Advertisement
E-Paper

পৌষমেলায় বাজিতেও না

বিশ্বভারতী চত্বরে কোনও ভাবেই নির্ধারিত তিন দিনের বেশি পৌষমেলা করা যাবে না বলে আগেই নির্দেশ জারি হয়েছিল। এ বার সেই মেলায় বাজি পোড়ানো এবং ডিজে বাজানোর উপরেও নিষেধাজ্ঞা জারি করল জাতীয় পরিবেশ আদালতের পূর্বাঞ্চল বেঞ্চ।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ১৬ নভেম্বর ২০১৬ ০০:৪৫

বিশ্বভারতী চত্বরে কোনও ভাবেই নির্ধারিত তিন দিনের বেশি পৌষমেলা করা যাবে না বলে আগেই নির্দেশ জারি হয়েছিল। এ বার সেই মেলায় বাজি পোড়ানো এবং ডিজে বাজানোর উপরেও নিষেধাজ্ঞা জারি করল জাতীয় পরিবেশ আদালতের পূর্বাঞ্চল বেঞ্চ।

মঙ্গলবার বিচারপতি এস পি ওয়াংদি এবং বিশেষজ্ঞ-সদস্য পি সি মিশ্রের ডিভিশন বেঞ্চ আরও জানিয়েছে, মেলা নিয়ে রাজ্য পরিবেশ দফতরের যে নির্দেশিকা রয়েছে, তা অক্ষরে অক্ষরে মেনে চলতে হবে মেলা কর্তৃপক্ষকে। পৌষমেলার আসল দিন ৭-৯ পৌষ। নির্দেশিকা মেনে ওই তিন দিনের বেশি যাতে মেলা না চলে, তা নজরদারি করবেন বীরভূমের জেলাশাসক ও অতিরিক্ত পুলিশ সুপার। নজর রাখতে বলা হয়েছে বিশ্বভারতী, শান্তিনিকেতন ট্রাস্ট এবং বোলপুর পুরসভাকেও।

মেলা মিটে যাওয়ার পরে আগামী ৪ জানুয়ারি মামলার পরবর্তী শুনানি। নিয়ম মেনে মেলা হয়েছে কি না, তা নিয়ে জেলাশাসক, বিশ্বভারতী, শান্তিনিকেতন ট্রাস্ট এবং বোলপুর পুরসভাকে হলফনামা দিতে বলা হয়েছে। আদালতের যাবতীয় নির্দেশ মেনে মেলা আয়োজন করা হবে বলে জানিয়েছেন শান্তিনিকেতন ট্রাস্টের পক্ষে সবুজকলি সেন। আর বিশ্বভারতীর ভারপ্রাপ্ত কর্মসচিব অমিত হাজরা বলেছেন, “আদালতের নির্দেশকে স্বাগত জানাচ্ছি। আগামী প্রজন্মকে দূষণমুক্ত পৌষ উৎসব উপহার দিতে বিশ্বভারতী সব রকমের চেষ্টা করবে”

ঘটনা হল, পৌষমেলার দূষণ নিয়ে জাতীয় পরিবেশ আদালতে মামলা দায়ের করেছিলেন পরিবেশকর্মী সুভাষ দত্ত। তাঁর অভিযোগ ছিল, বিধি ভেঙে মেলা হওয়ায় শান্তিনিকেতনে দূষণ হচ্ছে। মেলায় তীব্র আওয়াজে চলা মাইক এবং জেনারেটর শব্দ দূষণ ঘটাচ্ছে। মেলার মাঠে প্লাস্টিক ব্যাগ-সহ নানা কঠিন বর্জ্য থেকেও দূষণ ছড়াচ্ছে। সেগুলি পুড়িয়ে দেওয়ায় বিষিয়ে উঠছে বাতাস। সেই মামলায় উঠে এসেছিল, বিশ্বভারতী চত্বরে তিন দিনের মেলার অনুমতি থাকলেও ‘ভাঙা মেলা’র নামে তা চলে অনেক বেশি দিন ধরে। প্রশাসনের নাকের ডগায় চললেও রাজনৈতিক মদতের জন্য এ নিয়ে সরকারি কর্তারা কিছু বলতেন না বলে অভিযোগ। তার ভিত্তিতে গত শুনানিতে আদালত জানিয়েছিল, মেলা ৩ দিনের বেশি চলবে না।

এ দিন সেই নির্দেশই বহাল রাখা হয়েছে। আদালতের নির্দেশের পরে এ দিন সুভাষবাবু বলেন, ‘‘মেলার ঐতিহ্য অক্ষুণ্ণ রাখতে বলেছে আদালত। এ নিয়ে রাজনীতি না করতেও হুঁশিয়ারি দিয়েছে ডিভিশন বেঞ্চ।’’ মামলায় সুভাষবাবুর আর্জিতে বিশ্বভারতীর ভিতরে নানা জায়গায় জঞ্জাল পড়ে থাকার বিষয়টিও উঠে এসেছে। এ বিষয়ে জানা গিয়েছে, বোলপুর পুরসভার পরিষেবা বিশ্বভারতীর ভিতরে মেলে না। ফলে ঠিক মতো জঞ্জাল সাফাই হয় না। বোলপুর পুরসভা কেন পরিষেবা দিচ্ছে না, তা রাজ্যের পুর দফতরের কাছে জানতে চেয়েছিল আদালত। পুর দফতর জানিয়েছে, বিষয়টি বীরভূমের জেলাশাসককে জানানো হয়েছে। যদিও এ ব্যাপারে জেলাশাসক বা পুরসভা কিছু করেনি বলেই আদালতে অভিযোগ উঠেছে। এ দিন আদালতের নির্দেশ, বিশ্বভারতীর জঞ্জাল-সমস্যা মেটাতে জেলাশাককে অবিলম্বে পদক্ষেপ করতে হবে। এ ব্যাপারে কোনও অর্ডিন্যান্স জারির প্রয়োজন হলে তা-ও করতে বলা হয়েছে।

আদালতের নির্দেশে আগেই হতাশা তৈরি হয়েছে এলাকার ব্যবসায়ীদের মধ্যে। হস্ত ও কুটির শিল্প ছাড়া কোনও ব্যবসায়িক দোকান থাকবে না এ বারের মেলায়। অল্প দিনের মেলা হওয়ায় ব্যবসা মার খাওয়ার আশঙ্কা করছেন হোটেল মালিকেরাও। সে দিকটি খেয়াল করিয়ে বোলপুর ব্যবসায়ীদের একাংশ অবশ্য এ দিনই আদালতে একটি আর্জি জমা দেন। তাঁরা জানান, মেলা তিন দিনে নামিয়ে আনলে তাঁরা আর্থিক ভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হবেন। সেই আর্জি পরবর্তী শুনানির দিন (অর্থাৎ ৪ জানুয়ারি) বিবেচনা করতে পারে আদালত। তত দিনে অবশ্য এ বারের মেলা পেরিয়ে যাবে। তবে, আদালত এ দিনও জানিয়ে দিয়েছে, নির্দিষ্ট তিন দিনের পরে পরিবেশ বিধি মেনে বিশ্বভারতী চত্বরের বাইরে মেলা করা হলে তাদের কোনও আপত্তি নেই।

Poush Mela Shantiniketan sound crackers
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy