E-Paper

লরির চাপে ক্রমেই বেহাল যশোর রোডের সার্ভিস রোড

কোথাও উড়ালপুলেই জঙ্গল, কোথাও যানজটে নাজেহাল ট্র্যাফিক। বেলঘরিয়া এক্সপ্রেসওয়ে, যশোর রোড এলাকার এই হাল কেন? উত্তর খুঁজল আনন্দবাজার।

প্রবাল গঙ্গোপাধ্যায়

শেষ আপডেট: ১৩ সেপ্টেম্বর ২০২৫ ০৯:২৭
যানজটের কবলে পড়ছে যশোর রোড।

যানজটের কবলে পড়ছে যশোর রোড। —প্রতীকী চিত্র।

মাত্র পাঁচশো থেকে আটশো মিটারের সার্ভিস রোড নিয়েই জটিলতা। সেই রাস্তাই বহু দিন পাকাপোক্ত সংস্কার হয়নি বলে অভিযোগ। যশোর রোডের উপরে বিরাটি কালী মন্দির থেকে বাঁকড়া পর্যন্ত ওই কয়েকশো মিটারের সার্ভিস রোডের বিভিন্ন জায়গা ভেঙে এবড়ো খেবড়ো হয়ে রয়েছে। শুধু তা-ই নয়, রাস্তার কিছু অংশ স্থানীয় পুরসভার পরিত্যক্ত গাড়ি ও নির্মাণ সামগ্রী পড়ে থেকে দখলও হয়ে গিয়েছে। আর সেই সার্ভিস রোডে প্রবেশ করার পরেই লরির গতি কমে যাচ্ছে। যার জেরে প্রতি রাতেই যানজটের কবলে পড়ছে যশোর রোড।

বিধাননগর কমিশনারেটের ট্র্যাফিক বিভাগের অভিযোগ, একাধিক বার বলা সত্ত্বেও পূর্ত দফতর রাস্তা ঠিক করছে না। পূর্ত দফতরের পাল্টা দাবি, তাদের নির্দেশিত রাস্তার বদলে পুলিশ জোর করে ওই সার্ভিস রোডে লরি চালাচ্ছে। যার জেরেই সার্ভিস রোড ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে।

উল্লেখ্য, নির্মাণজনিত ত্রুটির কারণে প্রায় ১৩ তেরো বছর ধরে বেলঘরিয়া এক্সপ্রেসওয়ের উড়ালপুলে লরি চলাচল বন্ধ। তার জেরে উড়ালপুলের নীচে দিয়েই লরি চলাচল করে। বিমানবন্দরের তিন নম্বর গেটের কাছে দক্ষিণেশ্বরের দিক থেকে কলকাতাগামী লরির চলাচলের জন্য তিন নম্বর গেটের কাছে একটি ছোট রাস্তা করেছিল পূর্ত দফতর। কিন্তু ওই পথে লরি চালাতে নারাজ বিধাননগরের ট্র্যাফিক বিভাগ। তাদের যুক্তি, পূর্ত দফতরের মনোনীত রাস্তায় লরি চালালে এয়ারপোর্ট সিটি সংলগ্ন এলাকা দুর্ঘটনাপ্রবণ হয়ে উঠবে। গত বছর ওই এলাকাতেই লরির চাকায় পিষ্ট হয়ে মারা যান এক পরিবারের তিন স্কুটি আরোহী সদস্য।

বিধাননগর ট্র্যাফিকের এক পদস্থ আধিকারিক জানান, রাত ৮টার পর থেকে দক্ষিণেশ্বর থেকে কলকাতামুখী বহু লরি আসতে শুরু করে। তিনি বলেন, ‘‘তিন নম্বর গেটের কাছে পূর্ত দফতরের রাস্তা দিয়ে লরি বার করতে গেলে কলকাতার দিক থেকে বারাসতগামী এবং বারাসত থেকে কলকাতাগামী ট্র্যাফিক বন্ধ রাখতে হবে। তাতে ট্র্যাফিক স্তব্ধ হয়ে যায়। যে কারণে বিরাটি কালী মন্দিরের কাছ থেকে বাঁকড়া অবধি সার্ভিস রোড দিয়ে লরি পাঠাতে হয়। কারণ, ওই জায়গাটিতে বড় লরির ইউ টার্ন করার জায়গা রয়েছে। কিন্তু পূর্ত দফতরের নির্দেশিত জায়গা তত চওড়া নয়।"

ওই সার্ভিস রোডে গিয়ে দেখা গেল, রাস্তা ভেঙে গিয়েছে অনেক জায়গায়। স্থানীয়েরা জানান, বৃষ্টি পড়লে গর্তের গভীরতা বোঝা যায় না। লরি অতি ধীরে চলে। ফলে ট্র্যাফিকও থমকে যায়। স্থানীয়দের অভিযোগ, যশোর রোড, বেলঘরিয়া এক্সপ্রেসওয়ে-সহ সংলগ্ন এলাকার রাস্তা এবং যানবাহন চলাচলে চরম বিশৃঙ্খলা হয়। এক দিকে ওই এলাকায় কলকাতামুখী সার্ভিস রোড মেট্রোর কাজের জন্য দীর্ঘদিন বন্ধ। তার জেরে মানুষ ঝুঁকি নিয়ে যশোর রোডের মতো হাইওয়ে দিয়ে পথ চলতে বাধ্য হন। অন্য দিকে, সার্ভিস রোড দিয়ে লরি চলাচল করে। স্থানীয় বাসিন্দাদের দাবি, বেলঘরিয়া এক্সপ্রেসওয়ের উপরের উড়ালপুল সারাই করে লরি চলাচল করানো গেলে যশোর রোডে যানজট কমতে পারে।

পূর্ত দফতরের দাবি, পুলিশের দাবি মেনে তিন নম্বর গেটের কাছে তারা লরির রাস্তা বার করেছিল। কিন্তু পুলিশ যে সার্ভিস রোড দিয়ে লরি চালাবে, সেটা জানানো হয়নি। এক পদস্থ কর্তা বলেন, ‘‘সার্ভিস রোডে মালবোঝাই অতিকায় লরির চলারই কথা নয়। তা ছাড়া ওই সার্ভিস রোড দখলও হয়ে রয়েছে। সেই রাস্তা জনগণের চলাচলের জন্য। পুলিশে অভিযোগ করেও দখলদার সরানো যায়নি। ফলে সার্ভিস রোড ভেঙেছে।’’ পূর্ত দফতর জানিয়েছে, পুলিশ সার্ভিস রোডে লরি চালালে সেই পরিকল্পনা তাদের জানাতে হবে। তবেই লরি চলার উপযোগী করা হবে।

(শেষ)

(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)

Road condition Traffic

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy