Advertisement
২৫ এপ্রিল ২০২৪

মদন, সুরজিতের বিরুদ্ধে সিবিআই চায় এসএফআইও

সারদা কেলেঙ্কারিতে রাজ্যের মন্ত্রী মদন মিত্র এবং কলকাতার পুলিশ কমিশনার সুরজিৎ করপুরকায়স্থের বিরুদ্ধে সিবিআই তদন্তের সুপারিশ করল কেন্দ্রীয় কর্পোরেট মন্ত্রকের অধীনস্থ সিরিয়াস ফ্রড ইনভেস্টিগেশন অফিস (এসএফআইও)। সংবাদ সংস্থা পিটিআইয়ের খবর, প্রায় এক বছর তদন্তের পরে সম্প্রতি ৫০০ পাতারও বেশি রিপোর্ট পেশ করেছে এসএফআইও।

নিজস্ব প্রতিবেদন
শেষ আপডেট: ১২ নভেম্বর ২০১৪ ০৩:১৬
Share: Save:

সারদা কেলেঙ্কারিতে রাজ্যের মন্ত্রী মদন মিত্র এবং কলকাতার পুলিশ কমিশনার সুরজিৎ করপুরকায়স্থের বিরুদ্ধে সিবিআই তদন্তের সুপারিশ করল কেন্দ্রীয় কর্পোরেট মন্ত্রকের অধীনস্থ সিরিয়াস ফ্রড ইনভেস্টিগেশন অফিস (এসএফআইও)।

সংবাদ সংস্থা পিটিআইয়ের খবর, প্রায় এক বছর তদন্তের পরে সম্প্রতি ৫০০ পাতারও বেশি রিপোর্ট পেশ করেছে এসএফআইও। সেই রিপোর্টে সারদা গোষ্ঠীর অন্তত ১১টি আর্থিক লেনদেন নিয়ে আরও তদন্ত করার প্রয়োজন রয়েছে বলে জানিয়েছে তারা। এই লেনদেনগুলি হয় বেআইনি ভাবে করা হয়েছে, না-হয় কর ফাঁকি দেওয়া হয়েছে, বা ঘুষ দেওয়া হয়েছে। পাশাপাশি, মদনবাবু ও পুলিশ কমিশনারের ভূমিকাও খতিয়ে দেখার প্রয়োজন বলে মনে করেছেন এসএফআইও-র তদন্তকারীরা।

কেন্দ্রীয় সংস্থার এই পর্যবেক্ষণ সম্পর্কে ক্রীড়ামন্ত্রী কোনও প্রতিক্রিয়া জানাতে রাজি হননি। সুরজিৎবাবু ফোনই ধরেননি। জবাব দেননি এসএমএসেরও।

সারদা কেলেঙ্কারিতে গ্রেফতার হওয়া তৃণমূলের সাসপেন্ডেড সাংসদ কুণাল ঘোষ দীর্ঘদিন ধরেই মদনবাবু ও সুরজিৎবাবুর বিরুদ্ধে অভিযোগ করেছেন। সারদার অনুষ্ঠানে উপস্থিত এই দু’জনের ছবিও গোয়েন্দাদের হাতে তুলে দিয়েছেন কুণাল। এসএফআইও তার রিপোর্টে বলেছে, যে হেতু সিবিআই সারদা কেলেঙ্কারির বৃহত্তর দিকটি নিয়ে তদন্ত করছে, তখন তারাই এই অভিযোগ খতিয়ে দেখুক।

সিবিআই মদনবাবুর ঘনিষ্ঠদের ডেকে পাঠিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করার পরে সম্প্রতি ক্রীড়ামন্ত্রীর সঙ্গে মুখ্যমন্ত্রীর একটা দূরত্ব তৈরি হয়েছিল। কার্যত মমতার ছোঁয়াচ বাঁচিয়ে চলছিলেন মদন। যাচ্ছিলেন না মন্ত্রিসভার বৈঠকেও। কিন্তু দিন কয়েক আগেই নিজের বাড়িতে দলীয় নেতাদের সভায় মমতা সারদা প্রসঙ্গ তুলে বলেন, ‘মুকুল চোর, মদন চোর, আমি বিশ্বাস করি না।” তার পর নবান্নে ডেকে পাঠিয়ে মদনের সঙ্গে বৈঠকও করেছেন তিনি। এসএফআইও মদনের বিরুদ্ধে সিবিআই তদন্তের সুপারিশ করার পরে দু’জনের সম্পর্ক ফের কোন দিকে মোড় নেয়, সেটাই দেখার।

বিরোধীরা অবশ্য এসএফআইও-র রিপোর্টকে হাতিয়ার করে শাসক দলকে বিঁধতে শুরু করেছেন। প্রদেশ কংগ্রেস নেতা আব্দুল মান্নান বলেছেন, “সারদা-কাণ্ডে এক একটা তদন্ত সংস্থা যখন ওঁর দলের নেতা-মন্ত্রীর বিরুদ্ধে রিপোর্ট দিচ্ছে, মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় তখন কী করে তাঁদের ক্লিন চিট দিচ্ছেন, তা বুঝতে পারছি না! আসলে ওঁরা এক ডুবন্ত নৌকোয় রয়েছেন। সেখানে বাঁচার জন্য একে অপরকে জড়িয়ে ধরছেন।”

বিজেপির রাজ্য সভাপতি রাহুল সিংহ বলেন, “আমি এসএফআইও-র বক্তব্যের সঙ্গে একমত। এই নামগুলো তো প্রকাশ্যে এসেই গিয়েছে। ফলে এঁদের বিরুদ্ধে উপযুক্ত পদক্ষেপ করা উচিত।” আর সিপিএম নেতা মহম্মদ সেলিমের কটাক্ষ, “মুখ্যমন্ত্রী যখন প্রথম বলেছিলেন মদন চোর, মুকুল চোর, তখন সেটা ছিল প্রশ্নবোধক। পরে হল বিস্ময়বোধক! আর এখন একেবারে দাঁড়ি টেনে দিচ্ছেন। উনি বিশ্বাস করেন না এঁরা এঁরা চোর! এঁদের দিকে আরও আঙুল উঠবে জেনেই কি ওঁর এই চেষ্টা?”

রাজ্য পুলিশের কাছ থেকে অনেক চেষ্টা করেও ‘উপযুক্ত সহযোগিতা’ পাওয়া যায়নি বলেও তাদের রিপোর্টে অভিযোগ করেছে এসএফআইও।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE