওই ফুটেজ দেখে তল্লাশি শুরু হয়েছে বলে জানায় পুলিশ। তবে কেউ ধরা না পড়ায় তাঁরা আতঙ্কে রয়েছেন এলাকার ব্যবসায়ীরা।

রবিবার রাত সাড়ে ৯টা নাগাদ আসানসোলের মূল বাজার এলাকায় ওই লটারির দোকানে হামলা চালায় সশস্ত্র দুষ্কৃতীরা। যেখানে এই ঘটনা ঘটেছে তার এক দিকে প্রায় দেড়শো মিটারের মধ্যে রয়েছে আসানসোল দক্ষিণ থানা, অন্য দিকে প্রায় একই দূরত্বের মধ্যে রয়েছে দক্ষিণ থানার টাউন অফিস। তা সত্ত্বেও অত্যন্ত জনবহুল এই এলাকায় সন্ধ্যা পেরোতে না পেরোতেই এমন অপরাধের ঘটনায় শহরের নিরাপত্তা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন স্থানীয় ব্যবসায়ীরা। শুধু তাই নয়, ঘটনার পরে দেড়শো মিটার রাস্তা পেরিয়ে পুলিশের ঘটনাস্থলে পৌঁছতে সময় লাগে দেড় ঘণ্টা। তাই পুলিশের সক্রিয়তা নিয়েও প্রশ্ন তুলেছেন ব্যবসায়ীরা।

স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, রবিবার রাতে যখন ঘটনাটি ঘটে তখন ওই লটারির দোকানের আশপাশের অনেক দোকানপাটেই ঝাঁপ পড়ে গিয়েছিল। লটারির দোকানও বন্ধ করার তোড়জোড় চলছিল। সেই সময়ে দোকানেই ছিলেন দোকানের মালিক বিকাশ ভারতী। তিনি গোটা ঘটনার বিবরণ শোনান। তিনি জানান, রাত সাড়ে ৯টার কিছু আগে দুষ্কৃতীরা ক্রেতা সেজে দোকানে ঢোকে। তখন দোকানের চার জন কর্মচারীই বাড়ি যাওয়ার তোড়জোড় করছিলেন। দুষ্কৃতীরা প্রথমে টিকিট চায়। বিকাশবাবুর সঙ্গে দু’চার কথা বলতে না বলতেই তারা দোকানের ভিতরে ঢুকে পড়ে। তার পরে কোনও কিছু বুঝে ওঠার আগেই তারা কোমর থেকে আগ্নেয়াস্ত্র বের করে সমস্ত টাকাকড়ি দিয়ে দেওয়ার জন্য হুমকি দিতে শুরু করে।

ঘটনার আকস্মিকতায় সকলেই ঘাবড়ে যান। শুধু নিরঞ্জন বর্মা নামে এক কর্মচারী চিৎকার করেন। দুষ্কৃতীরা তখন তাঁকে পিস্তলের বাঁট দিয়ে আঘাত করে। তার পরে দোকানে হাজির সবাইকে মেঝেতে শুইয়ে দেয়। প্রায় পনেরো মিনিট ধরে তারা লুঠপাট চালিয়ে চম্পট দেয়। দুষ্কৃতীরা চলে যাওয়ার পরে আশপাশের লোকজনকে জানান ওই মালিক ও কর্মচারীরা। অন্য ব্যবসায়ীরা ছুটে আসেন। খবর দেওয়া হয় পুলিশে।

দোকানের সিসিটিভি ফুটেজটি থেকে দেখা গিয়েছে, জনা চারেক দুষ্কৃতী ভিতরে ঢুকেছিল। তারা দোকানে থাকা দু’জনকে আগ্নেয়াস্ত্র দেখিয়ে মোবাইল ফোন-সহ সঙ্গে থাকা জিনিসপত্র কেড়ে নেয়। তার পরে তাঁদের মেঝেতে শুয়ে পড়তে বাধ্য করে। মারধরও করে। বেশির ভাগেরই চোখ-মুখ ঢাকা কাপড়ে থাকলেও সিসিটিভি ফুটেজে এক জনের মুখ দেখা গিয়েছে। তা সত্ত্বেও গোটা একটি দিন পেরিয়ে যাওয়ার পরে কেন কাউকে গ্রেফতার করা গেল না, সে নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন স্থানীয় বাসিন্দা ও ব্যবসায়ীরা। এলাকার ব্যবসায়ীদের মধ্যেও ক্ষোভ তৈরি হয়েছে। অবিলম্বে দুষ্কৃতীদের গ্রেফতারের দাবি জানিয়েছেন তাঁরা।

আসানসোল চেম্বার অব কমার্সের উপদেষ্টা আরএন যাদব এ দিন ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, ‘‘ব্যস্ত একটি বাজার এলাকায় এ ভাবে অনায়াসে ঢুকে পড়ে দোকানে লুঠপাট চালানোর ঘটনাতেই পরিষ্কার দুষ্কৃতীদের দাপট কতটা বেড়ে গিয়েছে।’’ পুলিশি নিষ্ক্রিয়তার জন্যই তারা এত মনোবল পাচ্ছে বলে তাঁর অভিযোগ। সোমবার সকাল থেকে অবশ্য ওই লটারির দোকানে স্বাভাবিক কাজকর্ম হয়েছে। তবে মালিক ও কর্মচারীদের আতঙ্ক রয়ে গিয়েছে। পুলিশ কমিশনারেটের এডিসিপি (সেন্ট্রাল) রাকেশ সিংহ অবশ্য এ দিন বলেন, ‘‘আমরা তদন্ত শুরু করেছি। দোকানের সিসিটিভি ফুটেজ সংগ্রহ করা হয়েছে। দুষ্কৃতীরা শীঘ্রই ধরা পড়ে যাবে।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

CCTV asansol miscreants
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE