সঙ্কীর্ণ: স্কাইওয়াকের কাজের জন্য যানজট। মঙ্গলবার, দক্ষিণেশ্বরে। ছবি: সজল চট্টোপাধ্যায়।
উন্নয়ন আর বৃষ্টির জোড়া ফলায় কার্যত নাভিশ্বাস উঠছে দক্ষিণেশ্বরের!
নির্মীয়মাণ স্কাইওয়াকের কাজের জন্য এমনিতেই রাস্তার কিছুটা অংশ ব্যবহার করা যাচ্ছে না। তার উপরে সঙ্কীর্ণ রাস্তায় পথচারী ও যানবাহনের জট নিত্যসঙ্গী হয়ে উঠেছে পিডব্লিউডি রোড ও ঠাকুর রামকৃষ্ণ পরমহংস রোডে। বর্ষা শুরু হতেই খন্দপথের পাশাপাশি জল-কাদার জেরে সেই সমস্যা আরও কয়েক গুণ বেড়েছে।
মঙ্গলবার সকাল থেকে দক্ষিণেশ্বর আইল্যান্ডের যানজটের জের বালি ব্রিজ পার করে পৌঁছে গিয়েছিল প্রায় বালিঘাট স্টেশন পর্যন্ত। আর সেই জট ছাড়াতে গিয়ে কালঘাম ছুটেছে ডানলপ ট্র্যাফিক গার্ডের পুলিশকর্মীদেরও। তবে বেলা বাড়ার সঙ্গে বৃষ্টির রেশ কমে রাস্তার কাদা শুকনোয় সমস্যা কিছুটা হলেও মিটেছে বলে এ দিন দুপুরে দাবি করেন এক পুলিশকর্মী।
তবে এলাকাবাসীর অভিযোগ, এ সমস্যা এক দিনের নয়। স্কাইওয়াকের কাজের জন্য দীর্ঘদিন ধরেই এমন যানজট চলছে সকাল থেকে রাত পর্যন্ত। কাজ শেষের নির্দিষ্ট সময়সীমাও বেশ কয়েক বার পেরিয়ে গিয়েছে। গত সোমবারই বিধানসভার প্রশ্নোত্তর পর্বে কামারহাটির সিপিএম বিধায়ক মানস মুখোপাধ্যায় জানতে চান, কবে নাগাদ স্কাইওয়াক চালু হবে? উত্তরে রাজ্যের পুরমন্ত্রী ফিরহাদ হাকিম জানান, কাজ শেষের পথে। এ বছরই চালু করার চেষ্টা চলছে। তবে প্রশাসন সূত্রের খবর, শেষ মুহূর্তের খুঁটিনাটি কাজ করে সেপ্টেম্বরেই স্কাইওয়াক উদ্বোধন করবেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। দক্ষিণেশ্বর মন্দিরের অছি ও সম্পাদক কুশল চৌধুরী বলেন, ‘‘উন্নয়নের কাজে একটু তো সময় লাগবেই। কাজ প্রায় ৯০ শতাংশ শেষ। মহালয়া, গণেশ চতুর্থীর মতো শুভ দিনে স্কাইওয়াক চালু হবে বলে আশা করছি।’’
স্কাইওয়াক নির্মাণকারী সংস্থা সূত্রের খবর, লিফট, চলমান সিঁড়ি— সবই বসানো হয়ে গিয়েছে। উপরে দোকানঘরও তৈরি। এক হাজার টন ইস্পাত ব্যবহার করা হয়েছে গোটা কাজে। এখন স্কাইওয়াকের উপরে গম্বুজাকৃতি কাঠামোয় পলিকার্বন শিট লাগানোর কাজ চলছে। কতটা ভার ওই স্কাইওয়াক নিতে পারবে, তা-ও পরীক্ষা করা হয়েছে। ওই সংস্থার এক কর্তা জানান, স্কাইওয়াকের প্রতি ১০ বর্গফুট জায়গায় ৬০০ কেজি চাপানো যাবে। অর্থাৎ, সব মিলিয়ে এক সঙ্গে প্রায় কুড়ি হাজার মানুষের ভার বহন করতে পারবে স্কাইওয়াক। পোস্তার উড়ালপুল ভেঙে পড়ার ঘটনা থেকে শিক্ষা নিয়ে দক্ষিণেশ্বরের কাজে বাড়তি সতর্কতা অবলম্বন করেছে রাজ্য প্রশাসন। কাজের খুঁটিনাটি বিষয় রাইটস-কে দিয়ে পরীক্ষা করিয়ে তবেই মিলছে ছাড়পত্র। কাজের জন্য খরচ হচ্ছে প্রায় ৬৩ কোটি টাকা।
এ দিন দক্ষিণেশ্বরে গিয়ে দেখা গেল, যুদ্ধকালীন তৎপরতায় চলছে কাজ। তবে খোঁড়াখুঁড়ির ফলে বেহাল অবস্থা গোটা রাস্তার। নির্মাণ সংস্থার এক কর্তা জানান, প্রথমে বিদ্যুতের সব কেব্ল রাস্তার নীচে মাঝখান দিয়ে নিয়ে গিয়েছিল সিইএসসি। সেই কাজ শেষের পরে রাস্তা কংক্রিট করে পেভার ব্লক বসানো হয়ে গেলেও ফের তা খোঁড়া হয়েছে। ওই কর্তা বলেন, ‘‘সিইএসসি এখন কেব্ল স্কাইওয়াকের সীমানা পাঁচিলের ধারে নিয়ে যাচ্ছে। ফের ওই রাস্তা বানাতে হবে। তাতেও কিছুটা সময় লাগবে।’’ সিইএসসি-র কর্তাদের যোগাযোগের চেষ্টা করা হলে তাঁদের কোনও বক্তব্য এ দিন পাওয়া যায়নি।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy