মঞ্চে রাজ্যের সমাজকল্যাণ, নারী ও শিশু উন্নয়ন দফতরের সচিব রোশনী সেন বসে। বুধবার তাঁর সামনেই সিআইডি-র পাচারবিরোধী ইউনিটের প্রধান শর্বরী ভট্টাচার্য আক্ষেপ করে বললেন, ‘‘বহু কষ্টে ধরার পরেও যে ভাবে শিশু-কিশোরদের পাচারকারীরা দ্রুত জামিনে মুক্তি পাচ্ছে তাতে পুলিশ হতাশ। তাঁরা উদ্যম হারিয়ে ফেলছে।’’ এই ভাবে চললে কেউ পাচারকারী ধরতে চাইবেন না বলে জানান তিনি।
অনুষ্ঠানস্থল, আমেরিকান সেন্টারের দোতলার সেমিনার হল। সেখানে এ দিন শিশু অধিকার, শিশু পাচার ও শিশু শ্রম-সংক্রান্ত এক আলোচনাসভার আয়োজন করেছিল ‘মুক্তি রিহ্যাবিলিটেশন সেন্টার।’ বক্তা রোশনী সেন, শর্বরী ভট্টাচার্য, মনোচিকিৎসক জয়রঞ্জন রাম এবং নেশা জয় করে সুস্থ জীবনে ফেরা এক সদ্য যুবা মুকেশ মানি।
শিশুরা অন্যের উপর নির্ভরশীল, তাদের ভোটাধিকার নেই, অভিভাবক এবং পরিবার তাকে নিজেদের সম্পত্তি বলে মনে করে বলে এ দিন ব্যাখ্যা করেন রোশনী সেন। তবে অনেক তথ্য-পরিসংখ্যান দিয়ে তাঁর দাবি, শিশু অধিকার রক্ষায় সরকারি পরিকাঠামোর অনেক উন্নতি হয়েছে।
কিন্তু সিআইডি-র শর্বরীদেবী ভিন্ন অভিজ্ঞতার কথা তুলে ধরেছেন। টাটকা উদাহরণ দিয়ে জানিয়েছেন, গত রাতেই কলকাতার বিভিন্ন বার-এ অভিযান চালিয়ে একটি পাচার হয়ে যাওয়া কিশোরীকে উদ্ধার করেছিলেন। দু’জন এজেন্টকে ধরাও হয়েছিল, কিন্তু ২৪ ঘণ্টা কাটার আগেই তারা জামিন পেয়েছে। দুঃখ করে বলেন, ‘‘পাচার চক্রে অনেক টাকা। আমাদের মতো পুলিশের পরিশ্রমের প্রাপ্তি শুধু হতাশা-হেনস্থা। অনেকেই এতে কাজের উদ্যম হারাচ্ছেন।’’
মনোচিকিৎসক জয়রঞ্জন রাম স্পষ্ট বলেন, ‘‘ভারতে শিশু-অধিকার বলে কোনও বস্তুর অস্তিত্ব রয়েছে বলেই আমি বিশ্বাস করি না। সুবিধাপ্রাপ্ত এবং প্রান্তবাসী—কোনও স্তরের শিশুরই অধিকার নেই।’’
তবে আশার আলো যে নিভে যায়নি তা বোঝাতে এক কিশোরীকে নিয়ে এসেছিলেন শর্বরীদেবী। ২০১১-এ বার থেকে এই মেয়েটিকে উদ্ধার করেছিলেন তিনি। রাখা হয়েছিল হোমে। তার সাক্ষ্যেই ৪ বছর পরে শাস্তি হয়েছে কিছু পাচারকারীর।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy