E-Paper

ভিসায় ‘না’ দু’দেশের, উদ্ধারের আশায় বহু পথ পাড়ি

চলতি মাসের প্রথমে ইরানের দামাভান্দ আগ্নেয়গিরি অভিযানে গিয়ে ইরান-ইজ়রায়েল যুদ্ধ পরিস্থিতির কারণে তেহরানে আটকে পড়েন কলকাতার উইমেন্স ক্রিশ্চিয়ান কলেজের ভূগোলের শিক্ষক ফাল্গুনী। এর পরে তেহরান থেকে হাজার কিলোমিটার পথ পাড়ি দিয়ে পৌঁছন আস্তরা সীমান্তে।

স্বাতী মল্লিক

শেষ আপডেট: ২২ জুন ২০২৫ ০৮:৩৬

—ফাইল চিত্র।

টানা চার দিন সীমান্তে অপেক্ষার পরেও ভিসা আবেদনে সাড়া দেয়নি আজারবাইজান। অজানা কারণে ই-ভিসার আবেদন নাকচ করেছে পড়শি দেশ আর্মেনিয়াও। ফলে ইরানে আগ্নেয়গিরি অভিযানে গিয়ে আটকে পড়া কলকাতার কলেজ শিক্ষক ফাল্গুনী দে-র অ্যাডভেঞ্চার পর্ব যেন শেষই হচ্ছে না। এ বার ভিসার আশা ছেড়ে ইরানের অন্য প্রান্তে যেতে গাড়িতে চেপে বসেছেন বছর চল্লিশের ফাল্গুনী। গন্তব্য, ১৬০০ কিলোমিটার দূরে পূর্ব ইরানের মাশহাদ শহর!

শনিবার ফাল্গুনী ফোনে বলেন, “আজারবাইজানের আস্তরা সীমান্তে অনেক ভারতীয়ের ভিসার আবেদন জমা পড়েছে, কিন্তু কাউকে সে ভাবে দেখতে পাইনি। তবে শুনছি, মাশহাদে ইতিমধ্যেই বহু ভারতীয় ভিড় জমিয়েছেন। শুক্রবার বহু ভারতীয়কে সেখান থেকেই বিমানে উদ্ধার করা হয়েছে। ‘অপারেশন সিন্ধু’র অঙ্গ হিসেবে শনিবারও দু’টি বিমানে করে ভারতীয়দের দেশে ফেরার কথা আছে বলে শুনছি। দূতাবাস থেকে শুক্রবার আমায় মাশহাদ যাওয়ার পরামর্শ দেওয়া হয়েছে। তাই ভিসার চক্কর ছেড়ে এ বার যাচ্ছি ইরানের দ্বিতীয় বৃহত্তম শহর মাশহাদের দিকে।”

চলতি মাসের প্রথমে ইরানের দামাভান্দ আগ্নেয়গিরি অভিযানে গিয়ে ইরান-ইজ়রায়েল যুদ্ধ পরিস্থিতির কারণে তেহরানে আটকে পড়েন কলকাতার উইমেন্স ক্রিশ্চিয়ান কলেজের ভূগোলের শিক্ষক ফাল্গুনী। এর পরে তেহরান থেকে হাজার কিলোমিটার পথ পাড়ি দিয়ে পৌঁছন আস্তরা সীমান্তে। কিন্তু সীমান্ত পেরোতে অভিবাসন কোডের প্রয়োজন রয়েছে বলে জানিয়েছিল আজারবাইজান। চার দিন অপেক্ষার পরে ফাল্গুনী জানতে পারেন, সেই কোড পেতে কত দিন লাগবে, জানা নেই! এ দিকে, আর্মেনিয়াও অজ্ঞাত কারণে তাঁর ই-ভিসার আবেদন বাতিল করেছে। ক্ষুব্ধ ফাল্গুনীর কথায়, “যুদ্ধ পরিস্থিতিতে কী করে ভিসা বাতিল হয়, জানি না। শুক্রবার রাত ১টা নাগাদ সেই খবর আসে। এ দিকে তার দু’ঘণ্টা পরেই গাড়িতে ৪৫০ কিলোমিটার দূরে আর্মেনিয়া সীমান্তে যাওয়ার কথা ছিল।” তাঁর দাবি, নানা গুজবের কারণেই তাঁর মতো ইরানে আটকে পড়া বহু ভারতীয় এখনও কোথায় যাবেন, কী ভাবে উদ্ধার হবেন— তা নিয়ে অন্ধকারে। “আমার চেনা অনেক ভারতীয় চার-পাঁচ দিন ধরে আর্মেনিয়া সীমান্তে বসে রয়েছেন, কিন্তু পেরোতে পারছেন না। আমিও যে তেহরান ছেড়ে কখনও আজারবাইজান, কখনও আর্মেনিয়ার কথা ভেবেছি, তার কারণ কোথায় গেলে ইরান ছাড়তে পারব, তা নিয়ে এত দিন কেউই সে ভাবে সহযোগিতা করেননি, দিশা দেখাননি।”— বলছেন ওই কলেজ শিক্ষক।

এমতাবস্থায় ভোর ৩টের গাড়িতে এ বার আর্মেনিয়া সীমান্তের বদলে উল্টো দিকে মাশহাদ শহরে যাচ্ছেন ফাল্গুনী। বলছেন, “হাতে টাকাপয়সা বিশেষ নেই। পর্বতাভিযানের আয়োজক সংস্থাই ফের আমার সহায় হয়েছে, প্রায় ৩২ হাজার টাকার গাড়িভাড়া আপাতত ওরা দিচ্ছে। তবে রাস্তায় চেকপোস্ট, খাবারদাবার, তেল ভরা— নানা কারণে বার বার দাঁড়াতে হচ্ছে। ফলে পৌঁছতে ২০-২২ ঘণ্টা বা তারও বেশি লাগতে পারে।”

(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)

Iran-Israel Conflict

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy