Advertisement
E-Paper

বিক্ষিপ্ত গোলমাল, তবে নিয়ন্ত্রণে আসছে পরিস্থিতি

বারাসতে নিজের দফতর থেকে গোটা পরিস্থিতির উপর নজর রাখছেন জেলাশাসক অন্তরা আচার্য। এ দিন তিনি বলেন, ‘‘যেখানে সমস্যার খবর পাওয়া যাচ্ছে, বিশেষ গুরুত্ব দিয়ে সেখানে সঙ্গে সঙ্গেই বাহিনী পাঠানো হচ্ছে। সাধারণ মানুষকে আতঙ্কিত না হতে অনুরোধ করছি। পরিস্থিতির অনেকটাই উন্নতি হয়েছে।’’

নিজস্ব প্রতিবেদন

শেষ আপডেট: ০৫ জুলাই ২০১৭ ১৯:৪৪
দত্তপুকুরে চলছে ট্রেন অবরোধ।—নিজস্ব চিত্র।

দত্তপুকুরে চলছে ট্রেন অবরোধ।—নিজস্ব চিত্র।

বসিরহাটের উত্তেজনা মহকুমা ছাড়িয়ে ছড়িয়ে পড়েছিল উত্তর ২৪ পরগনার বিস্তীর্ণ অঞ্চলে। বুধবার জেলা প্রশাসন জানিয়ে দিল পরিস্থিতির কিছুটা হলেও উন্নতি হয়েছে। তবে, নতুন করে বেশ কিছু জায়গায় উত্তেজনা ছড়িয়েছে। জেলার বিভিন্ন জায়গায় নামানো হয়েছে প্যারামিলিটারি বাহিনী। জেলা পুলিশের পাশাপাশি পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে কাজ করছে র‌্যাফও। বাহিনীর সঙ্গে বেশ কিছু জায়গায় তাণ্ডবকারীদের সংঘর্ষও হয়েছে। ঘটনায় আহত হয়েছেন বেশ কয়েক জন।

বারাসতে নিজের দফতর থেকে গোটা পরিস্থিতির উপর নজর রাখছেন জেলাশাসক অন্তরা আচার্য। এ দিন তিনি বলেন, ‘‘যেখানে সমস্যার খবর পাওয়া যাচ্ছে, বিশেষ গুরুত্ব দিয়ে সেখানে সঙ্গে সঙ্গেই বাহিনী পাঠানো হচ্ছে। সাধারণ মানুষকে আতঙ্কিত না হতে অনুরোধ করছি। পরিস্থিতির অনেকটাই উন্নতি হয়েছে।’’ জেলা পরিষদের কার্যালয়ে বসে পরিস্থিতির দিকে নজর রেখেছেন রাজ্যের মন্ত্রী তথা জেলা তৃণমূলের সভাপতি জ্যোতিপ্রিয় মল্লিক। বসিরহাটে এ দিন জয় বন্দ্যোপাধ্যায়ের মতো বিজেপি নেতাদেরও দেখা গিয়েছে।

আরও পড়ুন: বুথে বুথে শান্তিবাহিনী গড়ার নির্দেশ, আরও যা যা বললেন মুখ্যমন্ত্রী...

আরও পড়ুন: বুথে বুথে শান্তিবাহিনী গড়ার নির্দেশ, আরও যা যা বললেন মুখ্যমন্ত্রী...

তবে, যেখান থেকে এই পরিস্থিতির সূত্রপাত সেই বাদুড়িয়া কিন্তু এ দিন ছিল কার্যত শান্ত। এখানে নতুন করে কোনও গণ্ডগোলের খবর পাওয়া যায়নি। শান্ত ছিল হাড়োয়া, হাসনাবাদ স্বরূপনগরের মতো জায়গা। কিন্তু, বারে বারেই উত্তপ্ত হয়ে উঠেছে বসিরহাট শহর লাগোয়া বেশ কিছু জায়গা। জেলার বিভিন্ন জায়গা থেকে কার্যত বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছে এই মহকুমা। এ দিন গোটা শহর এবং তার আশপাশের এলাকা কার্যত বন্‌ধের চেহারা নেয়। বাস, ট্রেন-সহ কোনও যানবাহনই চলাচল করেনি। স্কুল-কলেজের পাশাপাশি বন্ধ ছিল সমস্ত অফিস-আদালতও।

অন্য দিকে, বারাসত মহকুমার দত্তপুকুর, অশোকনগরে দুই গোষ্ঠীর লোকজনই ট্রেন অবরোধ করে। মধ্যমগ্রাম এবং নীলগঞ্জের পাশাপাশি বিক্ষিপ্ত ভাবে বেশ কিছু জায়গায় রাস্তা অবরোধ করা হয়। নিত্যযাত্রীদের পাশাপাশি ভোগান্তিতে পড়েন সাধারণ মানুষও। তবে, যেখান থেকেই গণ্ডগোলের খবর পাওয়া গিয়েছে, এ দিন সেখানেই ছুটে গিয়েছে প্যারামিলিটারি বাহিনী এবং পুলিশ। অবরোধ তুলে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনার চেষ্টা হয়েছে। তবে, এ দিন বিকেল পর্যন্ত পূর্ব রেলের বনগাঁ এবং হাসনাবাদ শাখায় ট্রেন চলাচল স্বাভাবিক হয়নি।

বসিরহাটের রামনগরে এ দিন গোষ্ঠী সংঘর্ষের খবর পেয়ে বাহিনী পৌঁছয়। সেখানে তাণ্ডবকারীদের সঙ্গে তাদের প্রায় আধ ঘণ্টা সংঘর্ষ হয়। তাণ্ডবকারীদের ছত্রভঙ্গ করতে পুলিশ কাঁদানে গ্যাস ছোড়ে। তাদের ধাওয়া করে পাইকপাড়া পর্যন্ত নিয়ে যায় বাহিনী। ওই ঘটনায় বসিরহাটের এসডিপিও, এক জন পুলিশ এবং এক জন র‌্যাফ কর্মী গুরুতর আহত হন। পাশাপাশি আহত হন তাণ্ডবকারীদের ১৮ জন। তাঁদের সকলকে বসিরহাট স্টেট জেনারেল হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। পুলিশের দাবি, তাদের গোটা দশেক গাড়ি ভাঙচুর করা হয়েছে।

তাণ্ডবের কারণে শহরেরই গোয়ালপোতায় ত্রাণ শিবিরে আশ্রয় নিয়েছেন পশ্চিম দন্ডিরহাটের প্রায় ২৫০ জন। সেখানে এ দিন দুই গোষ্ঠীর তরফেই দুপুরের খাওয়ার ব্যবস্থা করা হয়। অন্য দিকে, বসিরহাট শহরের ট্যাঁটরা বাজার, ভ্যাবলা এবং মায়ের বাজারে নতুন করে গণ্ডগোল হয়। সেখানে বিভিন্ন ব্যাঙ্কেও হামলা চালায় তাণ্ডবকারীরা।

এই তাণ্ডবের ঘটনায় প্রচুর বহিরাগত জেলায় ঢুকে পড়েছে বলে এ দিন পুলিশ জানিয়েছে। বাইরে থেকে যাতে কেউ গণ্ডগোল পাকাতে ঢুকে পড়তে না পারে, সে জন্য জেলার বিভিন্ন এন্ট্রি পয়েন্ট নাকাবন্দি রয়েছে। জেলার বিস্তীর্ণ অঞ্চলে বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে ইন্টারনেট এবং ওয়াইফাই পরিষেবাও।

Basirhat Mamata Banerjee Violence বসিরহাট
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy