কাঁথি পুরসভার প্রশাসক পদ থেকে অপসারিত সৌমেন্দু অধিকারী।
কাঁথি পুরসভার প্রশাসক পদ থেকে সরানো হল বিজেপি নেতা শুভেন্দু অধিকারীর ছোট ভাই সৌম্যেন্দু অধিকারীকে। সৌম্যেন্দু অবশ্য দাবি করেন, ওই বিষয়ে তাঁকে ‘সরকারি ভাবে’ এখনও পর্যন্ত কিছু জানানো হয়নি। তৃণমূল সূত্রে খবর, মঙ্গলবার সন্ধ্যায় কাঁথি পুরসভার প্রশাসকের পদ থেকে অপসারিত করা হয়েছে দলের পূর্ব মেদিনীপুর জেলা কমিটির সভাপতি শিশির অধিকারীর কনিষ্ঠ পুত্র সৌম্যেন্দুকে। বিধিপূর্বক ওই নির্দেশ দিয়েছে রাজ্যের পুর ও নগরোন্নয়ন দফতর। যে দফতরের মন্ত্রী ফিরহাদ (ববি) হাকিম। যিনি আপাতত কলকাতা পুরসভার প্রধান প্রশাসক পদে বৃত।
সৌম্যেন্দুর দাবি, ওই নির্দেশ সংবলিত কোনও ই-মেল বা ফোন রাত পর্যন্ত পাননি তিনি। অপসারণের খবর পেয়ে তিনি ‘হতবাক’ । সৌম্যেন্দুর কথায়, ‘‘ আজ (মঙ্গলবার) সন্ধ্যা ৬ টা পর্যন্ত পুরসভার অফিসে ছিলাম। তার পর বাড়ি ফিরে টিভি-তে আমাকে অপসারিত করার খবর দেখতে পাই।’’ প্রসঙ্গত, সৌম্যেন্দু ছা়ড়াও শুভেন্দুর অপর ভাই দিব্যেন্দু এখনও তমলুকের তৃণমূল সাংসদ। শুভেন্দু-দিব্যেন্দু-সৌম্যেন্দুর বাবা শিশির অধিকারীও কাঁথির তৃণমূল সাংসদ।
তবে সৌম্যেন্দু নিজের অপসারণকে যে ভাবে ‘বিনা মেঘে বজ্রপাত’-এর মতো নিচ্ছেন, তা মানতে নারাজ জেলার তৃণমূল নেতারা। তাঁদের দাবি, দলের তরফে এই পদক্ষেপ ছিল নেহাত সময়ের অপেক্ষা। তৃণমূলের পূর্ব মেদিনীপুর জেলা কমিটির সদস্য তথা কাঁথি দেশপ্রাণ পঞ্চায়েত সমিতির সহ-সভাপতি তরুণ জানার অভিযোগ, ‘‘রাজ্য সরকারের মনোনীত পুর প্রশাসকের পদে থেকে বিজেপি-র হয়ে কাজ করছিলেন সৌম্যেন্দু। তৃণমূলের সমর্থন নিয়ে দলেরই বিরোধিতা করবেন— এটা চলতে পারে না। মানুষের মধ্যে ক্রমেই ক্ষোভ জমছিল। শুধুমাত্র শিশির অধিকারীর মুখের দিকে তাকিয়ে কেউ কিছু বলছিল না।’’ তবে শিশির থাকতেও কেন যে সৌম্যেন্দুকে সরানোর সিদ্ধান্ত নিল ববির দফতর, তা এখনও স্পষ্ট নয়। তবে এর পিছনে যে শুভেন্দুর ‘বিজেপি-যোগ’ রয়েছে, তা নিয়ে খুব সন্দেহের অবকাশ নেই। এখন দেখার, শিশির-দিব্যেন্দুর বিষয়ে এমন কোনও সিদ্ধান্ত নেওয়া হয় কি না। অর্থাৎ, শিশিরকে জেলা সভাপতি এবং দিব্যেন্দুকে জেলা কমিটি থেকে সরানো হয় কি না। শুভেন্দু মঙ্গলবারই যে ভাবে প্রকাশ্য সভায় তাঁর বাড়ির লোকেরাও ‘পদ্ম ফোটাবে’ বলেছেন, তাতে সেই সম্ভাবনাও একেবারে উড়িয়ে দেওয়া যাচ্ছে না।
আরও পড়ুন: ‘এ বার বহিরাগত দেখলেই থানায় অভিযোগ জানান’, নয়া কৌশল মমতার
আরও পড়ুন: ১১০-১১৬ আসন নিয়ে জোট পোক্ত করুক প্রদেশ কংগ্রেস, চাইছে হাইকমান্ড
সৌম্যেন্দুর ‘বিদায়’ নিশ্চিত হতেই সমান্তরাল ভাবে পূর্ব মেদিনীপুরে কোমর বাঁধার পালা শুরু করেছে জোড়াফুল শিবির। তরুণের কথায়, ‘‘সম্প্রতি কাঁথিতে দলীয় বৈঠক হয়েছে। সেখানে দলের প্রথমসারির প্রায় প্রত্যেক নেতা ছিলেন। তাঁরা দলত্যাগীদের হারানোর শপথ নিয়েছেন।’’ সেই লক্ষ্যপূরণে আগামী ১৭ জানুয়ারি কাঁথি শহরে রাজনৈতিক কর্মসূচিও নিয়েছে তৃণমূল।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy