Advertisement
২০ এপ্রিল ২০২৪

দমবন্ধ পরিবেশ, সরে গেলেন শাঁওলি

বামফ্রন্ট সরকারকে ‘পরিবর্তনে’র লড়াইয়ে বিদ্বজ্জন হিসাবে শরিক হয়েছিলেন শাওঁলিদেবী। নতুন সরকার ক্ষমতায় আসার পরে ২০১২ সাল থেকে আকাদেমির সভাপতির দায়িত্ব সামলেছেন তিনি।

শাঁওলী মিত্র

শাঁওলী মিত্র

নিজস্ব সংবাদদাতা
কলকাতা শেষ আপডেট: ০৮ জানুয়ারি ২০১৮ ০৩:২৮
Share: Save:

কাজ করতে না পারার কারণ দেখিয়ে পশ্চিমবঙ্গ বাংলা আকাদেমির সভাপতির পদ থেকে অব্যাহতি চাইলেন শাঁওলি মিত্র। মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে গত মাসেই পদত্যাগপত্র পাঠিয়ে দিয়েছেন তিনি।

বামফ্রন্ট সরকারকে ‘পরিবর্তনে’র লড়াইয়ে বিদ্বজ্জন হিসাবে শরিক হয়েছিলেন শাওঁলিদেবী। নতুন সরকার ক্ষমতায় আসার পরে ২০১২ সাল থেকে আকাদেমির সভাপতির দায়িত্ব সামলেছেন তিনি। এই কয়েক বছরে বেশ কিছু বই প্রকাশ করে নজিরও গড়েছে আকাদেমি। এখন তা হলে কী কারণে সরে দাঁড়ালেন তিনি?

শাঁওলিদেবী রবিবার বলেন, ‘‘আমার কোনও ইগো নেই। আমি শুধু ভালবেসে কাজ করতে চাই। কিন্তু সেটাও যদি করতে না পারি, তা হলে সেই কাজের প্রতি আগ্রহ হারিয়ে ফেলি। ক্রমশই এখানে আমার ক্ষেত্রে দমবন্ধ করা পরিবেশ তৈরি হচ্ছিল। তাই বাধ্য হয়েই এই পদ ছাড়লাম।’’ রাজ্য সরকার তথা শাসক পক্ষের সঙ্গে তাঁর দূরত্ব যে বাড়ছিল, সে কথাও নিজেই বলেছেন শম্ভু মিত্রের কন্যা। তাঁর কথায়, ‘‘গত এক-দুই বছর ধরে রাজ্য সরকারের সঙ্গে এই ভবনের দূরত্ব বাড়ছিল। সেটা কেন জানি না। সরকারের এ রকম কোনও সিদ্ধান্ত হয়েছে কি না, সেটাও জানা নেই! যাই হোক, কাজ করাটা কঠিন হয়ে পড়ছিল।’’

আরও পড়ুন: সচিনের মেয়েকে বিয়ের প্রস্তাব, শ্রীঘরে মহিষাদলের যুবক

শাসক শিবিরের একটি সূত্রের খবর, কর্মী নিয়োগ থেকে শুরু করে বেশ কয়েকটি ক্ষেত্রে শাসক পক্ষের সঙ্গে মতান্তর হচ্ছিল আকাদেমির সভাপতির। পরিবর্তনের লড়াই থেকে তৃণমূলে এসে মন্ত্রী হওয়া ব্রাত্য বসু বা সাংসদ অর্পিতা ঘোষেরা কেউ এ দিন অবশ্য মুখ খুলতে চাননি। তবে এক বিদ্বজ্জনের কথায়, ‘‘পরিবর্তনের আন্দোলন সেই সময়ে জরুরি ছিল। কিন্তু সৃষ্টিশীল যে কোনও মানুষই একটু নিজের মতো করে কাজ করতে ভালবাসেন। শাসকের পছন্দ-অপছন্দের সঙ্গে সব সময় তাঁর মত না-ই মিলতে পারে।’’

শাঁওলিদেবীর সময় কালে রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর ও বঙ্কিমচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়ের বহু রচনা প্রকাশিত হয়েছে। গত বছর বইমেলায় আকাদেমির তরফে ১২টি বই প্রকাশ হয়েছিল। কিন্তু এ বছর একটিও বই প্রকাশ হওয়ার মতো অবস্থায় নেই বলেই খবর। আকাদেমির কাজ যে ভাবে পদে পদে থমকে যাচ্ছে, তা নিয়ে শাঁওলিদেবী তাঁর অসন্তোষের কথা ঘনিষ্ঠ মহলে জানিয়েছেন। তিনি। তবে তিন সপ্তাহ আগে মুখ্যমন্ত্রীকে পদত্যাগপত্র পাঠানোর পরেও সরকারের তরফে কেউ তাঁর সঙ্গে যোগাযোগ না করায় জল্পনা বেড়েছে।

রাজ্যের অন্যতম এক শীর্ষ মন্ত্রী অবশ্য বলছেন, ‘‘পদত্যাগের চিঠিতে উনি অসুস্থতার কথা বলেছেন। অন্য কিছু তো সেখানে বলেননি!’’ যদিও শাঁওলিদেবীর বক্তব্য, ‘‘ওঁরা হয়তো ঠিক জানেন না! যা জানানোর, আমি মুখ্যমন্ত্রীকে জানিয়েছি।’’

নবান্নের শীর্ষ সূত্রের আরও বক্তব্য, সরকার কাউকে দায়িত্ব থেকে সরায়নি। কেউ ব্যক্তিগত কারণে দায়িত্ব ছাড়তেই পারেন। সে ক্ষেত্রে সরকার উপযুক্ত সময়ে এ বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেবে। তাড়াহুড়ো করার প্রয়োজন দেখছে না নবান্ন।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE