Advertisement
E-Paper

জেলার ১৪ পুলিশ-কর্তার আচমকা বদলি ঘিরে জল্পনা

আচমকাই বদলি হলেন ঘাটালের ওসি, চন্দ্রকোনার ওসি, রামজীবনপুরের আইসি (ইন-চার্জ)-সহ জেলার ১৪ জন পুলিশ-কর্তা। প্রশ্ন উঠছে, পুরভোটে তৃণমূলের ফল প্রত্যাশিত না- হওয়ার জন্যই কি ‘কোপে’ পড়লেন এঁরা। পশ্চিম মেদিনীপুরের পুলিশ সুপার ভারতী ঘোষ অবশ্য বলেন, “কয়েকজন বদলি হয়েছেন। এটা রুটিন বদলি।”

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ২৭ মে ২০১৫ ০৩:২৫

আচমকাই বদলি হলেন ঘাটালের ওসি, চন্দ্রকোনার ওসি, রামজীবনপুরের আইসি (ইন-চার্জ)-সহ জেলার ১৪ জন পুলিশ-কর্তা। প্রশ্ন উঠছে, পুরভোটে তৃণমূলের ফল প্রত্যাশিত না- হওয়ার জন্যই কি ‘কোপে’ পড়লেন এঁরা। পশ্চিম মেদিনীপুরের পুলিশ সুপার ভারতী ঘোষ অবশ্য বলেন, “কয়েকজন বদলি হয়েছেন। এটা রুটিন বদলি।”

সদ্যসমাপ্ত পুরভোটে খড়্গপুর, ঘাটাল, রামজীবনপুর, ক্ষীরপাইয়ে তৃণমূলের ফল প্রত্যাশিত হয়নি। নানা মহলে গুঞ্জন ছিল এর দায় এসে পড়তে পারে একাংশ পুলিশ- কর্তাদের উপর। কয়েকজন বদলিও হতে পারেন। বদলির নির্দেশ বেরোনোর পর জল্পনার পারদ আরও চড়েছে। পুলিশের এক সূত্রে খবর, সোমবারই ১৪ জনের বদলির নির্দেশ জারি করেন পুলিশ সুপার। মঙ্গলবারের মধ্যে নির্দেশ কার্যকরী করার কথা জানিয়ে দেওয়া হয়। কয়েকজন পুলিশ- কর্তার বদলি এমন এমন জায়গায় হয়েছে, যা জল্পনাও ইন্ধনও জোগাচ্ছে। ঘাটাল থানার ওসি ছিলেন সুদীপ ঘোষাল। সুদীপবাবুকে মেদিনীপুর পুলিশ লাইনে পাঠানো হয়েছে। চন্দ্রকোনা থানার ওসি ছিলেন আশিস জৈন। আশিসবাবুকে ডিআইবি- তে পাঠানো হয়েছে। রামজীবনপুর ফাঁড়ির আইসি ছিলেন গৌতম মাইতি। গৌতমবাবুকে লালগড়ের রামগড় ফাঁড়ির আইসি করা হয়েছে। কেশপুরের ওসি দয়াময় মাঝি বদলি হয়ে চন্দ্রকোনার ওসি হচ্ছেন। বেলিয়াবেড়ার ওসি বিশ্বরঞ্জন বন্দ্যোপাধ্যায় বদলি হয়ে ঘাটালের ওসি হচ্ছেন। কেশপুর থানার ওসি হচ্ছেন উত্তম দেবনাথ। আনন্দপুর থানার ওসি হচ্ছেন অখিলেশ সিংহ। আনন্দপুর থানার ওসি প্রশান্ত পাঠক বদলি হয়ে সবংয়ের ওসি হচ্ছেন। সবংয়ের ওসি কৃষ্ণেন্দু হোতাকে ডিআইবি-তে পাঠানো হয়েছে।

পুরভোটের আগে বিরোধীদের অভিযোগ ছিল, পুলিশি মদতে সন্ত্রাসের ছক তৈরি করছে তৃণমূল। ভোটের জন্য কয়েকজন পুলিশ- কর্তাকে পুরনো এলাকায় ফেরানোও হয়েছিল। যেমন, এক সময় চন্দ্রকোনা থানার প্রাক্তন ওসি সুশান্ত রাজবংশী ওই থানার অন্তর্গত রামজীবন ভোটের সময় ছিলেন। এক সময় ঘাটাল থানার ওসি ছিলেন বিশ্বরঞ্জন বন্দ্যোপাধ্যায়ও ভোটের দিন ছিলেন ঘাটালে। কয়েকটি থানার ওসি এবং কয়েকজন এসআই- এএসআইদেরও পরিচিত এলাকায় ফেরানো হয়। পুলিশের এক সূত্রের অবশ্য দাবি, সুষ্ঠু ভোটের জন্যই এই ব্যবস্থা করা হয়। এতে সুবিধে হয়েছে। সামান্য গোলমালের খবর পেয়েও দ্রুত ঘটনাস্থলে পৌঁছে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে পেরেছেন।

ভোটের ফল বেরোনোর পর বিজেপি দাবি করেছিল, রামজীবনপুরে পুরবোর্ড তারাই গড়বে। পরিস্থিতি মোকাবিলায় দল ভাঙানোর খেলা শুরু করে তৃণমূল। এখন অবশ্য তৃণমূলের পুরবোর্ড দখল করা শুধু সময়ের অপেক্ষা। খড়্গপুরে পুরভোটে খারাপ ফলের পিছনে শুধু সাংগঠনিক দুর্বলতা নয়, অন্তর্ঘাত রয়েছে বলেও জেলায় এসে শুনে গিয়েছেন তৃণমূলনেত্রী তথা মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।

সম্প্রতি, ঝাড়গ্রামে থাকাকালীন মমতার সঙ্গে আলাদা ভাবে কথা হয় এক পুলিশ-কর্তার এবং একাধিক তৃণমূল নেতার। তৃণমূল নেতারা নেত্রীকে জানিয়ে দেন, অন্তর্ঘাত না হলে রেলশহরের পুরভোটে এই ফল হত না। তাত্‌পর্যপূর্ণ হল, ওই পুলিশ কর্তারও মত না কি একই। আচমকা পুলিশ- কর্তাদের বদলি নিয়ে জল্পনা জিইয়ে রেখে বিজেপির জেলা সভাপতি তুষার মুখোপাধ্যায় বলেন, “তৃণমূল পুলিশের সহযোগিতায় জেলার সর্বত্র অন্য ভাবে পুরভোট করতে চেয়েছিল। অবশ্য মানুষ প্রতিরোধ করায় তা পারেনি। এটাও তো ঠিক, সব পুলিশ দলদাস নন। বেশ কয়েকজন নিরপেক্ষ ভাবে কাজ করার চেষ্টাও করেছেন। জানি না তার খেসারত তাঁদের দিতে হচ্ছে কি না!” কংগ্রেসের জেলা সভাপতি বিকাশ ভুঁইয়া বলেন, “সরকার যা চাইবে, তাই- ই হবে। আর কি বলব!” সিপিএমের জেলা সম্পাদক তরুণ রায় বলেন, “তৃণমূল পুলিশের উপর নির্ভর করেই নির্বাচনী বৈতরণী পার হওয়ার চেষ্টা করেছিল। অবশ্য পুলিশকে দিয়ে সর্বত্র সন্ত্রাস করতে পারেনি ওরা। পুলিশের সবাই তো ওদের সমান অনুগত নন!”

কী বলছে তৃণমূল?

শাসক দলের দাবি, এই বদলির বিষয়টি পুলিশের বিভাগীয় ব্যাপার। এখানে কারও নাক গলানো ঠিক নয়। তৃণমূলের জেলা সভাপতি দীনেন রায়ের মন্তব্য, “আমরা ওদের মতো (বিরোধীদের) ওত বড় জ্যোতিষি নই! পণ্ডিতও নই! রুটিন বদলি নিয়ে গবেষণা করার কি আছে বুঝতেও পারি না!” পাশাপাশি তাঁর প্রশ্ন, “ঘাটালে তৃণমূলের ফল খারাপ হয়েছে কে বলল!”

Police trinamool TMC midnapore BJP mamata bandopadhyay municipal election poll vote
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy