Advertisement
০৩ মে ২০২৪
West Bengal Ration Distribution Case

বালুর মতো আরও নেতার কালো টাকা সাদা করেছেন শঙ্কর! ইডির হাতে হিসাব হাজার হাজার কোটি টাকার

সোমবার কলকাতার বেশ কিছু এলাকায় শঙ্করের এই সমস্ত বিদেশি মুদ্রা বিনিময় সংস্থার দফতরে তল্লাশি অভিযান শুরু করেছে ইডি। এর আগেও গত ৫ জানুয়ারি শঙ্করের কিছু সংস্থার নথিপত্র খতিয়ে দেখেছে তারা।

গ্রাফিক— শৌভিক দেবনাথ।

আনন্দবাজার অনলাইন সংবাদদাতা
কলকাতা শেষ আপডেট: ১৫ জানুয়ারি ২০২৪ ১২:৫৩
Share: Save:

হাজার হাজার কোটির দুর্নীতির কালো টাকা ‘সাদা’ করার কাজ করত বনগাঁর প্রাক্তন পুরপ্রধান শঙ্কর আঢ্যের সংস্থা! রেশন দুর্নীতির তদন্তে নেমে এমনটাই সন্দেহ করছে ইডি। তদন্তে শঙ্করের নামে ৯০টি বিদেশি মুদ্রা বিনিময় সংস্থার হদিশ পেয়েছে কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা। ইডির সন্দেহ, এই সমস্ত সংস্থায় মন্ত্রী জ্যোতিপ্রিয় মল্লিক (যিনি বালু নামে সমধিক পরিচিত) তো বটেই, এ ছাড়াও আরও অনেক প্রভাবশালী টাকা ঢালতেন এবং কালো টাকা সাদা করতেন।

কী ভাবে চালিত হত এই প্রক্রিয়া? তদন্তে পাওয়া নথিপত্র থেকে ইডির ধারণা, শঙ্করের এই সংস্থাগুলিতে কম করে ২০ হাজার কোটি টাকা জমা পড়েছে বিদেশি মুদ্রায় বদল করানোর জন্য। এর মধ্যে ৯-১০ হাজার কোটি টাকা একা মন্ত্রী জ্যোতিপ্রিয়ের। ইডি সূত্রে খবর, বাকি টাকা কারা জমা করছেন, কী তাঁদের পরিচয়, বিদেশে যাচ্ছেন কি না, গেলে কোথায় যাচ্ছেন, তার কোনও যথাযথ নথি নেই। নেই পাসপোর্টের তথ্যও। ইডির ধারণা, অনামী এই সমস্ত লেনদেন হয়েছে প্রভাবশালীদের আড়ালে রেখেই।

সোমবার কলকাতার বেশ কিছু এলাকায় শঙ্করের এই সমস্ত বিদেশি মুদ্রা বিনিময় সংস্থার দফতরে তল্লাশি অভিযান শুরু করেছে ইডি। এর আগেও গত ৫ জানুয়ারি শঙ্করের কিছু সংস্থার নথিপত্র খতিয়ে দেখেছে তারা। কথা বলেছে নিজের পরিচয় গোপন রাখতে চাওয়া এক সাক্ষীর সঙ্গেও। ইডি সূত্রে জানা গিয়েছে, সেই সাক্ষীই এই বিদেশি মুদ্রা বিনিময় সংক্রান্ত বহু তথ্য দিয়েছেন ইডিকে।

ইডি জানতে পেরেছে, জ্যোতিপ্রিয়ের ৯-১০ হাজার কোটি টাকার বদলে সমমূল্যের বিদেশি মুদ্রা দেওয়া হয়েছিল। এর মধ্যে ২ হাজার কোটি টাকা বিদেশের সংস্থায় বিনিয়োগও করা হয়েছিল। ইডি সূত্রে খবর, বেআইনি ভাবে এই ২০০০ কোটি টাকা দুবাইয়ে পাঠানো হয়েছিল। কিছু টাকা সরাসরিই দুবাইয়ে পাঠানো হয়। বাকিটা যায় বাংলাদেশ হয়ে ঘুর পথে।

পরিচয় গোপন রাখা ওই সাক্ষী জানিয়েছেন, যে সমস্ত সংস্থা মারফৎ এই কাজ হয়েছে, তার সবক’টিরই সরাসরি নিয়ন্ত্রণ ছিল শঙ্করের হাতে। এর মধ্যে ‘আঢ্য ফোরেক্স প্রাইভেট লিমিটেড’ নামের একটি সংস্থায় এক লপ্তে ২,৭০০ কোটি টাকার নগদ অর্থকে বিদেশি মুদ্রায় বদলে দেওয়া হয়েছে।

ফলে আপাতত দেখার সোমবারের তল্লাশি অভিযানে মন্ত্রী জ্যোতিপ্রিয় ছাড়া আর কোনও প্রভাবশালীর নাম প্রকাশ্যে আসে কি না। কারণ, সে ক্ষেত্রে দুর্নীতির তদন্তের আবার নতুন একটি দিশা খুলে যেতে পারে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE