Advertisement
E-Paper

বড় নোট নেই, শুল্ক খোঁয়াড় ভর্তি গরু কিনবে কে

একে তো বাতিল নোটের হ্যাপা, সঙ্গে দোসর গোরুর গুঁতো! ঘুম গিয়েছে গেদে সীমান্তের শুল্ক কর্তাদের। কাজকর্ম শিকেয়। আপাতত পাচার হওয়ার মুখে সীমান্ত থেকে আটক করা গোরুর পাল সামাল দিতে দিন কাবার হচ্ছে তাঁদের। গুনে গুনে পঁচাত্তরটা গরু কি কম কথা!

সুপ্রকাশ মণ্ডল

শেষ আপডেট: ১৭ নভেম্বর ২০১৬ ০৩:১৫

একে তো বাতিল নোটের হ্যাপা, সঙ্গে দোসর গোরুর গুঁতো!

ঘুম গিয়েছে গেদে সীমান্তের শুল্ক কর্তাদের। কাজকর্ম শিকেয়। আপাতত পাচার হওয়ার মুখে সীমান্ত থেকে আটক করা গোরুর পাল সামাল দিতে দিন কাবার হচ্ছে তাঁদের। গুনে গুনে পঁচাত্তরটা গরু কি কম কথা!

আটক করার পরে তাদের সক্কলের ঠাঁই হয়েছে শুল্ক অফিসের গা ঘেঁষা সরকারি খোঁয়াড়ে। ঘাস-খোল-খড়ে দিব্যি আছে তারা। সরকারি নিয়ম মেনে তাদের বিকিকিনির জন্য নিলাম যে ডাকা হয়নি, এমন নয়। কিন্তু এই ‘নোট-হীন’ বাজারে গরু কিনবে কে?

শুল্ক দফতরের মাজদিয়া সেক্টর ইন্সপেক্টর জয়ন্ত কর্মকার বলছেন, ‘‘বড় নোট বাতিলের ঠেলায় খদ্দের কোথায়? দিন দিন তাই গরুর সংখ্যা বাড়ছে। আর পাল্লা দিয়ে বাড়ছে আমাদের মাথা ব্যথা।’’

বাংলাদেশ সীমান্তে গেদের কাঁটাতার বরাবর ফতেপুর, দত্তফুলিয়া, টুঙ্গি, বানপুর— দু-তিন কিলোমিটার অন্তর একের পর এক বিওপি (বর্ডার আউট পোস্ট)। রাতে, পাচার হওয়ার মুখে, গত ক’দিনে সেই সব বিওপি জওয়ানেরাই আটক করেন গরুগুলি। নিয়ম মেনে, বিএসএফ গরুগুলি তুলে দিয়েছেন শুল্ক দফতরের হাতে।

আটক করার দু-তিন দিনের মধ্যেই শুল্ক কর্তারা নিলাম ডেকে গরু বিক্রি করে দেন— এটাই রীতি। কিন্তু বড় নোট বাতিলের ধাক্কায়, নিলাম ডাকলেও গরু কেনার পাইকারেরা এ মুখো হচ্ছে না। তাঁরা জানাচ্ছেন, বড়সড় একটি গরুর দাম ওঠে কুড়ি থেকে পঁচিশ হাজার টাকা। ছোট-মাঝারি, সাত-দশ হাজারেও বিক্রি হয়। তবে, গত সাত দিনে হিসেবটা বদলে গিয়েছে। স্থানীয় এক পাইকার জানিয়ে দিচ্ছেন, ‘‘ভাল স্বাস্থ্য না হলে গরু কিনে লাভ কী! তা ছাড়া, বড় গরু কিনতে হাজার বিশেক টাকার ধাক্কা। টাকা দেব যে, বড় নোট কোথায়!’’

বিএসএফের এক কর্তা অবশ্য ধরিয়ে দিচ্ছেন, ‘‘আসলে কি জানেন, আমরা রাত জেগে গরু পাচার আটকাচ্ছি, আর সেই গরুই পরের দিন নিলামে কিনে ফের পাচার হয়ে যাচ্ছে বাংলাদেশে।’’ ঠারেঠোরে সে কথা মেনেও নিচ্ছেন শুল্ক কর্তারা।

এখন উপায়?

জয়ন্তবাবুদের এখন বাস্তবিকই উভয় সঙ্কট। নিলাম হচ্ছে না। ফলে ভাঁড়ারে টাকা নেই। তিনি জানান, গরুর খাবারের জোগান সাধারনত নিলামে গরু-বিক্রির টাকা থেকেই খরচ করা হয়। এখন নিজেদেরই পকেটের টাকা খরচ করে গরুর ঘাস-বিচালি জোগাড় করতে হচ্ছে।

জয়ন্তবাবু বলছেন, ‘‘এই অবস্থায়, বিএসএফ নিত্য-রাতে গরু ধরে এনে পুরে দিচ্ছে খোঁয়াড়ে। ‘নেব না’ বলারও জো নেই, কী করি বলুন তো!’’

ঠিকই তো, নোট নেই কিন্তু গরু আছে, চলবে কি করে?

demonetization
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy