শুক্রবার ছিল তাঁর জন্মদিন। আর সে দিনই কলকাতার পড়ুয়াদের সঙ্গে আন্তর্জাতিক মহাকাশকেন্দ্রে তাঁর অভিজ্ঞতা ভাগ করে নিলেন শুভাংশু শুক্ল।
জন্মদিনে সিআইএসসিই বোর্ডের পড়ুয়াদের সঙ্গে ইউটিউবে ওয়েবেনারে যোগ দিতে অনুরোধ করেছিলেন বোর্ডের সচিব জোসেফ ইমানুয়েল। তাতে সাড়া দিয়ে এক ঘণ্টারও বেশি পড়ুয়াদের সঙ্গে সময় কাটান শুভাংশু। জানান, তিনিও লখনউয়ে সিআইএসসিই বোর্ডেরই স্কুলে পড়াশোনা করছেন। পড়ুয়াদের সঙ্গে কথা বলতে বলতে তাঁর মনে হয়েছে যেন স্কুলজীবনে ফিরে গিয়েছেন।
পড়ুয়াদের প্রশ্নের জবাবে তিনি জানান, টানা মহাকাশকেন্দ্রে কাটানোর পর তাঁর শরীরে কী কী পরিবর্তন হয়েছে। বলেছেন, ‘‘মাধ্যাকর্ষণের টান ছিল না, তাই স্পেস স্টেশনে একটা পেন হাত থেকে ফেলে দিয়ে দেখলাম, সেটি মহাশূন্যে ভাসছে। আবার যখন মাধ্যাকর্ষণে ফিরে এলাম, তখন অভ্যস্থ হতে সময় লেগেছিল। পৃথিবীতে ফিরে আসার পরে এক দিন চায়ের কাপ ভাসবে ভেবে ভুল করে ফেলে দিয়েছিলাম। সেটি গেল ভেঙে।’’ মহাকাশচারীর বক্তব্য, ‘‘আকাশ থেকে পৃথিবীকে দেখে কোন দেশ বা শহরে আমার নিজের বাড়ি, এমন ভাবনা মাথায় আসেনি। মনে হচ্ছিল গোটা পৃথিবীই আমার বাড়ি। তবে ভারতকে দেখে মনে হয়েছিল, রাকেশ শর্মার সেই উক্তি। নিজের দেশ সম্পর্কে ভারতের প্রথম মহাকাশচারী রাকেশ বলেছিলেন, ‘সারে জঁহাসে আচ্ছা।’ আমারও সেরকমই মনে হয়েছিল। আমাদের দেশই সবার থেকে সুন্দর।’’
পড়ুয়াদের উদ্দেশে শুভাংশু বলেন, ‘‘সফল হওয়ার কোনও নির্দিষ্ট রাস্তা নেই। তবে একটা রাস্তা সবার ক্ষেত্রেই এক। তা হল, কখনও চেষ্টা থামালে চলবে না। একবারে না হলে বারবার চেষ্টা করে যেতে হবে। সাফল্য আসবেই। পরিবর্তনের সঙ্গে নিজেকে মানিয়ে নাও। পরিবর্তনকে গ্রহণ করো। শৃঙ্খলা জরুরি। নিজের উপর বিশ্বাস রেখে এগিয়ে যাও।’’ এক পড়ুয়ার প্রশ্নে শুভাংশু বলেন, ‘‘বড় কিছু করার স্বপ্ন দেখো। আমি অবশ্য ছোট থেকে মহাকাশচারী হওয়ার স্বপ্ন দেখিনি। কিন্তু আমার কাজ যে ভাবে এগিয়েছে, আরও ভাল কিছু করার স্বপ্ন দেখেছি। এই ভাবেই মহাকাশচারী হয়েছি।’’ লা মার্টিনিয়ার থেকে শুরু করে ন্যাশনাল ইংলিশ স্কুল— কলকাতার বেশ কিছু স্কুলের পড়ুয়ারা শুভাংশুর এই ওয়েবিনারে যোগ দিয়েছিল। তাদের অনেকে জানাল, শুভাংশুর সঙ্গে সময় কাটানোর পরে মনে হচ্ছে, স্বপ্নকে ছুঁতে পারবে তারাও।
এই খবরটি পড়ার জন্য সাবস্ক্রাইব করুন
5,148
1,999
429
169
(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)