রায় ঘোষণার পরে আদালত থেকে বাড়ি ফেরা ইস্তক একটি কথাও বলেননি তিনি। আর এক জন ঘরে বসে ফোনে রায় জেনেছেন। শুক্রবার সন্ধ্যা ৭টা নাগাদ বাড়ি ফিরে প্রথম জন বললেন, ‘‘এই রায় কষ্ট আরও বাড়িয়ে দিল। এক বার ফাঁসির নির্দেশ হওয়ার পরেও যারা বেকসুর খালাস হল, তারা কি আমাদের ছেড়ে দেবে?’’ শুনে অন্য জনের চোখে তখন জল।
প্রথম জন সরোজ চৌধুরী। দ্বিতীয় জন, তাঁর স্ত্রী মিতাদেবী। বারাসতের বামনগাছিতে বছর চারেক আগে সমাজবিরোধী কাজের প্রতিবাদ করতে গিয়ে খুন হওয়া কলেজছাত্র সৌরভ চৌধুরীর বাবা-মা। ওই হত্যাকাণ্ডে আট জনকে ফাঁসির নির্দেশ দিয়েছিল বারাসত আদালত। সেই নির্দেশকে চ্যালেঞ্জ জানিয়ে কলকাতা হাইকোর্টের দ্বারস্থ হয় অভিযুক্তেরা। এ দিন অবশ্য হাইকোর্ট ৬ জনকে যাবজ্জীবনের সাজা শুনিয়েছে। বেকসুর খালাস করেছে ২ জনকে।
শুরু থেকেই অবশ্য অপরাধীদের ফাঁসির দাবি জানিয়ে এসেছিলেন সৌরভের পরিবার। বাসিন্দারাও সেই দাবিতে পথে নেমেছিলেন। নিম্ন আদালতের রায় তাঁদের খুশি করলেও এ দিন উচ্চ আদালতের রায় শোনার পরে পাড়ায় নেমে এসেছে বিষণ্ণতা। সন্ধ্যায় সৌরভের বাড়িতে ভিড় করেছিলেন বন্ধু ও প্রতিবেশীরা। সরোজবাবুর বন্ধু জগদীশ হালদার বলেন, ‘‘কী নির্মম ভাবে খুন করেছিল এত ভাল ছেলেটাকে। শুধু খারাপ কাজের প্রতিবাদ করেছিল বলে।’’ জগদীশবাবু বলেন, ‘‘অভিযুক্তদের যদি সর্বোচ্চ সাজাই না হল, তা হলে ছেলেটার আত্মা কি শান্তি পাবে?’’