Advertisement
E-Paper

ব্রাত্যের সেই গাড়ি ‘ভঙ্গ করেছে দূষণবিধি’! দাবি এসএফআইয়ের, মালিকের নাম কি কুণাল ঘোষ?

গাড়ি সংক্রান্ত তথ্য জানার একটি নির্দিষ্ট পোর্টাল রয়েছে। সেই পোর্টাল থেকে ব্রাত্যের গাড়ির নথি সংগ্রহ করেছে এসএফআই। অভিযোগ, গাড়িটির দূষণ সংক্রান্ত নথির পুনর্নবীকরণ করা হয়নি।

আনন্দবাজার অনলাইন সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ০২ মার্চ ২০২৫ ১৫:১৩
SFI claims Pollution control validity of Bratya Basu’s car expired

(বাঁ দিক থেকে) যাদবপুরে শিক্ষামন্ত্রী ব্রাত্য বসু। এসএসকেএম হাসপাতালে তাঁর সেই গাড়ি এবং তৃণমূল নেতা কুণাল ঘোষ। —ফাইল চিত্র।

যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ে শনিবার যে গাড়িতে চড়ে গিয়েছিলেন শিক্ষামন্ত্রী ব্রাত্য বসু, সেই গাড়ি দূষণবিধি ভঙ্গ করেছে। গাড়িটির দূষণ সংক্রান্ত নথি পুনর্নবীকরণ করা হয়নি। সাংবাদিক বৈঠক ডেকে এমনটাই দাবি করল বাম ছাত্রসংগঠন এসএফআই। যাদবপুরের ঘটনার জন্য শিক্ষামন্ত্রীকেই দায়ী করেছে তারা। সেই সঙ্গে নথি দেখিয়ে ব্রাত্যের গাড়িটির মালিককে নিয়েও প্রশ্ন তোলা হয়েছে। এসএফআইয়ের সন্দেহ, ওই গাড়ির মালিকের নাম কুণাল ঘোষ হতে পারে।

গাড়ি সংক্রান্ত তথ্য জানার একটি নির্দিষ্ট পোর্টাল রয়েছে। সেই পোর্টালে যে কোনও গাড়ির নম্বর লিখলে তার বয়স, রেজিস্ট্রেশন, জ্বালানির যাবতীয় তথ্য জানা যায়। শুধু গাড়ির মালিকের সম্পূর্ণ নামটি থাকে না। নামের কিছু অংশ চিহ্নের মাধ্যমে গোপন করা থাকে। ব্রাত্যের শনিবারের গাড়িটিতে পশ্চিমবঙ্গ সরকারের নাম লেখা আছে। পোর্টালের নথি অনুযায়ী, ওই গাড়ির দূষণ নিয়ন্ত্রণ নথির বৈধতা ছিল ২০২৪ সালের ২৩ ডিসেম্বর পর্যন্ত। তার পর নথির পুনর্নবীকরণ করা হয়নি। অর্থাৎ, গাড়িটি দূষণবিধি ভঙ্গ করেছে। এ ছাড়াও ওই গাড়ির মালিকের নাম নিয়ে জল্পনা তৈরি হয়েছে। মালিকের নামের জায়গায় লেখা আছে *ইউ*এ* *এইচ*এস*। এসএফআইয়ের দাবি, এটি কুণালের নামের অংশ। বামেদের অনেকে সমাজমাধ্যমে এই বিষয়টি প্রচার করছেন।

এসএফআইয়ের প্রকাশিত সেই গাড়ির নথি।

এসএফআইয়ের প্রকাশিত সেই গাড়ির নথি। ছবি: এসএফআই প্রচারিত।

এসএফআইয়ের এই দাবির প্রেক্ষিতে তৃণমূল নেতা কুণাল ঘোষ বলেন, ‘‘আমার নামে কোনও গাড়ি সরকারি জায়গায় ভাড়া খাটে না। এই গাড়ির মালিকের নাম কী, আমি জানি না। যদি কুণাল ঘোষ হয়, সে আমি নই। আমার ধারণা ব্রাত্যও গাড়ির মালিকের নাম জানবে না। কারণ, এগুলি বিভিন্ন সংস্থার গাড়ি, যা সরকারি দফতরে ভাড়া খাটে। এগুলো সম্পূর্ণ অযৌক্তিক কথা। যাদবপুরে এসএফআই যে গুন্ডামি করেছে, তা ঢাকতে এগুলো বলা হচ্ছে।’’

