Advertisement
১১ মে ২০২৪
TMC

Shantipur College: অধ্যক্ষের চেয়ারে তৃণমূল বিধায়ক, বিতর্ক মর্যাদার

শান্তিপুর কলেজ সূত্রে জানা যায়, দীর্ঘ দিন পরে গত ১৮ মে সেখানে পরিচালন সমিতি গঠিত হয় এবং তার সভাপতি মনোনীত হন স্থানীয় তৃণমূল বিধায়ক।

শান্তিপুর কলেজে অধ্যক্ষের চেয়ারে বসে তৃণমূল বিধায়ক ব্রজকিশোর গোস্বামী, পাশে সোফায় অধ্যক্ষ চন্দ্রিমা ভট্টাচার্য।

শান্তিপুর কলেজে অধ্যক্ষের চেয়ারে বসে তৃণমূল বিধায়ক ব্রজকিশোর গোস্বামী, পাশে সোফায় অধ্যক্ষ চন্দ্রিমা ভট্টাচার্য। ছবি: সমাজমাধ্যম থেকে।

নিজস্ব প্রতিবেদন
কলকাতা শেষ আপডেট: ২৭ মে ২০২২ ০৬:০৬
Share: Save:

কলেজে অধ্যক্ষের চেয়ারে বসে তৃণমূল বিধায়ক আর পাশে সোফায় বসে অধ্যক্ষ। এমন একটি ছবি সমাজমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়তেই বিতর্ক দানা বেঁধেছে।

ছবিটি নদিয়ার শান্তিপুর কলেজের। গত ১৮ মে তোলা ওই ছবিতে দেখা যাচ্ছে, অধ্যক্ষের চেয়ারে বসে রয়েছেন শান্তিপুরের তৃণমূল বিধায়ক তথা কলেজের সদ্য মনোনীত সভাপতি ব্রজকিশোর গোস্বামী। আর অধ্যক্ষ চন্দ্রিমা ভট্টাচার্য হাসি-মুখে বসে আছেন পাশেই একটি সোফায়। শিক্ষক ও অধ্যাপক মহলের বড় অংশ মনে করছেন, অধ্যক্ষের আসন প্রতিষ্ঠানের মর্যাদা বহন করে, বিধায়ক বসায় তার মর্যাদাহানি হয়েছে। শোরগোল রাজনৈতিক মহলেও।

এক সময়ে তৃণমূলের চিকিৎসক-বিধায়ক নির্মল মাজিকেও দিনের পর দিন কলকাতা মেডিক্যাল কলেজের অধ্যক্ষের চেয়ারে বসতে দেখা যেত, অধ্যক্ষ বসতেন পাশে একটি চেয়ারে। এই নিয়ে ব্যাপক শোরগোলও হয়েছিল। শান্তিপুর কলেজ সূত্রে জানা যায়, দীর্ঘ দিন পরে গত ১৮ মে সেখানে পরিচালন সমিতি গঠিত হয় এবং তার সভাপতি মনোনীত হন স্থানীয় তৃণমূল বিধায়ক। সেই সভার পরে অধ্যক্ষের ঘরে কিছুক্ষণ বসেছিলেন তাঁরা। তখনই ওই ছবিটি তোলা হয়েছিল। শান্তিপুর কলেজের অধ্যক্ষ চন্দ্রিমা ভট্টাচার্যের দাবি, ‘মানবিক কারণে’ তিনি বিধায়ককে নিজের চেয়ারে বসতে দিয়েছিলেন। তাঁর ব্যাখ্যা, “সে দিন প্রচণ্ড গরম ছিল। আমার ঘরের এসি-ও সমস্যা করছিল। বিধায়ক অস্বস্তি বোধ করছিলেন গরমে। আমি যে চেয়ারে বসি, তার মাথার উপরেই সিলিং ফ্যান রয়েছে। তাই আমি পাশে সরে গিয়ে ওঁকে আমার চেয়ারে বসতে অনুরোধ করি।”

ছবিতে অবশ্য বিধায়কের ‘অস্বস্তি’ তেমন দৃশ্যমান নয়, বরং তিনি বেশ খোশমেজাজেই সামনে কারও সঙ্গে কথা বলছেন। ব্রজকিশোরের কথায়, “অধ্যক্ষ আমায় বারবার অনুরোধ করছিলেন, তা ফেলতে না পেরে আমি ওঁর আসনে বসি। কারও অমর্যাদা করার ইচ্ছা আমার ছিল না।’’ অধ্যক্ষদের সংগঠন অল বেঙ্গল প্রিন্সিপ্যালস’ কাউন্সিলের কল্যাণী বিশ্ববিদ্যালয় ইউনিটের সভানেত্রী সোমা মুখোপাধ্যায়ের মতে, “কোনও জরুরি পরিস্থিতি তৈরি হলে অন্য কথা। তবে অধ্যক্ষের চেয়ার তাঁর জন্যই নির্দিষ্ট। সেখানে অন্য কারও বসার কথা নয়।’’

এই প্রসঙ্গে বিজেপির রাজ্য সভাপতি সুকান্ত মজুমদার বলেন, ‘‘এর আগে ভাঙড়ের তৃণমূল নেতা আরাবুল ইসলাম অধ্যাপিকাকে জলের মগ ছুড়ে মেরেছিলেন বলে অভিযোগ। স্বাভাবিক, তৃণমূল শিক্ষকদের সম্মান করে না। উল্টে ডিএ চাইলে বলে ঘেউ ঘেউ করবেন না! সেই তৃণমূল কংগ্রেসের বিধায়কের কাছ থেকে এর থেকে ভাল কিছু আর আশা করা যায় না।’’ সিপিএমের কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য সুজন চক্রবর্তীর মন্তব্য, ‘‘ন্যূনতম কাণ্ডজ্ঞান, পরম্পরা ও সৌজন্যের বোধ থাকলে কেউ এমন করে না। বিধায়ক হলেই কলেজে গিয়ে অধ্যক্ষের চেয়ারে বসে পড়া যায়? মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সরকারের আমলে দুনিয়ার সব হচ্ছে!’’ আর তৃণমূলের মুখপাত্র কুণাল ঘোষের বক্তব্য, “কখনও কখনও ভিন্ন পরিস্থিতি তৈরি হয়ে যায় ঠিকই। তবে এটাও ঠিক যে কিছু চেয়ার থাকে যা কেবল পদাধিকারীর জন্যই নির্দিষ্ট‌। সেটা মান্য করে চলাই উচিত।” যদিও এ নিয়ে বিতর্কের কিছু দেখছেন না তৃণমূলের বিশ্ববিদ্যালয় ও কলেজ শিক্ষক সংগঠন ওয়েবকুপা-র নদিয়া জেলা সভাপতি সোমনাথ বন্দ্যোপাধ্যায়। তাঁর ব্যাখ্যা, “পরিচালন সমিতির সভাপতি কলেজের সর্বোচ্চ পদাধিকারী, তিনিই অধ্যক্ষকে নিয়োগ করেন। আর এখানে তো অধ্যক্ষ স্বেচ্ছায় তাঁর চেয়ারে বিধায়ককে বসতে দিয়েছেন।”

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

TMC shantipur college TMC MLA
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE