শোভন চট্টোপাধ্যায়ের সঙ্গে বিবাহবিচ্ছেদ মামলায় আপাতত ‘স্বস্তিতে’ তৃণমূল বিধায়ক রত্না চট্টোপাধ্যায়। অন্তত রত্নার ঘনিষ্ঠ শিবিরের তেমনই দাবি। ওই শিবিরের বক্তব্য, আলিপুর আদালতের বিচারপ্রক্রিয়া স্থগিত করে দিয়েছে সুপ্রিম কোর্ট।
কলকাতা হাই কোর্টের নির্দেশকে চ্যালেঞ্জ করে শীর্ষ আদালতে গিয়েছিলেন রত্না। গত ৫ মার্চ ওই মামলায় সুপ্রিম কোর্টের বিচারপতি আসানুদ্দিন আমানুল্লা এবং বিচারপতি প্রশান্তকুমার মিশ্রের বেঞ্চ জানায়, পরবর্তী নির্দেশ না দেওয়া পর্যন্ত ‘ট্রায়াল কোর্ট’ (নিম্ন আদালত) বিচারপ্রক্রিয়া চালিয়ে যেতে পারবে না। শীর্ষ আদালতের ওই নির্দেশ মেনে শোভন-রত্নার বিবাহবিচ্ছেদ মামলার শুনানি পিছিয়ে দিয়েছেন আলিপুরের অতিরিক্ত জেলা বিচারক। ফলে আপাতত কলকাতার প্রাক্তন মেয়র শোভনের করা বিবাহবিচ্ছেদ মামলার শুনানি হচ্ছে না। ওই মামলায় সুপ্রিম কোর্ট শোভনের থেকে হলফনামাও চেয়েছে। এপ্রিল মাসের ৯ তারিখ সুপ্রিম কোর্টে ওই মামলার পরবর্তী শুনানি।
আরও পড়ুন:
২০১৭ সালের ১৩ নভেম্বর আলিপুর আদালতে স্ত্রী রত্নার বিরুদ্ধে বিবাহবিচ্ছেদের মামলা করেন শোভন। ওই মামলায় কলকাতার প্রাক্তন মেয়রের পক্ষে তিন জন সাক্ষী দেন। তাঁর সাক্ষ্যগ্রহণ শেষ হয় ২০২৩ সালের ৮ ফেব্রুয়ারি। প্রাথমিক ভাবে রত্না আদালতের কাছে আর্জি জানান, তাঁর পক্ষে ১৮-২০ জন সাক্ষ্য দেবেন। আদালত ওই আবেদন খারিজ করে দেয়। পরে রত্না নতুন তালিকা দিয়ে তাঁর পক্ষে সাত জনের সাক্ষ্য নেওয়ার আবেদন জানান। গুরুত্বপূর্ণ সাক্ষী হিসাবে রত্না তাঁর ছেলে, বাবা ও ভাইয়ের নাম জমা দেন। আলিপুর আদালত ওই আবেদনেও মান্যতা দেয়নি। গত ১০ জানুয়ারি বিচারক জানান, মামলার সঙ্গে ওতপ্রোত ভাবে সম্পর্কিত ব্যক্তিদেরই সাক্ষ্য নেওয়া হবে। রত্নার নিজের এবং তাঁর ছেলের সাক্ষ্য নিতে রাজি হয় আদালত। একই সঙ্গে বিচারপতি জানান, ২৯ এবং ৩০ জানুয়ারি শোভন-রত্নার বিবাহবিচ্ছেদের মামলার সওয়াল পর্ব চলবে।
নিম্ন আদালতের ওই নির্দেশকে চ্যালেঞ্জ করে কলকাতা হাই কোর্টে যান রত্না। সেখানেও তাঁর আবেদন খারিজ হয়ে যায়। ফেব্রুয়ারি মাসের ২৮ তারিখ হাই কোর্টের বিচারপতি হিরণ্ময় ভট্টাচার্যের বেঞ্চ রায় দিয়ে জানায়, রত্নার বাকি সাক্ষীদের সুযোগ না দেওয়ার সিদ্ধান্ত যথাযথ। নিম্ন আদালতের ওই পদক্ষেপে হস্তক্ষেপ করা হবে না। হাই কোর্ট জানায়, যত দ্রুত সম্ভব শোভনের বিবাহবিচ্ছেদ মামলার নিষ্পত্তি করতে হবে।
উচ্চ আদালতের ওই নির্দেশকে চ্যালেঞ্জ করেই সুপ্রিম কোর্টে যান রত্না। সেখানে তাঁর হয়ে সওয়াল করেন আইনজীবী শ্যাম দেওয়ান। শোভনের হয়ে দাঁড়ান আইনজীবী রাকেশ দ্বিবেদী এবং কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায়। প্রসঙ্গত উল্লেখ্য, কল্যাণ যেমন শ্রীরামপুর থেকে তৃণমূলের চতুর্থ বারের সাংসদ, তেমনই আইনজীবী রাকেশ আবার দেশের শীর্ষ আদালতে পশ্চিমবঙ্গ সরকারের হয়ে সওয়াল করে থাকেন। দু’পক্ষের বক্তব্য শুনে সুপ্রিম কোর্ট আপাতত নিম্ন আদালতে বিচারপ্রক্রিয়া স্থগিত করে শোভনের কাছে হলফনামা চেয়েছে।