দীনেশ মজুমদার ভবনে এসএফআইয়ের রাজ্য দফতরে রবিবার সাংবাদিক বৈঠক করা হয়। ছিলেন রাজ্য সম্পাদক দেবাঞ্জন দে, এসএফআই নেত্রী দীধিতি রায়েরা। তাঁদের বক্তব্য, গুন্ডামি ছাত্রেরা করেননি, করেছেন ব্রাত্য নিজে। এক বিক্ষোভরত ছাত্রকে তিনি পিষে দেওয়ার চেষ্টা করেছেন। বিশ্ববিদ্যালয়ে শনিবার যে পরিস্থিতি তৈরি হয়েছিল, তাতে শিক্ষামন্ত্রীই ঘি ঢেলেছিলেন।

যাদবপুরের ঘটনার পর পাঁচটি এফআইআর করেছে পুলিশ। এক জন ছাত্রকে আটক করা হয়েছে। সে প্রসঙ্গে দেবাঞ্জনেরা বলেন, ‘‘১০০টি এফআইআর হতে পারে। তাতে কিছু যায়-আসে না। মধ্যমগ্রাম, কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয় এবং দক্ষিণ কলকাতার বিভিন্ন কলেজ থেকে সমাজবিরোধীদের নিয়ে গিয়ে যাদবপুর দখল করার চেষ্টা করেছিলেন শিক্ষামন্ত্রী। ছাত্রছাত্রীরা তা রুখে দিয়েছেন।’’

শনিবার রাতে কেপিসি হাসপাতালে বিশ্ববিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত উপাচার্য ভাস্কর গুপ্তকে হেনস্থা করা হয় বলে অভিযোগ উঠেছে। দেবাঞ্জন বলেন, ‘‘উপাচার্য তো অনেক কথাই বলছেন। তিনি আসলে পদলোভী। ওঁর পদ স্থায়ী নয়। তাই চেয়ার ধরে রাখতে ওঁকে অনেক কথা বলতে হচ্ছে। আমরা চ্যালেঞ্জ করছি, ওই সময়ের সিসিটিভি ফুটেজ প্রকাশ্যে আনা হোক।’’ রাতে বিশ্ববিদ্যালয়ে তৃণমূলের শিক্ষাকর্মী সংগঠনের অফিসে আগুন লেগে যায়। অভিযোগ, বামপন্থী ছাত্রেরা আগুন লাগিয়েছেন। এসএফআই জানিয়েছে, কে আগুন লাগিয়েছে, তার তদন্ত হোক।

তৃণমূলের শিক্ষক সংগঠনের অনুষ্ঠানে যোগ দিতে যাদবপুরে গিয়েছিলেন ব্রাত্য। অনুষ্ঠান শেষে বেরোনোর সময়ে তাঁর গাড়ি ঘিরে বিক্ষোভ দেখান একদল ছাত্রছাত্রী। যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ে ছাত্র নির্বাচনের দাবি শিক্ষামন্ত্রীর কাছে জানাচ্ছিলেন তাঁরা। অভিযোগ, সেই সময়ে ব্রাত্যের গাড়ি লক্ষ্য করে পাথর ছোড়া হয়। গাড়ির কাচ ভেঙে যায়। শিক্ষামন্ত্রী আহত হন। ছাত্রেরা কেউ কেউ গাড়ির বনেটে উঠে পড়েছিলেন। এসএফআইয়ের অভিযোগ, ছাত্রদের উপর দিয়ে গাড়ি চালিয়ে নিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করেন মন্ত্রী। কয়েক জন জখম হন। পরে ব্রাত্যও এসএসকেএমে যান চিকিৎসার জন্য।

Jadavpur University Kunal Ghosh Bratya Basu
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy