Advertisement
E-Paper

প্রাক্তন কেএলও জঙ্গিদের চাকরি

মূলস্রোতে ফিরতে চাওয়া কেএলও জঙ্গি-লিঙ্কম্যানদের স্বনির্ভর করতে রাষ্ট্রীয় সমবিকাশ যোজনা ও স্বামী বিবেকানন্দ স্বনির্ভর প্রকল্পে ঋণ দেওয়ার কথাও ঘোষণা করে রাজ্য। কিন্তু সেই প্রকল্পের সুবিধা পেয়েছিলেন মাত্র দশ জন। তাদের মধ্যে ৮ জন গাড়ি কিনেছেন, বাকি দু’জন ছোট দোকান খুলেছেন। কিন্তু, অধিকাংশই কোনও সাহায্য পাননি। তাঁরা নতুন সরকার ক্ষমতায় আসার পর পুনর্বাসনের জন্য বারবার সরকারের কাছে আবেদন করেছেন।

কৌশিক চৌধুরী

শেষ আপডেট: ১৩ জুলাই ২০১৮ ০৩:৫২
প্রতীকী ছবি।

প্রতীকী ছবি।

আত্মসমপর্ণকারী কেএলও জঙ্গিদের একাংশকে জঙ্গলমহলের জাগরী বাক্সেদের ধাঁচে ‘স্পেশাল হোমগার্ডে’র চাকরি দিল রাজ্য সরকার। বৃহস্পতিবার বিকেলে শিলিগুড়ি উত্তরকন্যায় ৩৬ জন প্রাক্তন কেএলও জঙ্গির হাতে নিয়োগপত্র তুলে দেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। প্রশাসন জানিয়েছে, প্রথম পর্যায়ে ৩৬ জন চাকরি পেলেন। পরবর্তীতে আরও আবেদন দেখা হবে।

সরকারি সূত্রের খবর, ৩৬ জনের মধ্যে ২১ জন আলিপুরদুয়ার জেলার। বাকি ১৫ জন জলপাইগুড়ির জেলার বিভিন্ন এলাকার বাসিন্দা। আগামী দুই মাস নিজেদের জেলায় ‘পিটি থেকে প্যারেড’-এর মতো পুলিশি প্রশিক্ষণের পর তাঁরা কাজে যোগ দেবেন। ওয়েস্টবেঙ্গল হোমগার্ড অ্যাক্ট-১৯৬২ রুল-৩ অনুসারে বিশেষ ক্ষমতা প্রয়োগ করে তাঁদের সাধারণ নিয়োগ থেকে আলাদা ভাবে চাকরি দেওয়া হয়েছে। যেমনটা হয়েছে জঙ্গলমহলের আত্মসমপর্ণকারী মাওবাদীদের ক্ষেত্রেও। মুখ্যমন্ত্রী বলেছেন, ‘‘এঁরা সকলেই সমাজের মূলস্রোতে ফিরেছেন। ভাল করে চাকরি করে জীবনযাপন করুন, এটাই আমরা চেয়েছি।’’

পুলিশ সূত্রের খবর, ২০০৩ সালে ভুটানে সেনা অভিযানের পরে কেএলও-র স্বঘোষিত ‘চিফ’ জীবন সিংহ বাদে সংগঠনের বেশিরভাগ সদস্যই ধরা পড়েন। এর পরে ধাপে ধাপে বাম আমলে প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী বুদ্ধদেব ভট্টাচার্যের আহ্বানে সাড়া দিয়ে অনেক জঙ্গি, লিঙ্কম্যান আত্মসমর্পণ করেন। মূলস্রোতে ফিরতে চাওয়া কেএলও জঙ্গি-লিঙ্কম্যানদের স্বনির্ভর করতে রাষ্ট্রীয় সমবিকাশ যোজনা ও স্বামী বিবেকানন্দ স্বনির্ভর প্রকল্পে ঋণ দেওয়ার কথাও ঘোষণা করে রাজ্য। কিন্তু সেই প্রকল্পের সুবিধা পেয়েছিলেন মাত্র দশ জন। তাদের মধ্যে ৮ জন গাড়ি কিনেছেন, বাকি দু’জন ছোট দোকান খুলেছেন। কিন্তু, অধিকাংশই কোনও সাহায্য পাননি। তাঁরা নতুন সরকার ক্ষমতায় আসার পর পুনর্বাসনের জন্য বারবার সরকারের কাছে আবেদন করেছেন।

এ দিন যে ৩৬ জনকে চাকরি দেওয়া হয়েছে, তাঁদের মধ্যে মিহির দাস ওরফে মিল্টন, মধুসুদন দাস, অজিত রায়, কৈলাস রায়, রূপকান্ত বর্মন অন্যতম। ৩৬ জনের অধিকাংশই বাংলাদেশের কেএলও-র দ্বিতীয়, তৃতীয় এবং চতুর্থ ব্যাচে প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত। রাষ্ট্রদ্রোহিতা, অপহরণ, অস্ত্র আইন, তোলাবাজির মতো একাধিক মামলা এদের বিরুদ্ধে ছিল। পরবর্তীতে গত ১৫ বছরে ধাপে ধাপে আত্মসমপর্ণকারীরা মামলায় জেরবার হয়েছেন। প্রায় প্রত্যেককেই এখনও মামলা লড়তে হচ্ছে। কিন্তু সরকারি সাহায্য না পেয়ে কেউ নদীতে পাথর ভাঙা, কেউ দিনমজুরি, কেউ দোকানে কাজ করে সংসার চালাচ্ছিলেন। রাজ্য পুলিশের এক কর্তা জানান, এরা মামলা থেকে নিষ্কৃতি পাওয়ার কথাও বলেছেন। মামলাগুলি প্রায় শেষ পর্যায়ে রয়েছে। আইনি দিকটি দেখে পরবর্তীতে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

মিহির দাস বলেন, ‘মামলাগুলি থেকেও নিস্তার চাই। মুখ্যমন্ত্রীকে বলেছি।’’

Job Home guard KLO
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy